খুলনার ডুমুরিয়ায় সরকারী ৩টি খাস খালের উপর বাঁধ দিয়ে জলবদ্ধতা সৃষ্টির অভিযোগ পাওয়া গেছে। সময় মত পানি সরবরাহ করতে না পারায় কৃষকদের ধান ও মাছ চাষে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। সঠিক সময়ের মধ্যে পানি নিষ্কাশন করতে না পারলে এবার ইরি বোরো মৌসুমে ধান চাষ অনিশ্চিত হয়ে পড়েবে। নিরুপায় হয়ে খাস খালের অবৈধ দখল উচ্ছেদ ও ইরি বোরো মৌসুমে পানি নিষ্কাশনের জন্য এলাকায় কৃষকরা গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে।
প্রাপ্ত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, গ্রামের পানি নিষ্কাশন ও ফসলাদি আসা নেওয়া করার জন্য অতি প্রয়োজনীয় আটলিয়া ইউনিয়নের বয়ারসিং মৌজার নারকেল তলা খাল, টাটিমারী খাল ও পিপড়েমারী খাল,যা ১২ জন ব্যক্তি ১৬ টি বন্দোবস্তের মাধ্যমে অবৈধভাবে দখল করে আছে।
এরা হল বয়ারসিং গ্রামের মৃত অশ্বিনী মন্ডলের ছেলে নরেশ মন্ডল, মৃত রুক্কিনী মন্ডলের ছেলে বিশ্বজিৎ মন্ডল, মৃত গৌরপদ মন্ডলের ছেলে কার্তিক চন্দ্র মন্ডল, মৃত শিবরাম মন্ডলের ছেলে গুরুপদ মন্ডল, মৃত অতুল মন্ডলের ছেলে শ্যামল মন্ডল, মৃত অজিত মন্ডলের ছেলে স্বপন মন্ডল, মৃত সতীশ মন্ডলের ছেলে চন্ডিচরন মন্ডল, মৃত সুধীর মন্ডলের ছেলে বিধান মন্ডল, মৃত অজিত হালদারের ছেলে নব কুমার হালদার, মৃত সুধীর হালদারের ছেলে কৃষ্ণপদ হালদার, মৃত সুধান্য মন্ডলের ছেলে কর্ণধর মন্ডল ও মৃত রাখাল মন্ডলের ছেলে বিজন মন্ডল।
উল্লেখিত ব্যক্তিদের জমিজমা থাকা সত্ত্বেও বিভিন্ন ছল চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে সরকারি খাস খাল নিজেদের নামে বন্দোবস্ত নেয়। এরপর খাল গুলোর উপর একাধিক স্থানে তৈরি করে নেট দিয়ে মাছ চাষ করছে।
রেকর্ড ভুক্ত জমির মালিকগণ জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য এবং খালের বন্দোবস্ত বাতিলের দাবিতে খুলনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করেন। জেলা প্রশাসক বিষয়টি সরজমিনে তদন্ত করে দেখেন যে, বিবাদীগণের কার্যকলাপ সরকারি শর্তের পরিপন্থী ও গরীব অসহায়দের সাথে প্রতারণা করে নিজেদের নামে বন্দোবস্ত নিয়েছে। একারণে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উক্ত বন্দোবস্তকৃত জমির দলিল বাতিল করে।
এরপর বিবাদীগন বিভাগীয় কমিশনার ও ভূমি আপিল বোর্ড (ঢাকা) খাস জমি পূর্ণবহালেন দাবিতে আপিল করেন। সেখানেও তাদের বন্দোবস্ত বাতিল করা হয়। কিন্তু তারপরও বিবাদীগন স্থানীয় প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় উক্ত খাল তিনটির উপর বাঁধ দিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি ও মাছ চাষ করছে। এতে সময়মত পানি সরবরাহ করতে না পারায় শতশত কৃষক মৎস্য ঘের থেকে পানি নিষ্কাশন করে মাছ ধরাসহ ইরি বোরো মৌসুমে ধান রোপন করতে পারছে না।
এব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ আসিফ রহমান বলেন, কৃষকদের গণস্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। কৃষকেরা যাতে খাল দিয়ে পানি নিষ্কাশন করতে পারে সেজন্য অল্পদিনের মধ্যে খাল তিনটি উন্মুক্ত করা হবে।
খুলনা গেজেট/ এসজেড