যশোর জেনারেল হাসপাতালের পাঁচ কোটি টাকার এমএসআরের টেন্ডার না পাওয়ায় তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেছেন বিএনপি নেতা শরফুদ্দৌলা ছোটলু। এ সময় কর্মকর্তা কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে তত্ত্বাবধায়কের কক্ষে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেন তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ।
পরে এ ঘটনাটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেন তত্ত্বাবধায়ক।
হাসপাতালে প্রশাসনিক দপ্তরের কর্মরতরা জানান, গত ২১ এবং ২৮ অক্টোবর যশোর জেনারেল হাসপাতালের ‘এমএসআর’ পণ্য ক্রয় বিষয়ক (পাঁচ কোটি টাকা) টেন্ডার ড্রপিং হয়। ওই টেন্ডারে যশোর জেলাসহ আশ-পাশের জেলার বিভিন্ন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহণ করেন। এতে যশোর জেলা বিএনপির সদস্য শরফুদ্দৌলা ছোটলু টেন্ডার দাখিল করেছিলেন। কিন্তু টেন্ডারে প্যারাগন হারমাইন ও জাজ কর্পোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সর্বনিম্ন রেটে এমএসআর পণ্যের টেন্ডার পায়। পরে এ টেন্ডার ঢাকায় অনুমোদনের জন্য পাঠিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এরপর টেন্ডার না পাওয়ার বিষয়টি জানতে পারেন আলোচিত বিএনপি নেতা ও সাবেকমন্ত্রী তরিকুল ইসলামের শ্যালক শরফুদ্দৌলা ছোটলু। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সহযোগী হাবিবুল্লাহসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদের রুমে গিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। এক পর্যায়ে তারা তত্ত্বাবধায়কের গায়ে ধাক্কা দিয়ে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। পরে জোরপূর্বক শরফুদ্দৌলা ছোটলু তত্ত্বাবধায়ককে হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য বলেন এবং শার্টের কলার ধরে অপমান করেন। এ সময় তার চিৎকারে হাসপাতালে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তত্ত্বাবধায়কের রুমে প্রবেশ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় তত্ত্বাবধায়ককে হুমকি দিয়ে রুম ত্যাগ করেন ছোটলু। বিষয়টি নিয়ে হাসপাতাল চত্বরে অস্থিরতা বিরাজ করছে। এ ঘটনা তত্ত্ববধায়ক জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম ও সমন্বয়কদের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানান।
এদিকে, হাসপাতালের প্রশাসনিক বিভাগের কর্মচারী ইসরাফিল হোসেন জানিয়েছেন, টেন্ডার দাখিলের কোন তথ্য এখন দেয়া যাবে না। যারা টেন্ডার পেয়েছে তাদের কাগজপত্র ঢাকায় অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। অনুমোদন হয়ে আসলে বিস্তারিত জানানো যাবে।
বিষয়টি নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার হারুন অর রশিদ বলেছেন, বর্তমানে টেন্ডার অনলাইনে গ্রহণ ও দাখিল করা যায়। তারপরও টেন্ডার না পেয়ে আমাকে লাঞ্চিত করেছেন তারা। যা অনাকাঙ্খিত। বিষয়টি জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে। তাদের নির্দেশনা পেলে পরবর্তীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি