খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  আইনজীবী আলিফ হত্যা : ভিডিও দেখে শনাক্ত ১৩ জন, গ্রেপ্তার ৭
একনেকে অনুমোদনের পর টেন্ডারের জন্য অপেক্ষা

‘চুনকুড়ি সেতু’ নির্মিত হলে বদলে যাবে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটন

একরামুল হোসেন লিপু

গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়কের ২৮তম কিলোমিটারে চুনকুড়ি নদীর পোদ্দারগঞ্জ ফেরিঘাটে ‘চুনকুড়ি সেতু’ নির্মাণ প্রকল্প একনেকে অনুমোদনের পর টেন্ডার আহবানের মধ্যদিয়ে সেতু বাস্তবায়নের কাজ শুরুর প্রহর গুনছে দাকোপ উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ। সেতুটি নির্মিত হলে খুলনার সাথে দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপিত হবে।

খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আনিসুজ্জামান মাসুদ খুলনা গেজেটকে বলেন, সেতুটির টেন্ডার আহবানের পূর্বে কিছু প্রক্রিয়া সম্পন্নের ব্যাপার রয়েছে। প্রকল্পের পিডি (প্রকল্প পরিচালক) নিয়োগ হবে। মন্ত্রণালয় থেকে ডিজিটাল ডিজাইন হবে। এর সঙ্গে আরও কিছু প্রক্রিয়া আছে। এগুলো সম্পন্ন হওয়ার পর চুনকুড়ি সেতুর টেন্ডার আহবান করা হবে।

খুলনা জেলার দক্ষিণে অবস্থিত দাকোপ উপজেলা। জেলা শহর হতে ৩০ কিলোমিটার দক্ষিণে বটিয়াঘাটা উপজেলার উপর দিয়ে দাকোপ উপজেলাবাসীর যাতায়াতের অন্যতম প্রধান সড়ক। দেড় লক্ষাধিক জনসংখ্যা অধুষ্যিত এই এলাকার জনগোষ্ঠীর প্রধান আয়ের উৎস কৃষি। এ অঞ্চলে ব্যাপক চিংড়ি চাষও হয়। হিমায়িত চিংড়ি এবং কাঁকড়া প্রধান রপ্তানী পণ্য। ৮ টি নদী যথাক্রমে শিবসা, ভদ্রা, চুনকুড়ি, পশুর, ঢাকী, মংগা, ঢাংমারী ও ঝপঝপিয়া নদী এ অঞ্চলের উপর দিয়ে প্রবহমান। কিন্তু জেলা শহরের সাথে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ না থাকায় এ অঞ্চলটি দীর্ঘদিন যাবৎ অবহেলিত।

জেলা শহর খুলনার সঙ্গে বটিয়াঘাটা এবং দাকোপ উপজেলাবাসীর যাতায়াতের অন্যতম একটি প্রধান সড়ক হলো গল্লামারী-বটিয়াঘাটা-দাকোপ-নলিয়ান ফরেস্ট সড়ক। এই সড়কের ২৮ তম কিলোমিটারে চুনকুড়ি নদী বিদ্যমান। নদীটি দাকোপ উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষের সরাসরি ও স্বল্প সময়ে খুলনা জেলা সদরে যাতায়াত থেকে বঞ্চিত।

গত বছর খুলনা সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) চুনকুড়ি নদীর পোদ্দারগঞ্জ ফেরীঘাটে সেতু নির্মাণের পরিকল্পণা গ্রহণ করে এবং এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা তৈরী করে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রাণালয়ে পাঠায়। সর্বশেষ গত ১৬ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় চুনকুড়ি নদীর উপর ৭৪৫ কোটি ৩৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণের অনুমোদন পায়। সেতুটির দৈর্ঘ্য হবে ১২৩৪ দশমিক ৩৮ মিটার। ২০২৭ সালের মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা।

সেতুটি নির্মিত হলে খুলনা জোনের সাথে দাকোপ ও বটিয়াঘাটা উপজেলাসহ বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন ও উন্নত সড়ক নেটওয়ার্ক স্থাপিত হবে। পাশাপাশি বিশ্বের সর্ববৃহৎ ম্যানগ্রোভ ফরেস্ট সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় অর্থনৈতিক পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন তরাণ্বিত হবে।

খুলনা সওজ এর উপ-সহকারী প্রকৌশলী আবু নাঈম খুলনা গেজেটকে বলেন, সেতুটি নির্মিত হলে ভ্রমণ সময় হ্রাসসহ যানবাহন পরিচালন ব্যয় বাবদ প্রতি বছর ৬৮ দশমিক ৭৪ কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।

তিনি আরও বলেন, অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা মোতাবেক সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের লক্ষমাত্রা সারাদেশে ৩৭ দশমিক ৫০০ মিটার সেতু/কালভার্ট নির্মাণ করা। চুনকুড়ি সেতু নির্মাণের বিষয়টিও সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অষ্টম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও এসডিজি’র সাথে সামঞ্জ্যপূর্ণ।

খুলনা গেজেট/এমএনএস




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!