খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নে আগামী ২০ সেপ্টেম্বর ইউপি নির্বাচন ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে দিঘলিয়া উপজেলা নির্বাচন অফিস এ সংক্রান্ত সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে বলে উপজেলা নির্বাচন অফিসার নাসিমা খাতুন খুলনা গেজেটকে জানান।
গত ১৬ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর ২দিন ঐ ইউনিয়নের নয়টি ভোট কেন্দ্রের ৫৭ টি ভোট কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিজাইডিং, সহকারী প্রিজাইডিং কর্মকর্তা, পোলিং এবং সহকারী পোলিং কর্মকর্তাদের ইভিএম পদ্ধতিতে কিভাবে ভোট গ্রহণ করতে হবে এ সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। আগামীকাল ১৮ সেপ্টেম্বর সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ইউনিয়নের নয়টি ওয়ার্ডে মগ ভোট অর্থাৎ নমুনা ভোট অনুষ্ঠিত হবে। ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট সফলের লক্ষে উপজেলা নির্বাচন অফিস ১জন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর নিয়োগ দিয়েছেন। যিনি সার্বক্ষণিক বিষয়টি দেখভাল করছেন।
এছাড়া ২০ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের দিন নির্বাচন কমিশন থেকে ইভিএমএ এক্সপার্ট ৩ জন কর্মকর্তাকে বারাকপুর ইউনিয়নে ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের টেকনিক্যাল সাপোর্ট দেওয়ার জন্য দায়িত্ব দিয়েছেন। বারাকপুর ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৪৮৫ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৯২৮ জন এবং মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৫৬১ জন। মোট ভোট কেন্দ্র হবে ৯ টি ওয়ার্ডে ৯ টি। এরমধ্যে ১নং ওয়ার্ড লাখোয়াটী পশ্চিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪৮৭ জন। ২ নং ওয়ার্ড লাখোয়াটী পূর্ব সরকারী প্রামিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৪২৭ জন। ৩ নং ওয়ার্ড কামারগাতী পশ্চিম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ২২৯ জন। ৪ নং ওয়ার্ড বারাকপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ২ হাজার ৯২৫ জন। ৫ নং ওয়ার্ড উঃ বারাকপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৪১৬ জন।৬ নং ওয়ার্ড নন্দনপ্রতাপ মাধ্যামিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৪১৮ জন। ৭ নং ওয়ার্ড আড়ুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৯০ জন। ৮ নং ওয়ার্ড আমবাড়িয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ৮৮৯ জন। ৯ নং ওয়ার্ড রাধামাধবপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে মোট ভোটার ১ হাজার ৬০৪ জন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট শনাক্তকরণের জন্য প্রয়োজন হয় স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র, লেমিনেটেড জাতীয় পরিচয়পত্র, ভোটার নং এবং আঙ্গুলের ছাপ। এ পদ্ধতিতে ভোট প্রদান সহজ ও নির্ভযোগ্য। মাত্র ২ টি বোতাম চেপে ভোট দিতে হয়। মেশিনের স্কিনে ব্যালট পেপার দেখা যাবে। ভোটারকে পছন্দের প্রতীকের পাশে সাদা বোটাম চাপতে হবে। এরপর ভোট নিশ্চিত করতে সবুজ বেতাম চাপতে হবে।
ইভিএম পদ্ধতিতে জাল ভোট দেয়া, কেন্দ্র দখল করে ভোট প্রদান, একজনের ভোট অন্যের পক্ষে প্রদান, একবার ভোট দিয়ে থাকলে দ্বিতীয়বার ভোট দেওয়া যায়না। নির্ধারিত সময়ের আগে মেশিন চালু হওয়ার সুযোগ নেই বিধায় ভোট গ্রহণ শুরুর পূর্বে অবৈধভাবে ভোট গ্রহণ বা প্রদানেরও কোন সুযোগ নেই। পাসওয়ার্ড সংরক্ষিত বলে প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার ব্যতীত অন্য কারোর পক্ষে মেশিন চালু করা সম্ভব নয়। এ পদ্ধতিতে কোন অবস্থাতেই অবৈধভাবে ভোট প্রদানের কোন সুযোগ নেই। এমনকি ইভিএম মেশিন ছিনতাই করে নিলেও সে সুযোগ নেই। এ পদ্ধতিতে বায়োমেট্রিক যাচাই ব্যক্তির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক বিধায় কেন্দ্র দখল করেও ভোট প্রদান সম্ভব নয়। বায়োমেট্রিক যাচাই করে ভোট প্রদাণ করতে হয় বিধায় পছন্দমতো প্রিজাইডিং অফিসার নিয়োগ করেও ভোট কারচুপির কোন সুযোগ নেই। কোন কারণে ভোটার ভোট কেন্দ্রে না গেলে বা মৃত ভোটারের ভোট অন্য কারোর পক্ষে প্রদান করা সম্ভব হবে না।
এ পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের পরপরই স্বল্প সময়ের মধ্যে কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষনা করা যায়। ভোট প্রদান শেষে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল প্রিন্ট ও বিতরণ করা সম্ভব। মেশিন ব্যবহার সংক্রান্ত সম্পূন্ন লগ সংরক্ষণ করা যায়।
খুলনা গেজেট/ টি আই