খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  হেলিকপ্টার দূর্ঘটনায় নিঁখোজ ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহীম রাইসি
  বাজারে থাকা এসএমসি প্লাসের সব ইলেক্ট্রোলাইট ড্রিংকস প্রত্যাহারের নির্দেশ, বাজারজাতকারীকে ১৬ লাক টাকা জরিমানা
  ৭ ব্যক্তিকে জাতীয় এসএমই উদ্যোক্তা পুরস্কার তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী

চৌগাছার অধিকাংশ কালভার্ট-সেতুর সংযোগ সড়কের বেহালদশা

চৌগাছা প্রতিনিধি

যশোরের চৌগাছার অধিকাংশ সড়ক, ব্রিজ, কালভার্ট ও ব্রিজের দুই পাশের সংযোগ সড়কের চরম বেহালদশার সৃষ্টি হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা, নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার সড়কের চাপ নেয়ার মত শক্তির চেয়ে অতিরিক্ত চাপ প্রয়োগের ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি বলে মনে করছেন অনেকে। দ্রুত সকল ভাঙ্গাস্থান মেরামত করে ঝুঁকিমুক্ত চলাচল নিশ্চিতে হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

চৌগাছা উপজেলা সদরকে অঘোষিতভাবে দু’ভাগে বিভক্ত করে রেখেছে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের কপোতাক্ষ নদ। এক সময় নদের উপর লোহার বেইরি ব্রিজ থাকলেও বর্তমান সরকার সেখানে একটি সেতু নির্মাণ করে। যার নামকরণ করা হয় চৌগাছা সেতু। সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তরের সেতু বাস্তবায়ন এবং নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান ছিলেন জিল্লুর করিম টিপু ও বাবু পাটোয়ারী। নির্মাণ কাজ শেষে ৪/৫ বছর যেতে না যেতেই এর ফুটপাত ধ্বসে যেতে থাকে। প্রথম দিকে ফুটপাতের একপাশে অল্প ভাঙ্গন থাকলেও বর্তমানে দিন যত যাচ্ছে দুই পাশেই তত বাড়ছে ভাঙ্গন।

বিষয়টি নিয়ে গত ২৯ মে দৈনিক লোকসমাজ পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সে সময়ে যশোরের সড়ক ও জনপদ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী (সওজ) মোহাম্মদ মেহেদী ইকবাল বলেন, সেতু ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনাটি তার জানা ছিল না। খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন পূর্বক প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। অথচ প্রায় দুই মাস পার হতে যাচ্ছে কিন্তু নেয়া হয়নি কোন পদক্ষেপ। অনেকে বলছেন গুরুত্বপূর্ণ এই সেতুটি বর্তমানে অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছে।

চৌগাছা-কোটচাঁদপুর সড়কে তরিকুল ইসলাম পৌর কলেজ সংলগ্ন ভৈরব নদের উপর একটি ব্রিজ আছে। সরু ব্রিজের কারণে কর্তৃপক্ষ ব্রিজের দুই পাশ বর্ধিত করে। কিন্তু দুই পাশের বর্ধিত ব্রিজের অংশ ধীরে ধীরে মূল ব্রিজ থেকে সরে যেতে থাকে। সময় যত বাড়তে থাকে সংযোগস্থলের ফাঁটলও তত বাড়তে থাকে। বর্তমানে এমন এক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে যে ভ্যান, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ ছোট খাটো যানবাহনের চাকা অনায়াসে ওই ফাঁটলে ঢুকে ঘটছে দুর্ঘটনা। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ সেখানে লাল কাপড় ঝুলিয়ে দিয়ে পথচারীদের সতর্ক করছেন। কিন্তু মেরামতের কোন উদ্যোগ আজও নেয়া হয়নি। সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিজের পাশেই আছে একটি কলেজ ও একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীরা চরম ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত এই ব্রিজ পারাপার হচ্ছে।

স্থানীয় আইপিএম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শওকত আলী বলেন, ভৈরবের উপর ব্রিজটি চরম ঝকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এটি দ্রুতই মেরামত করা না হলে প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের চলাচলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

চৌগাছার প্রাণকেন্দ্র হচ্ছে উপজেলা পরিষদ। উপজেলা পরিষদের সামনের মেইন সড়কে পাকা পিচের রাস্তার বড় একটি অংশ রোববার রাতে হঠাৎ দেবে গেছে। সকালে যারাই এই সড়কে হাটতে বের হয়েছেন তারাই এই দৃশ্য দেখে হতবাক হয়েছেন। একটি ভাল রাস্তা রাতে কেন কিভাবে ডেবে গেল তা নিয়ে চলে বিশ্লেষণ। অনেকে বলেন, রাতে চৌগাছা বাজারসহ পাশ্ববর্তী জেলা উপজেলাতে এই সড়কটি দিয়ে ১০ চাকার বড় বড় ট্রাক অধিক লোড নিয়ে চলাচল করে। ধারণা করা হচ্ছে, সিমেন্ট বা পাথর বোঝাই কোন ট্রাক যাওয়াতে সড়কটি ডেবে গেছে। বেলা বাড়ার সাথে সাথে ব্যস্ত সড়কটিতে বাড়তে থাকে যানবাহনের চাপ। কোন উপায় না পেয়ে স্থানীয়রা সেখানে ইট, বালি, মাটি ফেলে চলাচলের উপযোাগী করেছেন।

বাজারের ইছাপুর বটতলা সংলগ্ন কোটচাঁদপুর অভিমুখে সড়কের পশ্চিম পাশে দেখা দিয়েছে হঠাৎ ভাঙ্গন। বর্তমানে ভাঙনের যে ভয়াবহতা তা এখই মেরামত করা না হলে সড়কটির পুরোটাই ভাঙনের কবলে পড়তে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। এছাড়া উপজেলার অধিকাংশ সড়কের মাঝে মাঝে তৈরি হয়েছে ব্রিজ বা কালভার্ট। ঠিকাদার নির্মাণ কাজ শেষ করে দুই পাশে যেনতেন মাটি ভরাট করে বিল তুলে চলে গেছেন। ওই সব সড়কের নির্মিত ব্রিজ বা কালভার্টের সংযোগ স্থান গুলো বর্তমানে পথচারীদের গলার কাটায় পরিণত হয়েছে।

উপজেলা প্রকৌশলী রিয়াসাত ইমতিয়াজের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কপোতাক্ষ ব্রিজের ভাঙ্গাস্থান বিষয়ে সড়ক ও জনপদ বিভাগ বলতে পারবে। এছাড়া অন্য সব ভাঙ্গাস্থান মেরামতের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। আশা করছি খুব দ্রুতই জনদুর্ভোগ কমে আসবে।

খুলনা গেজেট / আ হ আ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!