দিঘলিয়া উপজেলার বারাকপুর ইউনিয়নে ইউপি নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। এই ইউনিয়নে সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসাবে অন্তত ৯ জনের নাম শোনা যাচ্ছে। এদের মধ্যে ৭ জনই ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী। বাকি দুজন বিএনপি’র মনোনয়ন প্রত্যাশী। অবশ্য বিএনপি নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা এলাকায় গণসংযোগ শুরু করেছেন। রাস্তা ঘাট, হাট বাজার, খেয়াঘাটের সামনে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে শোভা পাচ্ছে প্রার্থীদের ডিজিটালাইজড ব্যানার, পানা, বিলবোর্ড এবং রং বেরং এর নানান ধরনের পোষ্টার।
একই সাথে ক্ষমতাসীন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা দলীয় মনোনয়ন লাভের আশায় মরিয়া হয়ে উঠেছেন।যে যার মতো করে এলাকার সাংসদ, ইউনিয়ন, উপজেলা এবং জেলা নেতাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে চলেছেন।
সাম্প্রতি নির্বাচন কমিশন ১১ এপ্রিল প্রথম ধাপের নির্বাচনের সিডিউল ঘোষণা করায় ৬৩ টি উপজেলার ৩২৩ টি ইউপির ভোট হবে। এর মধ্যে অত্র উপজেলার ৬ টি ইউনিয়নসহ বারাকপুর ইউনিয়নও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বারাকপুর, লাখোয়াটী, নন্দনপ্রতাপ, মাধবপুর,আড়ুয়া, কামারগাতী, ঘোষগাতী, আবালগাতী এই ৮ টি গ্রাম নিয়ে বারাকপুর ইউনিয়ন গঠিত। অত্র ইউনিয়নে মোট ভোটার সংখ্যা ১৯ হাজার ১’শ ২৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ৭’শ ১৩ জন এবং মহিলা ভোটার ৯ হাজার ৪ ‘শ ১৩ জন।
১৯৫৯ সাল থেকে অধ্যাবধি একটানা ৫২ বছর ধরে অত্র ইউনিয়ন পরিষদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন পর্যায়ক্রমে লাখোহাটি গ্রামের শরীফ পরিবার এবং বারাকপুর গ্রামের গাজী পরিবার। ইউনিয়নবাসীর ধারণা এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না।
জানাগেছে, আঃলীগ আসন্ন ইউপি নির্বাচনের জন্য সংগঠনের তৃণমূলের রেজুলেশন কেন্দ্রে পাঠানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করেছেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি দলের দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ নির্দেশনা প্রদান করা হয়। ইউপি চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়নের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ২৮(৩) (ঙ) ধারা অনুযায়ী আগ্রহী প্রার্থীদের প্যানেল তৈরীর জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ বর্ধিত সভার আয়োজন করবে এবং আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে প্রার্থীদের একটি প্যানেল সুপারিশের জন্য কেন্দ্রে প্রেরণ করবে।
প্যানেলে জেলা উপজেলা ও ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক মোট ৬ জনের সাক্ষরে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচন কমিশন কর্তৃক ঘোষিতব্য তফসিল অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে সভাপতির ধানমন্ডিস্থ রাজনৈতিক কার্যালয়ে জমা দিতে হবে। প্যানেল তৈরীর ক্ষেত্রে ইউনিয়ন উপজেলা ও জেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের পরামর্শ গ্রহণপূর্বক কমপক্ষে ৩ জনের একটি প্যানেল তৈরি করতে হবে। প্রার্থীদের রাজনৈতিক পরিচিতি সম্বলিত একটি সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত অবশ্যই পুরণ করতে হবে যা বাধ্যতামূলক। প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া সম্পর্কে নির্দেশনা প্রদানের লক্ষ্যে আগামী ৬ মার্চ খুলনা জেলা আওয়ামী লীগ এক বর্ধিত সভা আহবান করেছে।
বিগত ইউপি নির্বাচনে গাজী পরিবার থেকে দুইজন হেভিওয়েট সরকারদলীয় নেতা দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। নির্বাচনে বর্তমান চেয়ারম্যান গাজী জাকির হোসেন দলীয় মনোনয়ন লাভ করেন এবং চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। নির্বাচনে ইউনিয়নের প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও জেলা আঃলীগ নেতা প্রয়াত গাজী হাফিজুর রহমান বিদ্রোহী প্রার্থী হন। এবার গাজী পরিবার থেকে ৪ জনসহ সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে যাঁদের নাম শোনা যাচ্ছে।
এসব প্রার্থীরা হলেন, বর্তমান চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি গাজী জাকির হোসেন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও প্রয়াত জেলা আওয়ামীলীগনেতা গাজী হাফিজুর রহমানের জ্যৈষ্ঠ পুত্র গাজী ইয়াসির আরাফাত হিমেল, বারাকপুর ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি গাজী আব্দুর রউফ, আঃলীগনেতা গাজী জাহাঙ্গীর হোসেন, প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনির আহবায়ক কমিটির সদস্য শরিফ ইকবাল হোসেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক মোঃ নজরুল ইসলাম, বারাকপুর বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামীলীগের সমার্থক শেখ আনছার আলী, উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী জিয়াউর রহমান দুর্জয় ও বিএনপি সমর্থক ইনামুল শরীফ।