খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  ইরানের প্রেসিডেন্ট রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত : রয়টার্স; জীবিত কারও সন্ধান মেলেনি : রেড ক্রিসেন্ট

দেবহাটার কাঠের ব্রিজটি যেন মরণ ফাঁদ, ঝুকি নিয়ে পারাপার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা

সাতক্ষীরা দেবহাট উপজেলার কুলিয়া-শ্রীরামপুর এলাকায় লাবণ্যবতী নদীর ওপর নির্মিত কাঠের ব্রীজটি ভেঙ্গে মরণ ফাঁদ হয়ে দাড়িয়েছে। ভাঙাচোরা ও জরাজীর্ণ অবয়ব নিয়ে এখনো মানুষের ভার বহন করে চলেছে কাঠের ব্রীজটি। এই অবস্থায় মানুষ পারাপারের সময় যে কোন মুহুর্তে ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা।

লাবণ্যবতী নদীর উপর নির্মিত কাঠের এই ব্রীজটি একাধিক স্থানে ভেঙে গিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। নদী পার হওয়ার বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় প্রতিদিন জীবনের ঝুকি নিয়ে চলাচল করতে হয় স্কুল কলেজের ছাত্র ছাত্রী সহ ওই এলাকার সহাস্রাধিক মানুষের। ফলে ব্রীজটি দিয়ে চলাচলকারী স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীসহ শ্রীরামপুর বাজারে আসা হাজার হাজার মানুষের প্রায় ৩ বছর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। এছাড়া ইতিমধ্যে ব্রীজটি পার হতে গিয়ে অনেকেই নিচে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন। অনেকেই এই ভাঙাচোরা ও জরাজীর্ণ কাঠের ব্রীজ পার হতে গিয়ে নিচে পড়ে হাত, পা ভেঙ্গেছে। কেউ কেউ এখনও হাসপাতালে ভর্তি আছে।

ভোমরা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোঃ নেছারুল্লাহ-আল-মামুন জানান, ১৯৯৫ সালে দেবহাটা উপজেলার কুলিয়া-শ্রীরামপুর এলাকায় লাবণ্যবতী নদীর উপর এই কাঠের ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। নদীর পশ্চিম পারের শিক্ষার্থীরা এপারে শ্রীরামপুর এলাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করে থাকে। এছাড়া দৈনন্দিন বাজার বা নিত্য প্রয়োজনীয় মালামাল ক্রয় করতে ওপারের মানুষকে আসতে হয় এপারের শ্রীরামপুর বাজারে। কিন্তু গত প্রায় তিন বছর ধরে ব্রীজটির বিভিন্ন অংশে ভেঙে গিয়ে চলাচলের একেবারে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রয়োজনীয় সংষ্কারের অভাবে দীর্ঘদিনের এই কাঠের ব্রিজটি এখন মরণ ফাঁদ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারপর প্রয়োজন মিটাতে জনসাধারণ ঝুকি নিয়ে এই ব্রীজ এখানও পার হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ব্রীজ পেরিয়ে যাওয়ার আগেই প্রতিনিয়ত কাঠ ভেঙ্গে নদীর পানিতে পড়ছে সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। ব্রীজটির অধিকাংশ অংশ ভেঙে পড়ার পাশাপাশি পুরোটাই নিচের দিকে বাঁকা হয়ে ঝুঁকে পড়েছে। ফলে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। ভাঙাচোরা ও জরাজীর্ণ অবয়ব নিয়ে এই কাঠের ব্রীজটি এভাবে প্রায় ৩ বছর অতিক্রম করলেও মেরামতের উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

শ্রীরামপুর গ্রামের বাসিন্দা আরিজুল ইসলামসহ স্থানীয়রা বলেন, কয়েক বছর ধরে এই ব্রীজটি ভেঙে পড়ে আছে। কয়েকটি গ্রামের মানুষের যাতায়াতে অনেক কষ্ট হয়। ব্রীজটির ওপর দিয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে শ্রীরামপুর বাজারে সাধারণ মানুষ ও স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করে। আমরা বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে যাতায়াত করতে পারি না। অতি দ্রুত ব্রিজটি সংস্কার করে পথচলা সুগম করার জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন ব্রিজ দিয়ে চলাচলকারী শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা।

কুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ আসাদুল হক জানান, ব্রীজটি জেলা পরিষদের করা ছিল। কিন্তু ভেঙে পড়ার পর তারা আর এটি সংষ্কার করার কোন উদ্যোগ নেয়নি। ব্রীজ থেকে পড়ে মানুষ আহত হচ্ছে। ওই ব্রীজ পার হয়ে কুলিয়া ও শ্রীরামপুর বাজারে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ আসা যাওয়া করে। এপারে স্কুল, কলেজ, মাদ্রসা সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। শিক্ষার্থীরা ঝুকি নিয়ে ওই ব্রীজ পার হয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করছে।

তিনি আরো বলেন, আমি অনেক চেষ্টা করেছি ব্রীজটি সংষ্কারের জন্য। কিন্তু পারিনি। এখানে একটি বড় ব্রীজ দরকার। আমি শুক্রবার (৭ অক্টোবর) স্থানীয় এমপি ডাঃ আ.ফ.ম রুহুল হক সাহেবকে ওই ব্রীজটির ব্যাপারে কথা বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন দ্রুত ওখানে একটি বড় ব্রীজ নির্মাণের।

লাবণ্যবতী নদীর উপর নির্মিত দীর্ঘদিনের ভাঙাচোরা ও জরাজীর্ণ কাঠের ব্রিজটি অতিদ্রুত সংস্কার করে ওই এলাকায় বসবাসকারি জনগণ এবং ব্রিজ দিয়ে চলাচলকারীদের ভোগান্তী থেকে মুক্তি দিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

খুলনা গেজেট//এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!