বিয়ের এক বছর পর গত রবিবার বিকেলে লাশ হয়ে পিত্রালয়ে ফিরে এলেন আছিয়া খাতুন (১৯) নামের এক গৃহবধূ। আছিয়া ডুমুরিয়ার সাহস ইউনিয়নের গজেন্দ্রপুর গ্রামের হতদরিদ্র কারিমুল গাজীর মেয়ে। আছিয়ার শ্বশুরালয়ের দাবি বিষপানে সে আত্মহত্যা করেছে। তবে তার পিতা মাতা ও স্বজনরা এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড দাবি যৌতুকলোভী স্বামীর পরকীয়ার বলি হয়েছেন আছিয়া।
আছিয়ার বাবা কারিমুল ইসলাম ও মাতা নাজমা বেগম জানান, মাত্র এক বছর পূর্বে তাদের একমাত্র মেয়ে আছিয়া খাতুন কে বটিয়াঘাটা উপজেলার সুরখালি ইউনিয়নের বারো ভূঁইয়া গ্রামের নাসির শেখের ছেলে ইমারুল শেখের সাথে বিয়ে হয়। মেয়ের সুখের কথা ভেবে হতদরিদ্র পিতা ধার দেনা করে নগদ ২ লাখ টাকা সহ বিভিন্ন আসবাবপত্র যৌতুক হিসেবে দেন জামাতার হাতে। কিন্তু বিয়ের ২/৩ মাস যেতে না যেতেই জামাই ইমারুল শেখ একজন জুয়াড়ী ও পরকীয়ায় আসক্ত বিষয়টি দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। এর প্রতিবাদ করলে স্বামী শ্বশুর শ্বাশুড়ীর পক্ষ থেকে আছিয়ার উপর নেমে আসে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। যৌতুক লোভী স্বামী আবারও যৌতুকের দাবিতে মারপিট করতে থাকে। একপর্যায়ে গত শনিবার বিকেলে স্বামীর চাপে পড়ে আছিয়া মোবাইল ফোনে তার মায়ের কাছে ৩ হাজার টাকা দাবি করে। হতদরিদ্র পিতা দাবিকৃত টাকা দিতে না পারায় এটি হয় তার কাল নিভে যায় জীবন প্রদীপ।
তিনি আরও বলেন, ওই রাতেই তাকে ঘরে আটকে রেখে পরিবারের লোকজন বেপরোয়া মারপিট করলে সে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। এরপর বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে তার মুখে বিষ ঢেলে দেয়া হয় এবং সে বিষপানে আত্মহত্যা করেছে বলে ওই রাতেই আছিয়ার পিতা মাতাকে জানানো হয়।
এ ব্যাপারে বারো ভূঁইয়া ওয়ার্ড এলাকার ইউপি সদস্য মোঃ আবু দাউদ বলেন, তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের জের ধরে আছিয়া দীর্ঘদিন বাবার বাড়ি অবস্থান করে। সম্প্রতি এলাকার ৮/১০ জনকে সাথে নিয়ে তার পিত্রালয়ে গিয়ে মিমাংসা করে শ্বশুর বাড়ি নিয়ে আসি। মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানিনা তবে তার মাথায় একটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে শুনেছি।
এ প্রসঙ্গে এসআই হারুনুর রশিদ বলেন, এটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বলে মৃতের পরিবার দাবি করেন। তবে প্রকৃত কারণ উদঘাটনের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টি আই