খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ২০ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
খুবিতে পরিবেশের ওপর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন উদ্বোধন

জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে সরকার : ভূমিমন্ত্রী

গেজেট ডেস্ক

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপি বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা (ডেল্টা প্ল্যান ২১০০) প্রণয়ন করেছে সরকার। এই ডেল্টা প্ল্যানের লক্ষ্য হল- পানি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি করা এবং পরিবেশগত স্থায়িত্ব বজায় রাখা। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে সৃষ্ট ঝুঁকিগুলোকে দক্ষতার সাথে প্রশমিত করা ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং বেঙ্গল ডেল্টার জন্য নির্দিষ্ট অন্যান্য চ্যালেঞ্জগুলোর প্রতি স্থিতিস্থাপকতা বৃদ্ধি করাও রয়েছে এই পরিকল্পনার অন্তর্ভুক্ত। পরিকল্পনা মোতাবেক মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলার প্রস্তুতি নিয়েছে বাংলাদেশ সরকার।

আজ ০২ মার্চ (শনিবার) সকাল ৯টায় খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসু একাডেমিক ভবনের সাংবাদিক লিয়াকত আলী মিলনায়তনে এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স ডিসিপ্লিন আয়োজিত পরিবেশের ওপর দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য – ‘টাইম ফর ন্যাচার এন্ড ন্যাচারাল রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট’ (প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার জন্য এখনই সময়)।

মন্ত্রী আরও বলেন, জাতীয় পরিকল্পনা ও নীতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে পরিবেশ বিজ্ঞান বিষয়ে শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে অগ্রগামী ভূমিকা রাখছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্বের বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন দেশের পরিবেশগত বাস্তুতন্ত্র, জীবিকা এবং অর্থনীতির মেরুদণ্ড- আর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এ বনের নিকটতম গবেষণা বিশ্ববিদ্যালয়। সে হিসেবে সুন্দরবন নিয়ে গবেষণার ক্ষেত্রে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে সক্ষম হবে। এই সম্মেলন থেকে প্রাপ্ত সুপারিশমালা টেকসই স্থানীয় সমাধানগুলোর সাথে পরিবেশগত ও প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার প্রচেষ্টা এবং অনুশীলনকে উন্নত করবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

সম্মেলনে প্লেনারি স্পিকার হিসেবে ‘চ্যালেঞ্জেস এন্ড অপরচুনিটিস অব ন্যাচার বেইজড সল্যুশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক গবেষণা নিবন্ধের ওপর আলোচনা করেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত। তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন আগামী প্রজন্মের জন্য বড় সমস্যা। এজন্য এখন আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা অর্জন, ঝড়-ঝঞ্ঝা, লবণাক্ততা, খরা সহিষ্ণু ও অল্প সময়ে ফলনশীল ফসল উৎপাদন করা জরুরি। তিনি আরও বলেন, সুন্দরবন নিয়ে বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে পলিসি ও স্ট্র্যাটেজি রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের এখন টেকসই উন্নয়ন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন জরুরি।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন।

তিনি বলেন, আমাদের গ্রহ জলবায়ু পরিবর্তন থেকে জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি, বন উজাড় এবং প্রাকৃতিক সম্পদের অবক্ষয় পর্যন্ত অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি। আমাদের গ্রহ এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মঙ্গলের জন্য টেকসই সমাধান খুঁজতে আমাদের জরুরিভাবে এই সমস্যাগুলোর সমাধান করতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই সম্মেলনটি অর্থপূর্ণ আলোচনায় সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করবে, উদ্ভাবনী ধারণাগুলো শেয়ার এবং কার্যকর প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনার পথ প্রশস্ত করার জন্য কৌশলগুলোতে সহযোগিতা করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি বক্তৃতা করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা। প্যাট্রন হিসেবে বক্তৃতা করেন জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন প্রফেসর ড. আবুল কালাম আজাদ। স্বাগত বক্তৃতা করেন সম্মেলন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ও সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিন প্রধান প্রফেসর ড. আবদুল্লাহ হারুন চৌধুরী। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংশ্লিষ্ট ডিসিপ্লিনের প্রফেসর ড. মো. মুজিবর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিসিপ্লিনের সহকারী অধ্যাপক রাবেয়া সুলতানা।

এর আগে জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মেলন শুরু হয়। পরে ডিসিপ্লিনের থিম সং পরিবেশন করা হয়। এরপর অতিথিবৃন্দ এবং বিদেশি ডেলিগেটদের ফুল ও উত্তরীয় দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। সম্মেলনে বাংলাদেশ, ভারত, ভূটান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরাত, পোল্যান্ড, ইতালি এবং জার্মানি থেকে থেকে ২৪৫ জন দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞ, বিজ্ঞানী সশরীরে এবং ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন। সম্মেলনে ১২৮টি ওরাল প্রেজেন্টেশন, ৪৮টি পোস্টার প্রেজেন্টেশন, ৬টি কি-নোট পেপারসহ ১৮৩টি গবেষণা নিবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।

এর আগে সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এমপিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন। পরে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম খচিত উপহার দেওয়া হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস উপস্থিত ছিলেন।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!