খুলনার ভৈরব নদে বরিশালের তোতা মিয়ার ভাসমান নার্সারি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এখানে সপ্তাহে একদিন আসেন তিনি। বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের চারা বিক্রি করেন। সুলভমূল্যে গাছ কিনতে রূপসা উপজেলাসহ নগরীর বিভিন্নপ্রান্ত থেকে বৃক্ষপ্রেমীরা এখানে ভিড় করেন।
বরিশালের বানারিপাড়ার আব্দুর রহমানের ছেলে তোতা মিয়া। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে নার্সারি ব্যবসার সাথে জাড়িত। বাপ ও দাদার পূর্ব ব্যবসা নার্সরি কেন্দ্রিক। পূর্ব পুরুষদের ব্যবসা তিনি আকড়ে রেখেছেন। বাড়িতে তার দু’টি নার্সারি রয়েছে। একটি নিজস্ব জমিতে, অপরটি ভাড়া নেওয়া। শখের বসে তিনি বরিশালসহ বিভিন্ন জেলার নদীতে ঘুরে ঘুরে চারাগাছ বিক্রি করেন। যেখানে যান সেখানে মানুষের ভালবাসায় সিক্ত হন তিনি। সংসার জীবনে তার তিন মেয়ে ও এক ছেলে রয়েছে। যা আয় করেন তা দিয়ে বেশ ভালভাবে চলে যায়। গাছ বিক্রির জন্য এখান থেকে অগ্রীম বুকিংও পান তিনি। সপ্তাহে এখান থেকে তার ১০ হাজার টাকার ওপরে আয় হয।
বানারিপাড়ার তোতা মিয়া বলেন, বরিশালের বিভিন্ন নদীতে গিয়ে গাছ বিক্রি করা তার শখ। শখের বসে তিনি বিভিন্ন জেলার নদীতে গিয়েও বিক্রি করেন। গত চার বছর ধরে তিনি ভৈরব নদের বিভিন্ন পয়েন্টে নোঙ্গর করেন এবং বৃক্ষপ্রেমীরা তার কাছ থেকে গাছ ক্রয় করে। বরিশাল থেকে সপ্তাহে একদিন খুলনায় আসেন। এখানে আসতে নৌকায় ১২ ঘন্টা সময় ও ৪৮ লিটার তেল খরচ হয়। রাতে তাকে নৌকায় ঘুমাতে হয়। খুলনায় আসতে পথে তাকে একশ’ টাকা জলকর দিতে হয়। শারীরিক সমস্য হলে নার্সারি থেকে একজন কর্মচারীকে সাথে নিয়ে তিনি খুলনায় আসেন। খুলনাঞ্চলের মানুষ খুব ভাল। সিংহেরচর ও বেলফুলিয়া এলাকার মানুষ তার ক্রেতা।
৪০ টাকা থেকে শুরু করে চার হাজার টাকা দামের ফলগাছ ও আড়াইশ’ টাকা থেকে শুরু করে চারশ’ টাকা পর্যন্ত বিভিন্ন প্রজাতির ফুলগাছ রয়েছে তার নৌকায়।
সিংহেরচর এলাকার আব্দুল মতিন বলেন, গত দু’বছর ধরে তাকে চেনেন। তার এ ভাসমান নার্সারি থেকে গাছ ক্রয় করছেন। বাড়ির আশপাশে অনেক নার্সারি রয়েছে। তাদের কথার অনেক অমিল থাকে। এখান থেকে গাছ কিনে তিনি ঠকেননি বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন তিনি।
নগরীর বসুপাড়া এলাকার রহিম নামে এক ক্রেতা বলেন, দু’মাস ধরে গাছ কিনছেন এখান থেকে। তোতা কাকার কথার সাথে কাজের মিল পেয়েছেন তিনি। এজন্য আজও গাছ কিনতে এখানে এসেছেন। অন্যান্য নার্সারি থেকে এখান সূলভ মূল্যে গাছ পাওয়া যায়।
খুলনা গেজেট/এনএম