খুলনা, বাংলাদেশ | ২৫ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১০ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১০৩৩
  কুষ্টিয়ায় বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
  আরও এক মামলায় খালাস পেলেন ফখরুল-রিজভী-আমির খসরু
  ছেলেধরা সন্দেহে গণপিটুনিতে রেণু হত্যা : একজনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন

ডুমু‌রিয়ার পারভীন হত্যা মামলার রায় হতে পারে মঙ্গলবার

নিজস্ব প্রতিবেদক

Coat

ডুমুরিয়া উপজেলা মহিলা কলেজের পাশে জনৈক শামসুর রহমানের বাড়ি। ২০২১ সালের ১৫ জুন রাতে বাড়ির সকলে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন। হঠাৎ রাত সোয়া একটার দিকে ওই বাড়ির এক ভাড়াটিয়ার আট বছরের শিশুর ক্রন্দনে সকলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। পরে জানতে পারে দুর্বৃত্তের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে ওই বাড়ির ভাড়াটিয়া পারভীন বেগম মারাত্মক জখম হয়েছেন। থানায় খবর দেওয়া হয়। উপস্থিত হয় পুলিশ। আহত নারীকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুর্বৃত্ত ছিল নিহতের দ্বিতীয় স্বামী মো: লিটন মোল্লা। আগামীকাল মঙ্গলবার এ হত্যা মামলার রায় ঘোষণা করা হবে খুলনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে।

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, লিটন মোল্লা নিহত পারভীন বেগমের দ্বিতীয় স্বামী। ২০১৬ সালে তাদের বিয়ে হয়। নুপুর নামে একটি কন্যা সন্তানকে নিয়ে লিটনের ঘরে আসে সে। বিয়ের পর থেকে তাদের সংসার ভালই চলছিল। হঠাৎ তাদের সুখের সংসারে অশান্তি হানা দেয়। উভয়ের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। মারধরের ঘটনা ঘটে। তাদের মধ্যে ছাড়াছাড়িও হয়। একপর্যায়ে পারভীন বেগমকে হত্যার পরিকল্পনা লিটনের মাথায় আসে ।

পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২১ সালের ১৫ জুন একটি ধারলো ছুরি ও লোহার শাবল নিয়ে রাত একটার দিকে লিটন শামসুর রহমানের বাড়িতে হানা দেয়। পারভীন বেগমকে দরজা খুলতে বললে না খুলে ঘুমাতে যায়। পরবর্তীতে লোহার শাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ফেলে। লিটনকে অস্বাভাবিক দেখে পালানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় সে। কিন্তু হাত ধরে ফেলায় পারভীন আর পলাতে পারেনি। তাকে ধরে ধারালো ছুরি দিয়ে শরীরের বিভিন্নস্থানে আঘাত করতে থাকে লিটন। অচেতন হয়ে পড়লে রান্নাঘর থেকে কাঠ এনে অনাবরত মাথায় আঘাত করতে থাকে সে।

চিৎকারে পারভীনের কন্যা শিশু নুপুরের ঘুম ভেঙ্গে যায়। এসময়ে মায়ের রক্তাক্ত শরীর দেখে চিৎকার করতে থাকে সে। বাড়ির অন্যান্য সদস্যরা তখন ঘুমে আচ্ছন্ন ছিল। মেয়েটির চিৎকার শুনে বাড়ির সকলের ঘুম ভেঙ্গে যায়। সকলে এগিয়ে আসলে লিটন মোল্লা পালিয়ে যায়। পারভীন বেগমের বড় মেয়ে নুরজাহান বেগম বাদী হয়ে লিটন মোল্লার নাম উল্লেখ করে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। একই বছরের ৩০ আগস্ট ডুমুরিয়া থানার এসআই মো: হামিদুল ইসলাম লিটনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

পারভীনকে হত্যা করা হয় যে কারণে
বিয়ের সময় আগের ঘরের একটি কন্যা সন্তান নিয়ে লিটনের ঘরে ওঠে সে। লিটন বাচ্চা নেওয়ার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করে। কিন্তু পারভীন জানতে পেরে নষ্ট করে ফেলে। লিটনের অনুপস্থিতিতে সে পূর্বের স্বামীর সাথে নিয়মিত যোগাযোগ শুরু করে। তার সাথে সময়ও কাটাতে থাকে পারভীন। যা লিটনের সন্দেহ হয়। হত্যাকান্ডের দু’মাস আগে হঠাৎ সন্ধ্যায় পারভীন ঘর থেকে বের হয়ে যায়। রাতে ঘরেও ফেরেনি সে। এ নিয়ে কথা বললে অকথ্য ভাষায় তাকে গালিগালাজ করে সে। ওই দিন তাদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে লিটনকে বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। স্থানীয়ভাবে মিমাংশা করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় লিটন। হত্যাকান্ডের একসপ্তাহ আগে লিটনকে তালাকনামা পাঠায় সে। টাকা পয়সা ভোগ করার পর তাকে ছুড়ে ফেলা হয় বলে লিটন ১৬৪ ধারায় স্বাকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় আদালতে । এরপর হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে সে। পরে তাকে হত্যা করা হয়।

 

খুলনা গেজেট/এএ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!