প্ল্যাজিয়ারিজম বা চৌর্যবৃত্তি সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সহযোগী অধ্যাপকের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ড। একই সঙ্গে করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে অতিদ্রুত সশরীরে বা অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সম্মেলন কক্ষে যবিপ্রবির সর্বোচ্চ নীতি-নির্ধারণী ফোরাম রিজেন্ট বোর্ডের ৭০তম সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন যবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ডক্টর আনোয়ার হোসেন। সভার শুরুতে রীতি অনুযায়ী যবিপ্রবির উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বশেষ পরিস্থিতি তুলে ধরে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন। বৈশ্বিক মহামারির কারণে সদস্যদের অনেকে জুম অ্যাপসের মাধ্যমে ভার্চ্যুয়ালি এবং কয়েকজন সশরীরে রিজেন্ট বোর্ডের সভায় উপস্থিত ছিলেন।
সভায় জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপকের একটি লেখা যবিপ্রবির ইলেক্ট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আমজাদ হোসেন নিজের নামে বাংলাদেশের দুটি পত্রিকায় প্রকাশ করে প্ল্যাজিয়ারিজম করেছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বরাবর তিনি লিখিত অভিযোগ করেন। ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে সভায় যবিপ্রবির রিজেন্ট বোর্ডের সদস্য ও সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. সলিমুল্লাহকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে এ ঘটনার সত্যতা যাচাই এবং এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো মর্যাদা ক্ষুণœ হয়েছে কি না সেটি আমলে নিয়ে আগামী ২২ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেয়ার কথা বলা হয়।
এছাড়া, রিজেন্ট বোর্ডের সভায় বৈশ্বিক করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে অতিদ্রুত সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। সভায় জানানো হয়, সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক অর্ডিন্যান্স রয়েছে। অনলাইনে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়ে কোনো অর্ডিন্যান্স না থাকায় যবিপ্রবির একাডেমিক কাউন্সিল একটি নীতিমালা রিজেন্ট বোর্ডে পেশ করে। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেটিও পাশ করা হয়। করোনা পরিস্থিতির সর্বশেষ হার বিশ্লেষণ করে অতিদ্রুত সশরীরে বা অনলাইনে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি জানিয়ে দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
যবিপ্রবির উপাচার্য ও রিজেন্ট বোর্ডের সভাপতি অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সভায় উপস্থিত ছিলেন যবিপ্রবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) এ কে এম আফতাব হোসেন প্রামানিক, যুগ্ম সচিব সৈয়দা নওয়ারা জাহান, সাভারের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজির মহাপরিচালক ড. সলিমুল্লাহ, সাভারের পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ও প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এস এম আসাদুজ্জামান, যশোরের আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ড. কাওছার উদ্দিন আহম্মদ, বাংলাদেশ অ্যাক্রেডিটেশন কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক ড. গোলাম শাহি আলম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবির, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হসপিটাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিউটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. এম. এ. রশীদ, যশোর শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোল্লা আমির হোসেন, যবিপ্রবির অধ্যাপক ড. আনিছুর রহমান, অধ্যাপক ড. বিপ্লব কুমার বিশ্বাস, অধ্যাপক ড. ইকবাল কবীর জাহিদ, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সমিতির সভাপতি শেখ কবির হোসেন, সরকারি এম এম কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আব্দুল মজিদ, সরকারি সিটি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশরাফ-উদ-দৌলা, রিজেন্ট বোর্ডের সচিব ও যবিপ্রবির রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী আহসান হাবীব প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/কেএম