সাতক্ষীরায় গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে ডুবে গেছে সদর উপজেলার ভোমরা স্থলবন্দর এলাকায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা। নিষ্কাশনের পথ না থাকায় গত দুই মাস ধরে পানি জমে থাকছে বিদ্যালয় চত্বরে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন বিদ্যালয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিতে প্রতিষ্ঠানের মাঠ ডুবে গেছে। পাশ্ববর্তী ডোবার নোংরা দুর্গন্ধযুক্ত পানি বিদ্যালয়ের বারান্দা পর্যন্ত উঠে গেছে। স্কুলের সামনে হাঁটু পানি জমে আছে। পানি পার হয়ে কোনো কোনো শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসার সময় পড়ে গিয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছে। আবার অনেকে অভিভাবকদের কোলে চড়ে ক্লাসে আসছে।
ওই বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুল গফফার বলেন, আশপাশে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় গত বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমেছে। শিশুদের নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। ওই পানি তাদের গায়ে লাগলে নানা রোগের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনকি সাপসহ বিষাক্ত পোকামাকড়ের আক্রমণের সম্ভাবনা আছে।
নুর ইসলাম গাইন নামের আরেক অভিভাবক বলেন, বিদ্যালয় চত্বরে হাঁটু পানি। শিশুরা পানিতে পড়ে গেলে ডুবে যেতে পারে। এজন্য ছেলেকে কোলে করে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। দ্রুত সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করি।
ভোমরা বাজারের সবজি ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন জানান, আমার ছেলে ভোমরা স্থলবন্দও এলাকায় অবস্থিত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়া লেখা করে। কিন্তু বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে পারছেন না। সবজি কেনার কাজে প্রতিদিন তাকে সাতক্ষীরা শহরে আসতে হয়। যেদিস তাড়াতাড়ি ফিরতে পারি সেদিন বাচ্চাকে কাধে করে নিয়ে স্কুলে দিয়ে আসি। আবার ছুটি হলে কাধে তুলে নিয়ে আসি। এসমস্যা বিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের পোহাতে হচ্ছে। তিনি বিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে দ্রুত এসমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস নাহার বলেন, পানি নিষ্কাসন না হওয়ায় দুই মাস ধরে আমাদের স্কুলের মাঠে পানি জমে আছে। আমাদের বিদ্যালয়ের ভবন পুরাতন হওয়ায় রাস্তার তুলনায় নিচু, যে কারণে অল্প বৃষ্টিতে পানি জমে যায়। এতে করে সবার ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। আশা করি দ্রত সমস্যার সমাধান হবে।
ভোমরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইসরাইল গাজী বলেন, বিদ্যালয় চত্বরটি নিচু হওয়ায় সেখানে পানি জমে আছে। পাশে কোনো ড্রেন না থাকায় পানি সরানো যাচ্ছে না। বিদ্যালয়ের মাঠে বালু ভরাট করে উঁচু করতে হবে। এজন্য স্থানীয়দের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হোসনে ইয়াসমিন করিমী বলেন, ভোমরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে পানি জমে থাকায় শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হচ্ছে। পাশে ভোমরা বন্দরের নতুন সড়ক নির্মাণ হওয়ার পর বিদ্যালয়ের চত্বর ও পুরাতন ভবনটি নিচু হয়ে গেছে। দ্রুত বিদ্যালয় চত্বরে বালু ভরাট ও নতুন একটি ভবন নির্মাণের জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ