সীমের রাজ্য ডুমুরিয়ায় এবার বাম্পার উৎপাদন হয়েছে। বরাতিয়া, গোবিন্দকাটি, ঠাকুন্দিয়া, মালতিয়া, শোভনা, খর্নিয়া, শাহাপুর, আড়ংঘাটা, আরাজি ডুমুরিয়া, জিলেরডাঙ্গায় মাছের ঘেরের আইল ও ভিটে বাড়িতে সীমের আবাদ হয়েছে, দ্বিগুণ জমিতে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা করোনার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে হাজারও কৃষক সীম আবাদে উৎসাহিত হয়। এবার বাম্পার ফলন হয়েছে। মৌসুমের শুরুতেই কেজি প্রতি ৮০ টাকা হলেও মৌসুমের মাঝামাঝি সময়ে এখন ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। দামের ক্ষেত্রে এ যেন আম্ফানের ন্যায় ক্ষতি-লোকসান।
বরাতিয়া গ্রামের নিতাই কৃষ্ণ মল্লিকের পুত্র প্রশান্ত মল্লিক দেড় বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন বছর দুয়েক আগে। পুরো জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছেন। আর আইলের পাশে সীমের আবাদ। মৌসুমের শুরু নভেম্বরের দিকে প্রতি কেজির মূল্য ৮০ টাকা দাম পেলেও এখন মূল্য নিম্নমুখি। কেজি প্রতি ১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আড়ৎ পর্যন্ত পৌঁছে দিতে পরিবহন ও সীম ক্ষেত থেকে তুলতে প্রতি দিন যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হচ্ছে তাতে উৎপাদন খরচও উঠছে না। বরাতিয়ার ৫শ’ কৃষক সীমের আবাদ করে ঠকে গেছেন।
একইগ্রামের ললিত দাস ১০ কাঠা জমিতে সীম চাষ করেছেন। ২০১৮ এবং ২০১৯ এর তুলনায় এবারের উৎপাদন অনেক বেশি। কৃষি বিজ্ঞানের ভাষায় বাম্পার উৎপাদন। ললিত দাস শীতকালীন সব্জি আবাদ করতে মহাজনের কাছ থেকে শতকরা ৫ টাকা সুদে ১ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছেন। এবারের দামে তিনি হতাশ হয়েছেন। ক্ষেত্র বিশেষ সীম আট টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
গোবিন্দকাটি গ্রামের রমেশ সরকার, কিংকর বশাক ও ঠাকুন্দিয়া গ্রামের আব্দুল জলিল গাজী বেগুনের পাশাপাশি সীমের আবাদ করেছেন। মৌসুমের শুরুতে বেগুন প্রতি কেজি ৬০ টাকা দাম পেলেও এখন ১০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। আর সীম বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা কেজিতে। মালতিয়া আড়তে গত বুধবার সীমের ক্রেতা ছিল না বললেই চলে। কৃষকদের বাকিতে সীম বিক্রি করতে হয়। চাষিদের ভাষায় দামের ক্ষেত্রে আম্ফানের ন্যায় বড় ধরণের ক্ষতি-লোকসান।
খুলনা গেজেট/কেএম