খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার নির্মাণাধীন রাস্তার উপরে হাটু পানি জমে গেছে। জোয়ারের সময় ওই রাস্তায় পানির উচ্চতা আরও বৃদ্ধি পায়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে ৫টি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ এবং দুটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কয়েক’শ শিক্ষার্থী।
ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল বয়ারসিং পশ্চিম পাড়া, আধাঁরমানিক, বৈঠাহারা, খলশিবুনিয়া এবং কাঠবুনিয়া গ্রামে কয়েক হাজার লোক বসবাস করে। রাস্তাটির শেষ প্রান্তে রয়েছে একেবিকে মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়। উক্ত বিদ্যালয়ের কয়েক’শ শিক্ষার্থী এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করে।
কাঁঠালতলা-মাগুরখালী সড়ক থেকে দক্ষিণ দিকের এই রাস্তাটিতে ইতোপূর্বে ১ কিলোমিটার অংশে কার্পেটিং করা হলেও তার অগ্রভাগে আরও ১ কিলোমিটার রাস্তা কাঁচা ও নিচু থাকায় লোকজনের চলাচলে দারুন ভোগান্তি পোহাতে হয়। অবশেষে বিগত অর্থবছরে টেন্ডারের মাধ্যমে জয় মা কনস্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তা নির্মাণ কাজ শুরু করে।
এলাকাটি নিচু হওয়ার কারণে তখন প্রায় তিন ফুট উচুঁ করে রাস্তা নির্মাণ করা হবে মর্মে উচ্চতা চিহ্নিত করা হয়। সর্বশেষ কার্পেটিং করার জন্যে রাস্তায় বালু ভরাট করে দুই পার্শ্বে ইটের হেজিং দেওয়া হয়েছে। কিন্তু উচ্চতার যে সীমানা দেওয়া ছিল তা থেকে দেড় ফুট নিচুতে কার্পেটিং এর প্রস্তুতি নিচ্ছে ঠিকাদার। এ ব্যাপারে এলাকাবাসী ঠিকাদারের নিকট জানতে চাইলে তিনি বলেছেন, ওয়ার্ক অর্ডার অনুযায়ী বালুর স্তরসহ যাবতীয় সবকিছু ঠিক আছে এখন আর উচু করা সম্ভব নয়।
সোমবার সরেজমিনে নির্মাণাধীন রাস্তাটিতে গিয়ে দেখা যায় একেবিকে সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী হাটুপানি ভেঙ্গে হেটে যাচ্ছে। এ সময় কথা হয় ওই এলাকার মনোরঞ্জ মন্ডল, সরোজ মন্ডল, বিকাশ মন্ডল, অমরনাথ তরফদার, সুভাষ মন্ডলসহ বেশ কয়েক জনের সাথে। তারা বলেন, এখন নদীতে ভাটা চলছে তাই এই অবস্থা জোয়ার শুরু হলে পানি আরও উপরে উঠবে। এ অবস্থায় রাস্তায় পিচ দেয়া হলে কোন লাভ হবে না, ২ সপ্তাহের মধ্যে যে লাউ সেই কদুর মত অবস্থা হবে। রাস্তার মাপের সময় আমরা ঠিকাদারকে রাস্তা করার কথা বললে তিনি যে মাপ দিয়েছিলেন সে মোতাবেক রাস্তা হলে পানি উঠত না, কিন্তু এখন তিনি কারও কথা শুনছেন না। ঠিকাদার বলেছেন, রাস্তার বালুর স্তরসহ যাবতীয় সবকিছু ঠিক আছে এখন আর রাস্তা উচু করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়।
এ ব্যাপারে ডুমুরিয়া উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, এলাকাবাসীর নিকট থেকে শোনার পরে আমি সোমবার একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলীকে রাস্তাটি দেখতে পাঠিয়েছিলাম, অভিযোগটি সত্য বলে জেনেছি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করব।
জয় মা কনষ্ট্রাকশনের স্বত্তাধিকারী উত্তম বলেন, ইঞ্জিনিয়ার স্যার বিষয়টি আমাকে বলেছেন, স্যারকে সাথে নিয়ে আমি ২/১ দিনের মধ্যে কাজের সাইটে যাব। যতটা উচু করলে রাস্তা পানির স্তরের উপরে উঠে ততটা উচু করেই রাস্তা নির্মাণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/এসজেড