যশোরের চৌগাছায় অন্যের জমি থেকে জোর করে প্রথমে ড্রেজার মেশিন দিয়ে এবং পরে লেবারের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করার অভিযোগে ঘটনাস্থলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ভুক্তভোগী। এর আগে একই অভিযোগে উপজেলা ভূমি অফিসে অভিযোগ করেন তিনি। এরপর সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই স্থান পরিদর্শন করে বালু উত্তোলন করতে নিষেধ করেন। এরপর কিছুদিন বালু উত্তোলন বন্ধ রেখে আবারো সম্প্রতি বালু উত্তোলন শুরু করেছেন অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় উপজেলার জগদীশপুর ইউনিয়নের বিশ্বনাথপুরে চৌগাছা (মুক্তদহ-জগদীশপুর) সড়কের বিশ্বনাথপুরে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন স্থানীয় ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি হায়দার আলী। এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ক্ষতিগ্রস্থ চাষী সাখাওয়াত হোসেন, তার বৃদ্ধ মা, স্ত্রী, ভাই, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার ডা. নূর হোসেনসহ ভুক্তভোগী চাষীর প্রতিবেশিরা।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয় সাখাওয়াত হোসেন ও তার তিন ভাই তাদের পিতা নজরুল ইসলামের জমিতে পাকা বাড়ি তৈরি করে বসবাস করছেন। গত এক বছর আগে জগদীশপুর মৌজায় তার পিতার নামের জমি একই গ্রামের মৃত শহিদুল ইসলামের ছেলে আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জবর দখল করে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করা শুরু করেন। এমতাস্থায় স্থানীয় গণ্যমান্য ও জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে বিচার শালিসে মিমাংশার চেষ্টা করি। সেখানে ব্যর্থ হয়ে থানা পুলিশ, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) বরাবর আবেদন করলে এসিল্যান্ড ঘটনাস্থলে যেয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন। এতে কিছু দিন বালু উত্তোলন বন্ধ করে সম্প্রতি আবারো বালু উত্তোলন শুরু করেছে। এতে তার বসত বাড়ি ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
আরো বলা হয় আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু যে জমিতে পুকুর খননের নামে বালু উত্তোলন করছে সেটি ৫২ শতকের। ওই জমির পূর্ব ও পশ্চিম পাশ দিয়ে দুটি রাস্তা রয়েছে। পূর্ব পাশের রাস্তাটি ৭৪ শতক জমিতে। রাস্তার জমির অর্ধেকেরও বেশি আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জবর দখল করে বালু তুলে গভীর খাদের সৃষ্টি করেছে। তাছাড়া আমাদের জমি দখল করে সে বালু তুলছে। কারো কথা শুনছে না। তার বালু তোলার কারণে আমার বাড়ির পাশের জমির পাশাপাশি গর্তের পূর্ব পাশের ফসলী জমিতেও ধ্বংস শুরু হয়েছে। এছাড়া সরকারি রাস্তা দখল করে জমি উত্তোলন করায় স্থানীয়দের ফসলী জমিতে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে গেছে।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘পিন্টু বলেছে, ও পাশেও জমি কিনেছি। তোমাদের ভিটা থেকে উচ্ছেদ করে ছাড়বো।’
এছাড়া আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু জোর করেই পুকুর তৈরির নামে বালু তুলে বিক্রি করছেন। এতে চৌগাছা (মুক্তদহ)- জগদীশপুর পাকা সড়কটি যে কোন সময় ধ্বসে যেতে পারে। সংবাদ সম্মেলনে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বিষয়টিতে ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আহবান করা হয়।
এদিকে শুক্রবার সংবাদ সম্মেলনের আগে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ৫/৬ জন লেবার বেলচা দিয়ে বালু তুলে দিচ্ছেন। আর দুটি ড্রাম ট্রাকে করে বালু বহন করা হচ্ছে। ট্রাক বিদায় করে শ্রমিকরা খেতে বসছেন।
সংবাদ সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে ঘটনাস্থলে আসেন আব্দুল্লাহ হেল কাফি পিন্টু। তিনি দাবি করেন এই জমি তার কেনা। এখানে তার ১২৭ শতক জমি রয়েছে। তিনি নিজের জমিতে পুকুর খনন করছেন। তিনি বলেন, ড্রেজার দিয়ে বা মেশিন দিয়ে বালু তোলা নিষেধ। শ্রমিক দিয়ে তো নিষেধ নয়। আমি শ্রমিক দিয়ে আমার পুকুরের নিচের অংশ সমান করছি।
খুলনা গেজেট/ টি আই