খুলনা, বাংলাদেশ | ২৩ আশ্বিন, ১৪৩১ | ৮ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২১৮
  বিএনপি কর্মী খুনের মামলায় সাবের হোসেন ৫ দিনের রিমান্ডে
  সামিট গ্রুপের আজিজসহ পরিবারের ১১ সদস্যের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দ

জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন গ্রাম

নিজস্ব প্রতিবেদক

আইলা, মহাসেন, বুলবুল, ফণী, আম্পানের মতো ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতচিহ্ন এখনো রয়ে গেছে। এসব ঝড়ের আঘাতে দুর্বল বেড়িবাঁধগুলো অপেক্ষাকৃত কম শক্তির জলোচ্ছ্বাসও সইতে পারছে না। ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়েছে খুলনার উপকূল কয়রার বিভিন্ন গ্রামের ঘরবাড়ি, মৎস্য ঘের, ফসলি জমি।

বেড়িবাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ায় পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। প্রতিদিন জোয়ারে পানি উঠে যাওয়ায় বানভাসিদের সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে। অনেকেই ভাটা আসলে ঘরে ফেরে আর জোয়ারে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেরিয়ে পড়েন।

জানা যায়, ভাটার সময়ে লোকালয়ের পানি কমে যায়। আবার জোয়ার আসলে পানি প্রবেশ করে। এভাবেই চলছে কয়রার উপকূলের মানুষের জীবন। নোনাপানিতে থেকে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের। শুক্রবার জুমার নামাজ পর্যন্ত পড়তে হয়েছে হাঁটুপানিতে। গ্রামের পর গ্রাম পানিতে প্লাবিত হয়েছে। বাজার-ঘাট খাওয়ার ব্যবস্থার কোনো ঠিক নেই। স্কুল-মাদরাসা, মসজিদ, বসতঘরে পানি প্রবেশ করেছে।

কয়রার মহারাজপুর ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. বায়জিদ হোসেন বলেন, দশহালিয়া বেঁড়িবাধ ভেঙে মহারাজপুরে প্রায় সব এলাকা প্লাবিত হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবার দুপুরের জোয়ারের পানি প্রবেশ করে নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এ দুই দিনে রাস্তায়ও পানি উঠেছে। ফলে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এখানকার বসবাসকারীদের।

কয়রার বাসিন্দা মো. কবির বলেন, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়ার ২টি ক্লোজার দিয়ে নদীর জোয়ারের পানি প্রবেশ করায় বিভিন্ন সড়কে নতুন করে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। শুক্রবার ও শনিবারের জোয়ারের পানিতে আবারও প্লাবিত হয়েছে অনেক গ্রাম। পানির চাপে গ্র্যাজুয়েট গ্রাম ও বাগালি ইউনিয়নের কিছু অংশ নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। ফলে হাজার হাজার বিঘার মৎস্য ঘের, ফসলি জমি, বসতঘর, মসজিদ, দোকানঘর ও একটি খেয়াঘাট হুমকির মুখে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রেও আশ্রয় নিয়েছেন ঘরহারা ও প্লাবিত মানুষ। তবে পাঁচটি স্থানে স্বেচ্ছাশ্রমে বেড়িবাঁধ মেরামত করায় এখন সেসব স্থানে জোয়ারের পানি প্রবেশ বন্ধ রয়েছে। শুক্রবার (২৮ মে) ভোর থেকে দুপুরের জোয়ারের আগ পর্যন্ত দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের আংটিহারা বেড়িবাঁধ, মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের তেঁতুল তলারচর, উত্তর বেদকাশী ইউনিয়নের পদ্মপুকুর, মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠের কোনার ২টি বেড়িবাঁধ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেন ভুক্তভোগীরা।

মহারাজপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিএম আব্দুল্লাহ আল মামুন বাবলু বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জোয়ারের কারণে ঢেউয়ের আঘাতে ২৬ মে বিভিন্ন স্থানে বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। পানি প্রবেশ করে লোকালয়ে। সেই ভাঙা বাঁধ দিয়ে জোয়ারের সময় পানি প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা।

কয়রা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, শুক্রবার কয়েকটি বেড়িবাঁধ মেরামত করা হয়েছে। তবে মহারাজপুরের ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে পানি প্রবেশ করে শুক্রবার রাস্তা ছাপিয়ে যায়। সেখান থেকে বাগালি ইউনিয়নের অন্তত আরও ১৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তবে যেসব স্থানে বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হয়েছে সেসব স্থানে পানি নেই। তবে এখনও প্রায় ৪০ গ্রাম প্লাবিত রয়েছে।

খুলনা গেজেট/ এস আই




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!