খুলনার বাজারে দেখা মিলছে রুপালী ইলিশের। তবে চাহিদার তুলনায় মাছ কম ধরা পড়ায় দাম সাধারণ ক্রেতাদের নাগালের বাইরে।
চলতি মাসের প্রথম দিন থেকে ইলিশ শিকারের নিষেধাজ্ঞা শেষ হয়েছে। টানা দুই মাস নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার মধ্যরাতের পর থেকে ইলিশ শিকারে নেমেছে জেলেরা। তবে জলবায়ু পরিবর্তন ও পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের অভাবে নদীতে মাছের সংখ্যা তুলনামূলক অনেক কম। তাই জালে ইলিশ ধরা পড়ছে কম। যে কারণে মৌসুমের শুরুতে বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে।
দু’একদিন আগে থেকে নগরীর রূপসার মাছের আড়ত ও পাঁচ নাম্বার কাষ্টমস ঘাটের মাছের আড়তে আসতে শুরু করে ইলিশ। আড়তদাররা বলছেন চাহিদার তুলনায় পরিমাণ কম হওয়ায় দাম বেশি।
রূপসা মাছের আড়তের এক কর্মকর্তা জানান, গত কয়েকদিন থেকে ইলিশ আসতে শুরু করেছে। মিরাজুল ফিস, ইমান রহমান ফিস, বেঙ্গল ফিস সহ আড়তের প্রায় আট টি মাছ ঘরে ইলিশ আসছে। তবে পরিমাণে খুবই কম। এখনো আশানুরূপ ইলিশ আসা শুরু হয়নি, যাও আসছে তাও ছোট সাইজের।
রূপসা নতুন বাজারের মাছ ব্যবসায়ী আশরাফ আলি রূপসা আড়ত থেকে ইলিশ কিনেছেন। তিনি জানান, মাসের শুরু থেকেই ইলিশ বিক্রি করছেন। সাইজ ছোট হলেও দাম বেশি। জাটকা ছয় শো, মাঝারি আটশো আর বড় সাইজ এক হাজার টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন।
নগরীর থানার মোড়ের মাছ বিক্রেতা শামসুল হক। পাঁচ নাম্বার ঘাটের মাছের আড়ত থেকে চল্লিশ কেজি ইলিশ কিনেছেন। বিক্রি করছেন পাঁচশো থেকে সাতশো টাকা কেজি দরে। সকাল নয়টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত মাত্র তিন কেজি বিক্রি করেছেন। তিনি জানান, মৌসুম এখনো শুরু হয়নি। অল্প পরিমাণে ইলিশ আসছে কুয়াকাটা থেকে তাই দাম বেশি, সাইজও ছোটো। দাম বেশি হওয়ায় ক্রেতা ফিরে যাচ্ছে।
এদিকে ময়লাপোতা সন্ধ্যা বাজারের মাছ পট্টিতেও একই অবস্থা। দাম চড়া থাকায় বাজারের মাত্র দু’জন ইলিশ বিক্রি করছে।
সন্ধ্যা বাজারের শহিদুল ইসলাম রূপসা আড়ত থেকে ১২ কেজি ইলিশ এনেছেন৷ বিক্রি করছেন কেজি প্রতি ১৪ শো টাকা দরে। বলছিলেন, দাম বেশি তাই ক্রেতার চাহিদা কম। আড়তে মাছ কম আসছে তাই কিনতে হচ্ছে বেশি দামে।
নিষেধাজ্ঞার নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় তাজা ইলিশের সাথে বিক্রি হচ্ছে কোল্ডস্টোরের ইলিশও। গত বছরের ইলিশ এখন একটু কমদামেই বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। নতুন ইলিশের সাথে একই ঝুড়িতে বিক্রি হচ্ছে সেগুলো। সংরক্ষিত আটশো গ্রাম ওজনের ইলিশ অনেক জায়গায় বিক্রি হচ্ছে আটশো থেকে নয়শো টাকা কেজিতে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবু সাইদ খুলনা গেজেটকে জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে মাছের সিজন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর প্রভাবে মৌসুমের আগপিছ হচ্ছে। জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ার সাথে বৃষ্টি না হওয়াটাও একটা কারণ, পূর্নিমা-অমাবস্যার গোনের সাথে মাছের সম্পর্ক রয়েছে। তবে জুলাই-আগস্টে ইলিশের প্রাচুর্য বাড়বে বলে জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এনএম