খুলনা, বাংলাদেশ | ৩ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৭ মে, ২০২৪

Breaking News

  কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে নিহত ৫, আহত ১৫
‘নকল মাস্ক’র বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদকারী

খুমেক হাসপাতালের সেই পরিচালক এখনও পাবনায়!

নিজস্ব প্রতিবেদক

নকল এন ৯৫ মাস্ক সরবরাহ করার দায়ে অপরাজিতা ইন্টারন্যাশনালের স্বত্তাধিকারী শারমিন জাহানকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এর আগে সরকারিভাবে নকল মাস্ক ক্রয়ের অভিযোগে বদলি করা হয় কেন্দ্রীয় ঔষুধাগার (সিএমএসডি) এর পরিচালকসহ কয়েকজন কর্মকর্তাকে। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান জেএমআইকে কালো তালিকাভুক্তও করা হয়। কিন্তু নকল এন ৯৫ মাস্ক এর বিরুদ্ধে দেশের প্রথম প্রতিবাদকারী খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সাবেক পরিচালক ডাঃ এটিএম মোর্শেদ বিনা অপরাধে শাস্তিমূলক বদলি নিয়ে পাবনা মানসিক হাসপাতালে এখনও কর্মরত রয়েছেন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, “যেহেতু ডাঃ এটিএম মোর্শেদের অভিযোগের ভিত্তিতে দেশের ক্রান্তিকালে স্বাস্থ্যকর্মীদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়েছে। ফলে শাস্তিমুলক বদলির বিপরীতে তার পদোন্নতি দাবি রাখে।”

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২১ মার্চ এন ৯৫ মাস্ক ও পিপিই পাঠানো হয় কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে। কিন্তু এন ৯৫ মাস্কের প্যাকেটের ভেতরে অত্যন্ত নিম্নমানের লোকাল মাস্ক ঢুকিয়ে দেয়। এ নিয়ে ২৯ মার্চ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন খুমেক হাসপাতালের তৎকালীন পরিচালক ডাঃ মোর্শেদ। তিনি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান মুন্সিগঞ্জের জেএমআই ইন্টারন্যাশনালের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ তোলেন। এর দুই দিনের মাথায় তাকে স্ট্যান্ড রিলিজ করে পাবনায় মানসিক হাসপাতালে বদলি করা হয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে।

এর পরই একই মাস্ক নিয়ে রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক অভিযোগ জানালে তাঁকেও স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ওএসডি করা হয়। তখন বিষয়টি গণমাধ্যমে আসলে সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার ফলে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তদন্ত শুরু হয়; বেরিয়ে আসে ব্যাপক দুর্নীতির খবর। পরে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক প্রশাসন ডাঃ বেল্লাল হোসেনকে বদলি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কিন্তু নকল মাস্ক এর বিরুদ্ধে প্রথম প্রতিবাদকারী চিকিৎসক খুলনা মেডিকেল কলেজের সাবেক পরিচালক ডাঃ এটিএম মোর্শেদকে এখনও শাস্তিমূলক বদলিতে রেখে দেয়া হয়েছে।

ডাঃ এটিএম মোর্শেদ খুলনা গেজেটকে বলেন, আমি নকল মাস্ক পেয়ে চিকিৎসকদের জীবন ও সরকারের ভাবমুর্তির কথা চিন্তা করে আপত্তি জানিয়েছিলাম। কিন্তু প্রভাবশালী সিন্ডিকেট আমাকেই আমার জন্মস্থান খুলনা ছেড়ে অনেক দুরে বদলি করেছে। যা কখনই নিয়মিত বদলি হিসাবে মেনে নেয়া যায় না। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে এখন সব পরিস্কার। সিন্ডিকেটের হোতারা গ্রেফতার হচ্ছে, বদলি হয়েছে মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঘাপটি মেরে থাকা অসাধু কর্মকর্তারা। তাহলে আমার মত যারা বিনা অপরাধে শাস্তি পেয়েছে তাদের দিকে সরকার দৃষ্টি দেবে।

বিএমএ খুলনার সভাপতি ডাঃ শেখ বাহারুল আলম বলেন, দেশে এখন কারা দুর্নীতিবাজ এটা পরিস্কার। নকল মাস্ক সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কালোতালিকাভুক্ত হয়েছে, দুর্নীতিবাজরা গ্রেফতার হয়েছে। অসাধু কর্মকর্তারা বদলি হয়েছেন। তাহলে ডাঃ মোর্শেদের মত লোকেরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করে কেন শাস্তি পাবে। সরকারের সময় হয়েছে এসব সৎ সাহসী কর্মকর্তাকে আগের থেকেও বেশি সম্মানিত করা অথবা তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুনবর্হাল করা।

 

খুলনা গেজেট/এমবিএইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!