যশোরের চৌগাছার পল্লীতে নিখোঁজের ৩দিন পর চার সন্তানের মা রাবেয়া বেগমের (৪৮) মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার (১০ ডিসেম্বর) থানা পুলিশ উপজেলার বাঘারদাড়ি গ্রামে তার বাড়ির পাশের টিউবওয়েলের পানির গর্ত থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। ঘটনাস্থল যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান পরিদর্শন করেছেন।
পূর্ব শত্রুতা ও অবৈধ সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার বাঘারদাড়ি গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী চার সন্তানের মা রাবেয়া বেগম (৪৮) গত রোববার সন্ধ্যায় পাশের বাড়িতে টেলিভিশন দেখতে যান। শেষে তিনি বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু তিনি আর বাড়িতে ফিরে আসেননি। নিহতের সন্তানরা অনেক খোঁজা-খুজি করেও তাকে খুঁজে পাননি। এ অবস্থায় নিহতের মেয়ে তানজিলা খাতুন মঙ্গলবার সকালে মাকে আশে-পাশের ঝোপ জঙ্গলে খোঁজ নিতে থাকেন। এ সময় তাজুল ইসলামের বাড়ির পাশে মায়ের ব্যবহৃত একটি জুতা ও ছোট টর্চ লাইট পড়ে থাকতে দেখেন। একই সাথে কোনো কিছু টেনে নেয়ার চিহ্ন মাটিতে দেখতে পান। এরই সূত্র ধরে ওই বাড়ির টিউবওয়েলের পানি ফেলা গর্তে দেখতে পান মায়ের ওড়নার কিছু অংশ ভেসে আছে। এ অবস্থায় তানজিলা খাতুন গর্তে নেমে মায়ের নিথর মৃতদেহ খুঁজে পান।
এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকেন। তার কান্নকাটির শব্দে আশে-পাশের লোকজন ছুটে আসেন।
স্থানীয়রা থানায় খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে নিহতের মৃতদেহ উদ্ধার করে। নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান। এ সময় তিনি পুলিশকে গুরুত্বের সাথে ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর থেকে তাজুল ইসলামের পরিবারের লোকজন ও তামিম পলাতক রয়েছে।
নিহতের ছেলে আলামিন জানান, বিগত পাঁচ মাস আগে পাশের বাড়ির তাজুল ইসলামের ছেলে তামিমের সাথে আমাদের পারিবারিক ঝগড়া-ঝাটি হয়। এ সময় তামিম গাছিদা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। একই সাথে বিভিন্ন হুমকি দেয়। তামিমদের টিউবওয়লের গর্তে মায়ের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এই হত্যার সাথে তামিম ও তার পরিবারের লোকজন জড়িত বলে তিনি জানান।
এদিকে প্রতিবেশীরা জানান, তাজুল ইসলামের ছেলে তামিম একাধিকবার রাবেয়া বেগমকে অবৈধ সম্পর্কের জন্য প্রস্তাব দেয়। এ প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে চৌগাছা থানার অফিসার ইনচার্জ পায়েল হোসেন জানান, এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অপরাধীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে পুলিশ তৎপর রয়েছে।
খুলনা গেজেট/এএজে