খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ মাঘ, ১৪৩১ | ২২ জানুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  ড্রাম ট্রাকের চাপায় নগরীতে মোটরসাইকেল আরোহীর মৃত্যু
কম মূল্য দেখিয়ে পোশাক রপ্তানি

দেড়শ কোটি টাকা পাচারের তথ্য কাস্টমস গোয়েন্দার হাতে

গেজেট ডেস্ক

তিন টাকায় রপ্তানি হচ্ছে, নতুন টি-শার্ট আর গেঞ্জি। নতুন প্যান্টের দাম ২ টাকা। যার প্রধান বাজার আরব আমিরাত। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, এমন অতি অল্প দামে তৈরি পোশাক বিদেশে পাঠাচ্ছে কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। যাতে আন্ডার ইনভয়েসিংয়ে অর্থপাচারের প্রমাণ পেয়েছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। তথ্য মিলেছে, ৩ বছরে ১৯ প্রতিষ্ঠানের প্রায় দেড়শ কোটি টাকা পাচারের।

গেল জুনে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে রপ্তানিকালে ঢাকার রিফাত অ্যান্ড সিফাত অ্যাপারেলস নামের ১টি প্রতিষ্ঠানের তৈরি পোশাকের ১টি কন্টেইনার জব্দ করে কাস্টমস গোয়েন্দারা। যেখানে রপ্তানির ঘোষণায় মাত্র ১৭ হাজার ১শ ৪৩ পিস থাকলেও, বাস্তবে পাওয়া যায় ১ লাখ ১২ হাজার ৪শ ৯৮ পিস পোশাক। পরে প্রতিষ্ঠানটির আরো ৬ কন্টেইনার জব্দ করা হয়।

তবে রিফাত অ্যান্ড সিফাত অ্যাপারেলসের দাবি, তারা ঘোষণা অনুযায়ীই পণ্য পাঠালেও মাঝখানে জালিয়াতি করেছে সুজন বিশ্বাস নামে ১ ব্রোকার। যাকে সিঅ্যান্ডএফ এবং ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারের দায়িত্ব দেয়া হয়।

ঘোষণার অতিরিক্ত রপ্তানি পণ্যের টাকা দেশে আসছে না অথবা এলেও তা ফিরছে হুন্ডিতে- এমন তথ্য পেয়ে রপ্তানি খাতে নজর রাখতে শুরু করে কাস্টমস গোয়েন্দারা। তাতে মিলছে, আন্ডার ইনভয়েসিংয়ের চাঞ্চল্যকর তথ্য। এতোদিন আমদানিতে দাম কম দেখিয়ে শুল্ক ফাঁকি এবং টাকা পাচারের অপতৎপরতা থাকলেও এবার উদঘাটন হল রপ্তানিতেও চলছে এ কারসাজি। যার সঙ্গে জড়িত কিছু বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান। এমন ১৯টির ৩ বছরের তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দারা।

অনুসন্ধান বলছে, কারখানা থেকে লেফট ওভার বা স্টক লটের পোশাক কিনে নিয়ে রপ্তানিতে জালিয়াতির আশ্রয় নিচ্ছে একশ্রেণির অসাধু ট্রেডার। বিল অব এক্সপোর্ট বিশ্লেষণে দেখা গেছে, পণ্যের সংখ্যা বা পরিমাণের সঙ্গে দামের তারতম্য আকাশ-পাতাল। যেমন, সাড়ে ১৬ হাজার টি-শার্ট বা সিংগ্লেটসের দাম দেখানো হয়েছে ৪ হাজার ৯শ ৫০ ডলার। অর্থাৎ প্রতি পিসের দাম মাত্র ৩ সেন্ট বা ৩ টাকা। আরেকটি প্রতিষ্ঠান একইরকম পোশাক ৩০ হাজার পিস পাঠিয়েছে ৬ হাজার ডলারে। পিস প্রতি দাম পড়েছে ২ সেন্ট বা ২ টাকা। অন্য ১টি প্রতিষ্ঠান ৬ হাজার ৪শ ১৭ ডলারে পাঠিয়েছে ২৪ হাজার ৮শ ৭০ পিস। প্রতি ইউনিটের দাম ২৫ সেন্ট বা ২৫ টাকা। যা বাস্তবসম্মত নয়।

বিজিএমইএ-বিকেএমইএ বলছে, রপ্তানি উপযোগী সবচেয়ে নিম্নমানের টি-শার্ট বা সিংগ্লেটস কারখানা থেকে ৪০-৫০ টাকার নিচে কেনার সুযোগ নেই। শর্ট কিংবা লং প্যান্ট অন্তত দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকা। সঙ্গে যোগ হবে পলি প্যাক, কার্টনসহ নানা খরচ। ফলে রপ্তানিমূল্য সিংগ্লেটসের ন্যূনতম ৫০ টাকা, টি-শার্ট ৯০ থেকে ১শ টাকা, শর্ট ও লং প্যান্ট ১শ ৬০ থেকে ২শ টাকা আর শার্টের দাম হতে হবে ১শ ৭০ টাকা।

রপ্তানিকারকের দেয়া তথ্য অনুযায়ী ব্যাংক যে এক্সপোর্ট পারমিশন-ইএক্সপি ইস্যু করে, তা যাচাই করা হয় কাস্টমসে। আন্ডার ইনভয়েসিংয়ে আরও কারা-কিভাবে জড়িত, তা বের করতে কাজ করছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

খুলনা গেজেট/ বিএম শহিদুল ইসলাম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!