অনেক কষ্টে কেটেছে তিনটা মাস । সুন্দরবন বন্ধ থাকায় মাছ কাঁকড়া ধরতে পারেনি। আয়রোজগারও ছিল না, ঋণে জর্জরিত হয়ে গেছি। সুন্দরবন খুলে দিয়েছে। এখন অভাব অনটন কিছুটা হলেও কমবে। এভাবে বলছিলেন কয়রা উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোবরা গ্রামের বনজীবী ইউনুস।
বনজীবী খানজাহান আলী বলেন, সবার আগে পাস নিতে এসেছি। দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবন বন্ধ ছিল। অনুমতি নিয়ে আগে যেতে পারলে বেশি মাছ পাব এজন্য আগে এসেছি।
নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় দীর্ঘ তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ থাকার পর আজ বৃহস্পতিবার ১ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সুন্দরবনে প্রবেশের অনুমতি। সকাল ১০ টা থেকে বনবিভাগ থেকে মাছ ধরার অনুমতির ‘পাসপারমিট’ বিতরণ করলে আনন্দ প্রকাশ করেন জেলেরা। দীর্ঘ ৯২ দিন অলস সময় কাটানোর পর বিনা বাধায় মাছ ধরতে সুন্দরবনের পথে রওনা করেছে কয়রা উপজেলার সহস্রাধিক জেলে। মাছ ধরা যেন তাদের কাছে উৎসবে পরিণত হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ইতিমধ্যে নৌকা-ট্রলারের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। অভাব-অনটনে পড়ে থাকা বনজীবীরা কষ্ট ভুলে আবারো নতুন উদ্যমে রুজির সন্ধানে ফিরছেন সুন্দরবনে। টানা তিন মাস সুন্দরবনে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা থাকার পর আজ থেকে বনজীবী ও পর্যটকদের জন্যে উন্মুক্ত হয়েছে সুন্দরবন। এতে স্বস্তি ফিরেছে এ সমস্ত পেশায় যুক্ত থাকা সাধারণ মানুষের।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, কয়রা উপজেলার বানিয়াখালী,কাশিয়াবাদ ও কোবাদক স্টেশন সহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকার বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) রয়েছে। আজ কয়রার তিনটি স্টেশন থেকে ৭০০ পারমিটধারি নৌকা বনে প্রবেশ করেছে। আগামী সোমবারের মধ্যে পারমিটধারি বাকি নৌকাও বনে প্রবেশ করবেন।
কয়রা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো আমিনুল হক খুলনয় গেজেটকে জানান, কয়রায় নিবন্ধিত জেলে রয়েছে ১৩৫২৬জন।তবে সবাই বনজীবী জেলে নয়। এছাড়াও নতুন জেলেদের নিবন্ধন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। কয়রার সুন্দরবন থেকে আহরিত মৎস্য স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে রপ্তানি হয় দেশবিদেশেও।
কয়রা কাশিয়াবাদ স্টেশন কর্মকর্তা মোঃ আক্তারুজ্জামান খুলনা গেজেটেকে জানান, ৯২ দিন পর আবারও সুন্দরবনে মাছ ও কাঁকড়া ধরার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এতে করে আবার কর্ম চাঞ্চল্য ফিরে আসবে। জেলেদের সমস্যা দূর হবে। বৃহষ্পতিবার কয়রা উপজেলার তিনটি স্টেশন থেকে ৭০০ পারমিটধারি নৌকায় ১ হাজার ৪০০ জেলে সুন্দরবনে প্রবেশ করেছেন বলে তিনি ধারণা করছেন।
খুলনা গেজেট/ টি আই