সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলায় মরিচ্চাপ নদী খননের সময় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে ভেঙে পড়ে বুধহাটা ইউনিয়নের বাঁকড়া সেতুটি। কিন্তু গত দুই বছর পার হলেও সেটি অপসারণ বা সেখানে নতুন কোনো সেতু নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে জেলার তিন উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ।
বাঁকড়া সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর নির্মাণ করলেও ওই সড়কটি এখন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতাধীন। সরকারি এ দুটি সংস্থার সমন্বয়হীনতার কারণে সেতুটি অপসারণ বা চলাচলের বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাচ্ছে না বলে মনে করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। দুটি সংস্থাই একে অন্যকে দুষছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আশাশুনি উপজেলার বুধহাটা ইউনিয়নের বাঁকড়া এলাকায় মরিচ্চাপ নদীর উপর সেতুটি নির্মাণ করা হয় ২০১৬-১৭ অর্থবছরে। প্রায় ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর। এরপর মরিচ্চাপ নদী খননের সময় ২০২২ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ করে সেতুটি ভেঙে পড়ে।
আশাশুনির কামালকাটি গ্রামের হারাধন চন্দ্র জানান, আশাশুনি উপজেলার শোভনালী ও বুধহাটা, সদর উপজেলার ফিংড়ি এবং কালিগঞ্জ উপজেলার চাম্পাফুল ইউনিয়নের লোকজন এই সেতুটি দিয়ে চলাচল করে। মরিচ্চাপ নদী খননের সময় ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসের মাঝামাঝির দিকে হঠাৎ করে সেতুটি ভেঙে পড়ে। ফলে তিন উপজেলার মানুষের চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। প্রায় দশ কিলোমিটার ঘুরে আশাশুনি অথবা ব্যাংদাহ সেতু পার হয়ে চলাচল করতে হচ্ছে এই তিন উপজেলার মানুষদের। এতে করে যেমন টাকা খরচ হচ্ছে তেমনি সময়ও বেশি লাগছে। সেতুটি ভেঙ্গে পড়ার প্রায় আড়াই বছর হয়ে গেল। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেটি অপসারণ বা সেখানে একটি নতুন সেতু নির্মাণের কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। এতে করে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে আমাদের। তিনি দ্রুত এই ভাঙ্গা সেতুটি সরিয়ে সেখানে একটা নতুন সেতু নির্মাণের জোর দাবি জানান।
এ ব্যাপারে এলজিইডি সাতক্ষীরার নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ কামরুজ্জামান বলেন, সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থানা অধিদপ্তর নির্মাণ করেছে। সেটি ভেঙে পড়ার পর অপসারণ করার কথাও তাদের। কিন্তু আজ পর্যন্ত দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর সেতু অপসারণ বা জনসাধানের চলাচলে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। সেখান থেকে আদেশ এলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।
আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ রনি আলম নূর বলেন, সেতুটি অপসারণ করে সেখানে নতুন সেতু নির্মাণে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এলজিইডির পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও প্রাথমিক জরিপ চালোনো হয়েছে। দ্রুত তারা নতুন সেতু নির্মাণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম