ভৈরব, আত্রাই, আঠারোবাকী ও মজুদখালী চার নদীবেষ্টিত খুলনার দিঘলিয়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন। ইউনিয়ন তিনটি হলো দিঘলিয়া সদর, সেনহাটী এবং বারাকপুর। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে তিন ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি স্থান এবং গুরুত্বপূর্ন রাস্তা অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়ে ভাঙ্গন দেখা দেয়।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রতি বছর এ সকল ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় জরুরী ভিত্তিতে প্রতিরক্ষাস্বরুপ অস্থায়ীভাবে বালির বস্তা, জিও ব্যাগ ডাম্বিং করে সাময়িক ভাঙ্গন রোধ করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করে থাকে। এ বাবদ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়কে প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার অর্থ বরাদ্দ দিতে হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতে স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধের ব্যবস্থা গ্রহণ না করে এ ধরণের কাজে প্রতি বছর সরকারের বিপুল পরিমান অর্থের অপচয় হচ্ছে। এছাড়া জরুরী ভিত্তিতে এ সকল কাজগুলো বিনা টেন্ডারে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে করা হয়। যার কারণে কাজগুলো সঠিকভাবে হচ্ছে কি/না সেটা নিয়েও প্রশ্ন থেকে যায়।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে দিঘলিয়া উপজেলার ভাঙ্গন কবলিত ২ টি পয়েন্টে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকার বালি ভর্তি বস্তা এবং জিও ব্যাগ ডাম্বিং করা হয়েছে। চলতি অর্থবছর মোমিনপুর, আমবাড়িয়া, চন্দনীমহল, হাজীগ্রাম, দেয়াড়া ৫ নং ওয়ার্ডে লিটন চৌধূরীর গোডাউনের সামনে এবং নগরঘাট খেয়াঘাট সংলগ্ন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পাট গোডাউনের সামনে ভাঙ্গন কবলিত নদীর পাড় জরুরী ভিত্তিতে প্রায় সোয়া কোটি টাকার কাজ চলমান আছে। নগরঘাট খেয়াটঘাট সংলগ্ন বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিব পাট গোডাউন পয়েন্টেই ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ৫ হাজার ৩৪১ বালু ভর্তি জিও (সিনটেথিক) ব্যাগের ডাম্বিং কাজ চলমান রয়েছে।
খুলনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে’র উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ সাইদুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘দিঘলিয়া উপজেলার মোমিনপুরের আতাই নদীর অতি ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ৩০০ মিটার এবং বটিয়াঘাটার কচুবুনিয়ার অতি ভাঙ্গন কবলিত এলাকার ২৫২ মিটার স্থায়ীভাবে অত্যাধুনিকভাবে (ডিআরএমইপি) বাঁধ নির্মাণের জন্য জায়কার কাছে ১’শ ১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে জায়কার প্রতিনিধিদল মোমিনপুরে আত্রাই নদীর ভাঙ্গন কবিলত এলাকা সরজমিনে পরিদর্শ করে ইতিবাচক মনোভব পোষণ করেছেন।’
তিনি জানান, খুলনা শহরের কাষ্টমঘাট, দৌলতপুর খেয়াটঘাট সংলগ্ন ভাঙ্গন কবলিত এলাকাসহ অন্যান্য ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণের জন্য ২০১৮ সালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে একটা প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটির নাম ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচাল এন্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রজেক্ট (সি এস এ ডব্লিউ এম পি)। প্রজেক্টের ব্যয় ধরা হয়েছে ১৮ ‘শ কোটি টাকা। পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় অনুমোদন দিলে প্রস্তাবনাগুলো পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ে যাবে। এরপর পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় থেকে অনুমোদনের পর একনেকে পাস হবে।
তিনি আরো বলেন, প্রজেক্ট গুলো পাস হলে খুলনা শহর এবং পার্শ্ববর্তী ভাঙ্গন কবলিত এলাকার স্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মানের ফলে নদী ভাঙ্গনের স্থায়ী সমাধান হবে।
খুলনা গেজেট/ এস আই