দখলের প্রতিযোগীতায় দিন দিন সংকুচিত হয়ে যাচ্ছে নগরীর ফুটপথগুলো। চলাচলের যথেষ্ঠ স্থান না পাওয়ায় রাস্তায় নামতে বাধ্য হন পথচারিরা। ফলে ঘটছে ছোটখাট দুর্ঘটনা।
নগরীর প্রাণ কেন্দ্র ডাকবাংলা মোড় থেকে বড় বাজার মোড় পর্যন্ত ফুটপথ পুরাটাই হকারদের দখলে। যা যশোর রোড সহ আশপাশের এলাকা জুড়ে বিস্তৃত। কোথাও কোথাও তা ফুটপথ ছেড়ে চলে এসেছে সড়কেও।
নগরীর দৌলতপুর বেবীট্যাক্সি স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে মহসিন স্কুল পর্যন্ত হকারদের দখলে ফুটপথগুলো। স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় ফুটপথ দখল করে ব্যবসা করছেন বছরের পর বছর। আবার কেউ কেউ বলেছেন সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তাদের মাসোয়ারার মাধ্যমে চলছে তাদের এ ব্যবসা।
নাম প্রকাশ করা না শর্তে নগরীর ডাকবাংলা এলাকার এক হকার জানান, এ রাস্তার অনেক ব্যবসায়ী টাকা নিয়ে এখানে বসতে দেয়। পুলিশ বা সংশ্লিষ্ট শাখার অভিযানের আগে তাদের সংকেত দেওয়া হয়। সংকেত পেলে তারা ফুটপথ ছেড়ে দেয়। অন্য সময় আবার চিত্রটি ভিন্ন হয়ে যায়।
দৌলতপুর বেবীস্ট্যান্ডের হকার দেলোয়ার জানান, দীর্ঘ ১০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন। বিভিন্ন সময়ে মৌসুমী ফলের ব্যবসা করেন তিনি। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, প্রতিদিন সিটি কর্পোরেশনের নাম করে এক ব্যক্তি প্রতিটি ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ১০ টাকা চাঁদা আদায় করেন। এখানে দেড় শতাধিক দোকান রয়েছে বলে তিনি আরও জানিয়েছেন।
রহিম শেখ। পান সিগারেটের ব্যবসায়ী। তিনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করছেন। স্থানীয় কিছু নেতাকে ম্যানেজ করে এখানে ব্যবসা করছেন তিনি। রাস্তা বন্ধ করে কেন ব্যবসা করছেন ? জবাবে তিনি জানান, পাশ দিয়ে পথচারীরা পার হচ্ছেন কোন অসুবিধা হচ্ছে না।
খুলনা বিএল কলেজের রসায়ন বিভাগের ছাত্র অনিক মুহসিন স্কুলের পাশে একটি মেসে থাকেন। প্রধান সড়ক ধরে তাকে ওই কলেজে ক্লাস করতে যেতে হয়। এটি একটি ব্যস্ততম সড়ক, যা সকলে জানেন। রাস্তার ফুটপথগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অধিকাংশ পথচারীর প্রধান সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। মঝেমধ্যে এখানে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন পথচারীরা। তাছাড়া ফুটপথের গাঁ ঘেঁষে গড়ে উঠেছে অনেক নামী দামী রেস্টুরেন্ট, যার চুলাগুলো ফুটপথের জায়গা দখল করে বসানো হয়েছে। ফলে অনেক সময় আমাদের আতঙ্কের মধ্যে এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করতে হয় পথচারিকে।
দৌলতপুরের বাসিন্দা শেখ শহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় প্রভাবশালীদের কারণে ফুটপথের ব্যাপারে আমরা কোন কথা বলতে পারিনা। প্রশাসনের পক্ষ থেকে মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান শেষ হলে চিত্র আবার আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের স্টেট অফিসার মো: নুরুজ্জামান তালুদার এ প্রতিবেদককে জানান অবৈধভাবে ফুটপথ দলদারদের বিরুদ্ধে মাঝেমধ্যে অভিযান পরিচালনা করা হয়। গত ১৫ দিন পূবেও নগরীতে অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযান শেষ হলেই আবার তারা দখল করে সেখানে ব্যবসা করতে বসে। এদের জরিমানাও করা হয়েছে। ফুটপথ দখল করে যারা ব্যবসা করছেন তাদের তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী খুব দ্রুত অভিযান চালানো হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই