যশোরের চৌগাছা বাজারের কয়েকটি মিষ্টি তৈরীর হোটেলে এক প্রতারক অভিনব কায়দায় প্রতারণার চেষ্টা করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। মুহুর্তের মধ্যে ব্যবসায়ীদের খোয়া যাচ্ছিল প্রায় ৩ লাখ টাকা। তবে পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপে রক্ষা পেয়েছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা।
মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) দুপুর ১২ টা ২৬ মিনিটে চৌগাছা পৌরসভার লাইসেন্স পরির্দশক তফিজুর রহমানের ফোনে একটি নাম্বার থেকে কল আসে। রিসির্ভ করা মাত্রই বিপরীত দিক বলা হয় আমি চৌগাছা উপজেলার এসিল্যান্ড স্যার বলছি। আপনার বাজারে যত মিষ্টির দোকান আছে তাদের তালিকা ও মোবাইল নাম্বার আমাকে দিন। লাইসেন্স পরিদর্শক বাজারের বাদল ঘোষ ডেয়ারী, আলম মিষ্টান্ন ভান্ডার, সাতক্ষিরা ঘোষ ডেয়ারী, আসল ঘোষ ডেয়ারী, অনন্য মিষ্টান্ন ভান্ডারসহ ৫/৬টি দোকানের নাম, ব্যবসায়ীর নাম ও মোবাইল নাম্বার দেয়া মাত্রই আর লাগবে না বলে ফোন কেটে দেন।
এর পরপরই ওই প্রতারক মিষ্টি ব্যবসায়ীদের ফোনে কল দিয়ে বলে, আমি এসিল্যান্ড স্যার বলছি, কিছুক্ষণের মধ্যে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হবে। আপনাদের তালিকা আমার কাছে। মোবাইল কোর্ট হলেই কিন্তু ৪/৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে। তাই জরিমানার হাত থেকে বাঁচতে আপনারা ৫০ হাজার টাকা আমার মোবাইলে বিকাশ করুন আমি তালিকা থেকে নাম বাদ দিচ্ছি। অধিকাংশ ব্যবসায়ী টাকা দিতে প্রস্তত।
এ সময় আসল ঘোষ ডেয়ারীর মালিক পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেলকে বিষয়টি অবহিত করেন। মেয়র সঙ্গে সঙ্গে সকল ব্যবসায়ীকে টাকা দিতে নিষেধ করেন এবং ঘটনাটি তিনি নিজে দেখছেন বলে জানান।
পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শক তফিজুর রহমান বলেন, ‘যেহেতু এসিল্যান্ড স্যার পরিচয় দিয়েছেন তাই আমি কোন কিছু না ভেবে দোকানের নাম ও মোবাইল নাম্বার দিয়েছি। পরে জানতে পারি সে এসিল্যান্ড না একজন প্রতারক।’
বাজারের আসল ঘোষ ডেয়ারীর মালিক সমর কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘মিষ্টির হোটেলে কমবেশি সমস্যা থাকেই। এসিল্যান্ড স্যার ফোন করে বলছে ৪/৫ লাখ টাকা জরিমানা হবে, সেখানে ৫০ হাজার দিলে রক্ষা পাওয়া যাচ্ছে, তাই উনার (প্রতারক) সাথে অনেক অনুনয় বিনয় করে আমি ৩০ হাজার টাকা চুক্তি করি। টাকা নিয়ে বিকাশে যাওয়ার আগে মনে হল মেয়র মহোদয়কে জানাই। মেয়রকে বলা মাত্রই বুঝতে পারলাম আমরা প্রতারকের খপ্পরে পড়েছি।’
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) কাফি বিন কবির জানান, ‘ব্যবসায়ীরা একজনের কথামত কেন বিকাশ করতে যাচ্ছিল ? আমি তো চৌগাছাতেই আছি, তাদের কাছে যখন আমার পরিচয় দেয়া হয়েছে, তখন বিষয়টি সত্য না মিথ্যা তা জানতে উনারা উপজেলাতে আসতো। ঘটনাটি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মহোদয়সহ আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যদের অবগত করা হয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যেই এসিল্যান্ড পরিচয়দানকারী প্রতারক আটক হবে।’
পৌর মেয়র নূর উদ্দিন আল মামুন হিমেল বলেন,‘ ঘটনাটি জানার পর আমি বুঝতে পারলাম ব্যবসায়ীরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন। তাই মুহুর্তে তাদের টাকা দিতে নিষেধ করি পাশাপাশি ঘটনাটি দ্রুতই এসিল্যান্ডসহ সংশ্লিষ্টদের অবহিত করি।’
খুলনা গেজেট/ এস আই