খুলনা যশোর মহাসড়ক হতে কেবল শিল্প লিমিটেড সড়ক বরাবর ৬৫০ মিটার পূর্বে কেডিএ শিল্প এলাকায় অবস্থিত খুলনা টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। স্বাধীনতার পূর্বে ১৯৬৮ সালে ১৬ দশমিক ৩ একর জায়গার উপর এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি স্থাপিত হলেও স্বাধীনতার পর এর কার্যক্রম শুরু হয়। অপটিক্যাল ফাইবার, সাবমেরিন ক্যাবল, টেলিফোন অপারেটিংসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মকর্তা কর্মচারীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হতো।
সর্বশেষ ২০১৮ সালে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে দুইটি নিয়মিত ব্যাচে ৪০ জন করে ৮০ জনকে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয় বলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মোঃ আবু জাফর খুলনা গেজেটকে জানান। গত চার বছরে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে আর কোনো প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়নি। সর্বসাকুল্যে ৬ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়ে নিভু নিভু করে জ্বলছে বিশালাকারের এই প্রতিষ্ঠানটি।
এদিকে মৃতপ্রায় প্রতিষ্ঠানটিকে জাগিয়ে তোলার লক্ষ্য বিটিসিএল প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরে ‘খুলনা আইটি ভিলেজ’ স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ২০১১ সালের ২১ ডিসেম্বর তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপি ‘খুলনা আইটি ভিলেজ’ এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। জমি সংক্রান্ত জটিলতায় এখানে আর আইটি ভিলেজ হয়নি। পরবর্তীতে নগরীর দাদা ম্যাচের বিপরীতে আইটি ভিলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভেতরে পুরাতন ভিত্তিপ্রস্তরসহ ১৬ একর জায়গা এখনও ফাঁকা পড়ে রয়েছে।
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রধান ফটকটি বন্ধ। ফটকটির মত বাউন্ডারি প্রাচীরগুলোও জরাজীর্ণ অবস্থা। পকেট গেট দিয়ে ভীতরে প্রবেশ করেই বা দিকে চোখে পড়লো বিশাল আকারের প্রশাসনিক ভবন। ভীতরে ঘুঁটঘুঁটে অন্ধকার। সুনসান নীরবতা। ভবনের ছাদের কোথাও প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। মেঝেতে কোথাও কোথাও পানি জমে আছে। ভবনের একটি কক্ষে দু’জনের দেখা পেলাম। নাম পদবী জিজ্ঞেস করে জানা গেল এক জনের নাম ফয়েজ আহন্মেদ, তিনি অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। অন্যজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মোঃ আবু জাফর। তিনি এ প্রতিবেদককে জানান, গত ২৮ আগস্ট ৯ জন পরিচালক, বিটিসিএল’র এমডি, সচিব এসে এখানে মিটিং করেছেন। উনারা হাই অফিশিয়াল কি মিটিং করেছেন এ ব্যাপারে আমরা কিছু জানি না।
বিশালাকার এ প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ক্যাম্পাসের ভীতর অবস্থিত বৃহদাকার প্রশাসনিক ভবন, হোস্টেল, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের থাকার আবাসিক ভবনগুলো অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিষ্ঠানটিও রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়।
প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে কর্তব্যরত ফয়জ আহন্মেদ এবং মোঃ আবু জাফর প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।
কালের বিবর্তনে মোবাইলের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় টেলিফোনের দুর্দিন শুরু হয়। ল্যান্ডফোনের ব্যবহার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেতে থাকে। ফলশ্রুতিতে টেলিযোগাযোগ প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের প্রয়োজনীয়তাও সংকুচিত হতে থাকে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
https://youtu.be/dFJTgPs6UU0
খুলনা গেজেট/ টি আই