খুলনা, বাংলাদেশ | ৪ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৮ মে, ২০২৪

Breaking News

  নরসিংদীতে বজ্রপাতে ৩ জনের মৃত্যু
  রাঙামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ সদস্যসহ নিহত ২
  সাতক্ষীরার তালায় ধানের ট্রাক উল্টে ২ শ্রমিক নিহত, আহত আরও ১১ জন

তীব্র খরায় বিপাকে রামপালের আমন ও মৎস্য চাষীরা

মেহেদী হাসান, রামপাল

বঙ্গোপসাগরের উপকূলীয় উপজেলা বাগেরহাটের রামপাল। এখানের মানুষের জীবন জীবিকার অর্ধেক আসে কৃষি থেকে। বাকী প্রায় অর্ধেক আয় হয় চিংড়ি ও সাদা মাছ চাষ করে। আবার কিছু মানুষ দিনমজুর ও বাইরে চাকরি করে জীবিকানির্বাহ করে থাকেন।

সাদা সোনা খ্যাত চিংড়িতে অব্যাহত মড়ক- ভাইরাস ও তীব্র গরমের কারণে আশানুরূপ সাফল্য আসছে না। কার্ফ ও সাদা মাছ চাষ করে টিকে আছেন মাছ চাষিরা।

তীব্র খরা, লবনাক্ততার কারণে এ উপজেলায় আগে প্রায় ২০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হতো। ৮০’র দশক থেকে নির্বিচারে জমিতে লোনা পানি ঢুকিয়ে মৎস্য চাষ শুরু হয়। বিপত্তিটা সেখান থেকে শুরু। বর্তমানে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে এখন তা ৫/৬ হাজার হেক্টরে ঠেকেছে। যা এ অঞ্চলের কৃষিকে মারাত্মক বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এরপর তীব্র লোনা পানির প্রভাবে জমির উর্বরতা শক্তি একদম কমে গেছে।

এখন না হচ্ছে ধান, না হচ্ছে মাছ। এবার সার্বিকভাবে বাগদা চিংড়ির ফলন কমেছে বলে রামপাল উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অন্জন বিশ্বাস জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন, তাপ মাত্রা বৃদ্ধি ও ভাইরাসের কারণে মৎস্য চাষ ব্যাহত হচ্ছে। এমনটি অব্যাহত থাকলে খামারিদের মৎস্য চাষ কঠিন হয়ে পড়বে।

বড়দিয়া গ্রামের কৃষক মোন্তাজ মোল্লা জানান প্রতি বছর আমি কয়েক বিঘা জমিতে আগমনের আবাদ করি। আষাঢ় মাস চলে গেছে। শ্রাবণ মাস ও শেষের পথে। বীজ, সার এনে ঘরে রেখেছি ২ মাস পূর্বে। এবার বৃষ্টি হচ্ছে না। কি হবে জানিনা। একই কথা বলেন পেড়িখালী গ্রামের এরশাদ হাকিম জুয়েল।

পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতা মোল্লা আ. সবুর রানা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এ বছর বৃষ্টিপাত হয়নি। তীব্র খরা ও লবনাক্ততার কারণে মৎস্য ও আমন চাষ হুমকিতে পড়েছে। প্রকৃতির এই রুদ্র আচরণের জন্য আমরা দায়ী। এর থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের কার্বন নিঃসরণ কমাতে হবে। উপকূলীয় এলাকায় সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে এবং লবন সহিষ্ণু জাতের ধানসহ অন্যান্য রবিশস্য আবাদ বাড়াতে হবে।

রামপাল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষ্ণা রানী মন্ডল। তিনি জানান, এই অঞ্চলটা নদী বেষ্টিত উপকূলীয় অঞ্চল। এখানে অপরিকল্পিতভাবে নদী খালে বাঁধ দিয়ে লবনাক্ত পানি ঢুকিয়ে চিংড়ি চাষের ফলে জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস পেয়েছে। এতে চাষযোগ্য জমির পরিমাণ কমে গেছে। এ এলাকা কৃষি প্রধান এলাকা। ৮০ ভাগ মানুষ প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কৃষির সাথে জড়িত। এক সময় এখানে বোরো আবাদ হতো না। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের কারণে এখন বোরো আবাদ আমনকেও ছাড়িয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, আমরা জলবায়ু সহিষ্ণু ও উচ্চ ফলনশীল ধান চাষ করে সফলতা অর্জন করেছি। কৃষক ও কৃষি খাতকে বাঁচাতে কৃষকদের প্রশিক্ষণ, কৃষি উপকরণ বিতরণ ও বীজ বিতরণ অব্যাহত রেখেছি। সার্বিকভাবে এ উপজেলা খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ উপজেলা। লোকবলের অভাবে আমরা চাষিদের কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে পারছি না। বৃষ্টি না হওয়ায় আমন আবাদ কঠিন হয়ে পড়বে বলে মত দেন ওই কর্মকর্তা।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!