খুলনা, বাংলাদেশ | ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  কয়েকজন বিচারপতির আচরণের বিষয়ে প্রাথমিক অনুসন্ধান চলছে, এ বিষয়ে যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে : সুপ্রিম কোর্ট
  সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক বিকালে
  ১৫ বছর পর ওয়েস্ট ইন্ডিজে টেস্ট জয় বাংলাদেশের

চি‌কিৎসক শূন‌্য খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগ

বশির হোসেন

চি‌কিৎসক শূন‌্য রয়েছে খুলনা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগ।  কলেজে সহকারি অধ্যাপক পদমর্যাদার একজন শিক্ষক (চুক্তিভিত্তিক) থাকলেও হাসপাতালে তার কোন পদচারণা নেই। ফলে গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়ের ক্লাস থেকে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা, বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ময়না তদন্ত। আর প্রতিবেদন তৈরিতে দেখা দিয়েছে ধীরগতি। সঠিকভাবে ময়না তদন্ত না হলে মামলাগুলোতে সামগ্রিক প্রভাব পড়বে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

খুলনা মেডিকেল কলেজ সূত্রে জানা গেছে, চাকুরী বয়স শেষ হওয়ার পরও দুই বছরের চুক্তিতে থাকা খুমেকের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একমাত্র সহকারী অধ্যাপক ডাঃ শফিউজ্জামান। কিন্তু তিনি আসেন না কলেজে। তার মেয়াদও প্রায় শেষ। এ বিভাগে সংযুক্তির মাধ্যমে আসা কর্মকর্তা ডা. মোসলেমা ইয়াসমিন জুঁই এখন গাইনি বিভাগের চিকিৎসক। ডাঃ ওয়াহিদ মাহমুদ দীর্ঘদিন ধরে সাপোর্ট দিলেও বদলী হয়েছেন অন্যত্র। এছাড়া ডাঃ আসিফ ও ডাঃ মিলন বিভাগটিতে প্রভাষক হিসাবে চাকুরী করলেও এখন কোন শিক্ষকই নেই গুরুত্বপূর্ণ এই বিভাগে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের একজন অধ্যপক, একজন সহযোগী অধ্যাপক, দুই জন সহকারী অধ্যাপক, তিনজন প্রভাষকের সব পদই শুন্য রয়েছে। ফলে শিক্ষার্থীদের ক্লাসের পাশাপাশি সব থেকে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে ময়না তদন্তে। এছাড়া ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুদেরও ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক মেডিসিনের নারী চিকিৎসক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসলেও বর্তমানে তা দারুণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

ময়নাতদন্ত করেও প্রতিবেদনে স্বাক্ষর না করা একাধিক চিকিৎসক বলেন, অনেক স্পর্শকাতর বিষয় থাকে, যেমন ‘হত্যা’, না ‘আত্মহত্যা’ সেটি নির্ধারণ করতে পারেন একমাত্র ফরেনসিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক। সে কারণে অধ্যক্ষের দেওয়া রোস্টার রক্ষায় তারা ময়না তদন্তের দায়িত্বটি পালন করলেও স্বাক্ষর করে নিজেকে আদালতমুখী করতে চাচ্ছেন না।

খুমেক হাসপাতালের লাশঘর থেকে ডোম শুশিল বলেন, বড় স্যার রিপোর্ট গুলো করেন, কিন্তু অনেক সময় ভিডিও করে স্যারের কাছে পাঠানো হয়। এতে করে যদিও কাজ চালিয়ে নেয়া হচ্ছে কিন্তু ময়না তদন্ত কাজ সঠিক ও নিভূলভাবে করার জন্য বিশেষজ্ঞ স্যার প্রয়োজন।

জনউদ্যোগের সদস্য সচিব সাংবাদিক মহেন্দ্রনাথ সেন বলেন, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ৭টি পদের ৭টিই শুন্য। এতে করে সার্বিক কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ধর্ষণের শিকার নারী ও শিশুর ডাক্তারি পরীক্ষা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং অপমৃত্যু হওয়া মানুষের ময়না তদন্ত দারুণভাবে বাধা গ্রস্ত হচ্ছে। অবিলম্বে খুমেকে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের শিংকট সংকট পূরণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আহবান জানান তিনি।

কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাঃ আব্দুল আহাদ বলেন, স্বাস্থ্য মহাপরিচালকের দপ্তর এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি লিখলেও কোন কাজ হচ্ছে না। একজন সহকারী অধ্যাপক চুক্তিভিত্তিক থাকলেও তিনি আসেন না ঠিকমত এবং তার চুক্তির মেয়াদও প্রায় শেষ। অনেক সময় অনুরোধ করে অন্য বিভাগের ডাক্তার দিয়ে ময়না তদন্ত করানো হয়। এতে ভুল রিপোর্টের আশঙ্কা থাকে বলে তিনিও স্বীকার করেন।

খুলনা গেজেট/ এমবিএইচ/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!