জাপার প্রধান পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ আগামী ২৬ নভেম্বর কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ডাকায় দলের মধ্যে চিড় ধরেছে। এর তাপ-উত্তাপ দলের সর্বস্তরে ছড়িয়ে পড়েছে। খুলনা জেলা ও নগর শাখা স্পষ্টত দ্বিধা-বিভক্ত হয়ে পড়েছে। রওশনপন্থীরা কেন্দ্রীয় সম্মেলন সফল করতে খুলনা জেলা ও নগর সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি গঠনের পর জিএম কাদেরপন্থীরা নড়ে-চড়ে বসেছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ জেলা কমিটি গত শনিবার স্থানীয় কার্যালয়ে এক সভা আহবান করে। খুলনার সাংগঠনিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ এবং দলের চেয়ারম্যানের সমর্থনের পাল্লা মাপতে জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু এমপি আগামাী মাসে খুলনা আসছেন।
জাপার প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের মৃত্যুর পর খুলনার উপজেলা পর্যায়ে দল অনেকটা দূর্বল হয়ে পড়ে। ক্ষমতাসীনদের দাপটে এখানে সাংগঠনিক বিকাশ লাভ হয়নি। এরমধ্যে কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য সাঈদুর রহমান টেপা খুলনা সফর করে দলকে চাঙ্গা করার চেষ্টা করেন।
দলের পৃষ্ঠপোষক বেগম রওশন এরশাদ এক সপ্তাহের জন্য দেশে ফিরলে তার আমন্ত্রণে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর গফফার বিশ^াস ও অন্যান্যরা ঢাকায় যেয়ে সাক্ষাত করেন। তিনি খুলনার স্থানীয় নেতাদেরকে বিভক্তি দূর ও নিষ্ক্রিয়দের সক্রিয় করার পরামর্শ দেন। এরপর থেকে মোল্লা শওকত হোসেন বাবুল ও এ্যাড. এসএম মাসুদুর রহমান রওশনপন্থী হিসেবে পরিচিত পায়। তারা দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে খুলনা থেকে একটি বড় শোডাউন দেয়ার প্রক্রিয়ায় নেমেছে।
দলের জেলা শাখার সূত্র জানায়, ভাঙনের এ সুরের মধ্যে অবস্থান স্পষ্ট করতে গত শনিবার দলীয় কার্যালয়ে সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা অবধি রূপসা, তেরখাদা ও দিঘলিয়া উপজেলা শাখার নেতৃবৃন্দকে নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
সূত্র বলছে, রূপসা উপজেলা শাখার সভাপতি আব্দুল ওয়াদুদ মোড়ল, সাধারণ সম্পাদক মাহতাব উদ্দীন, তেরখাদা উপজেলা সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদব গোলাম রসূল, দিঘলিয়া শাখার সভাপতি এড. লুৎফর রহমান সভায় জিএম কাদের এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
জাতীয় কমিটির সদস্য মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর এ প্রতিবেদককে জানান, পাইকগাছা উপজেলা কমিটি গঠনতন্ত্র মোতাবেক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তিনি একই সাথে উপজেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। প্রসঙ্গক্রমে বলেন, দলের চেয়ারম্যানের প্রতি তার অকুন্ঠ সমর্থন রয়েছে। উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেছেন।
মহানগর কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এড. মাহতাব উদ্দীন বলেছেন, সকল থানা কমিটি ২৬ নভেম্বরের কাউন্সলকে অবৈধ বলে আখ্যা দিয়েছেন। জেলা শাখার অপর এক নেতা বলেন, স্থানীয় সংগঠকদের মধ্যে শাহ লায়েকুল্লা, আব্দুল্লাহ আল মামুন, শেখ সাদি, জাতীয় কমিটির সদস্য শফিকুল ইসলাম ঢালী, ইসমাইল খান টিপু, তৈয়বুর রহমান শাহিন, বটিয়াঘাটার উপজেলা সভাপতি শেখ মো: মোতয়ালি, কয়রা উপজেলা শাখার সভাপতি শেখ সদর উদ্দীন, প্রধান পৃষ্ঠাপোষকের ডাকা সম্মেলনকে অবৈধ বলে উল্লেখ করেছেন।
জেলা শাখার সভাপতি শফিকুল ইসলাম মধু এ প্রতিবেদককে জানান, আগামী মাসে মহানগর শাখার এবং জেলা শাখার পৃথক পৃথক কর্মীসভা অনুষ্ঠিত হবে। কর্মীসভায় জাপার মহাসচিব উপস্থিত থাকবেন। মূলত: সাংগঠনিক শক্তি ভীত জানতেই তার খুলনা সফর। কর্মীসভার দিনক্ষণ চূড়ান্ত হয়নি। প্রতিপক্ষকে জানান দেয়ার জন্য কর্মীসভাগুলোতে জিএম কাদেরের অনুসারীরা বড় ধরণের শো-ডাউন করতে পারবে বলে জেলা সভাপতি আশাবাদী।