প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের তাণ্ডবে যখন দিশেহারা, তখন আশার বাণী শোনাল রাশিয়া। নিজেদের তৈরি প্রথম পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিন হিসেবে চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে যাচ্ছে দেশটি। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যেই ভ্যাকসিনটিকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়ার বিষয়টি নির্ধারণ করেছে ভ্লাদিমির পুতিন প্রশাসন।
রুশ কর্মকর্তারা জানান, মস্কোভিত্তিক গামালিয়া ইন্সটিটিউটের তৈরিকৃত ভ্যাকসিনটি আগামী ১০ আগস্ট অথবা আশা করা যাচ্ছে তারও আগে চূড়ান্ত অনুমোদন পেতে পারে।
তারা সিএনএন’কে বলেন, জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনটি অনুমোদিত হবে। তবে এই ভ্যাকসিনটি প্রথমে পাবেন করোনা মোকাবিলায় নিয়োজিত প্রথম সারির স্বাস্থ্যকর্মীরা।
রাশিয়ার সার্বভৌম সম্পদ তহবিল থেকে গামালিয়া ইন্সটিটিউটের এই ভ্যাকসিন তৈরি ও গবেষণা কাজে অর্থায়ন করা হয়েছে। ১৯৫৭ সালে সোভিয়েত আমলে বিশ্বের প্রথম স্যাটেলাইটের সফল উৎক্ষেপণের কথা উল্লেখ করে রুশ সার্বভৌম সম্পদ তহবিলের প্রধান কিরিল দিমিত্রিয়েভ বলেন, ‘এটি একটি স্পুটনিক মুহূর্ত।’
তিনি আরও বলেন, আমেরিকানরা স্পুটনিকের হুইসেল শুনে অবাক হয়েছিল। আশা করছি এই ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রেও একই অনুভূতি হবে। ভ্যাকসিন নিয়ে আসার জন্য রাশিয়াই প্রথম হবে।
রাশিয়া এই ভ্যাকসিনের চূড়ান্ত অনুমোদন দিতে গেলেও এখন পর্যন্ত ভ্যাকসিন পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেনি। ফলে ভ্যাকসিনটি কতটুকু সুরক্ষিত অথবা এর কার্যকারিতার ব্যাপারে এখনও কোনও সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে সিএনএন।
তবে সমালোচকরা বলছেন, তীব্র রাজনৈতিক চাপের মধ্যে দেশটি এই ভ্যাকসিন আনার জন্য তাড়াহুড়া শুরু করেছে; যা বিশ্বের বৈজ্ঞানিক শক্তি হিসেবে রাশিয়াকে তুলে ধরতে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তবে ভ্যাকসিনটির পরীক্ষা মানবদেহে অসম্পূর্ণ থাকায় এ নিয়ে ব্যাপক উদ্বেগ রয়েছে।
এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের বেশিরভাগ ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে আছে। তবে এর মধ্যে বেশি কয়েকটি ভ্যাকসিন ইতিমধ্যে মানবদেহে পরীক্ষার পর্যায়ে পৌঁছেছে। বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে বলেছেন, ভ্যাকসিনগুলো চূড়ান্তভাবে অনুমোদনের আগে এখনও অনেক কাজ বাকি রয়েছে। সূত্র: বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ব্লুমবার্গ