প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক সভাপতি ও দৈনিক ইনকিলাবের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধি মিজানুর রহমান তোতা চির নিদ্রায় শায়িত হয়েছেন। এদিন জোহরবাদ পালবাড়ীমোড় জামে মসজিদ প্রাঙ্গণে তার নামাজে জানাজা শেষে পার্শবর্তী পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। শনিবার সকাল ৬টায় যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
যশোরের সাংবাদিকদের প্রিয় নেতা মিজানুর রহমান তোতা গত ৩ জুলাই ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। এরপর তাকে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরআগে গত ২২ জুন তার করোনা উপসর্গ ধরা পড়ে। কিন্তু পরীক্ষায় তিনি ছিলেন নেগেটিভ। হাসপাতালে গত দু’দিন তার অবস্থার খানিকটা উন্নতি হবার পর শনিবার ভোররাতে তিনি ফের হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৬টায় তিনি না ফেরার দেশে পাড়ি জমান।
বর্ষিয়ান সাংবাদিক মিজানুর রহমান তোতার জন্ম ঝিনাইদহে। ঝিনাইদহ কে সি কলেজে পড়াকালে তিনি জাসদ ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন। পরে যশোর থেকে প্রকাশিত স্থানীয় দৈনিক স্ফুলিঙ্গের মাধ্যমে সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি। পরে তিনি দৈনিক আজাদ, দৈনিক ঠিকানাসহ বিভিন্ন পত্রিকায় কাজ করেন। দৈনিক ইনকিলাব বাজারে আসার পর তিনি যোগদান করেন। আমৃত্যু তিনি ইনকিলাবের দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রতিনিধি ছিলেন।
তিনি ছিলেন অবিভক্ত যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের শীর্ষ নেতা। তিনি প্রেসক্লাব যশোরের তিনবারের সভাপতি ও সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। কয়েক বছর আগে ব্রেনস্ট্রোকে তার শরীরের একাংশ প্রায় অকেজো হয়ে যায়। এরপর তিনি আর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি। কিন্তু তারপরও তিনি দক্ষ হাতে সাংবাদিকতা চালিয়ে যান।
এদিন দুপুর সাড়ে ১২টায় তার পালবাড়ী মোড়স্থ বাসভবন প্রাঙ্গণে মিজানুর রহমান তোতার প্রতি শেষ ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন সাংবাদিকসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। সংগঠনগুলো হলো, সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সম্পাদক আহসান কবীরের নেতৃত্বে প্রেসক্লাব যশোর, সাধারণ সম্পাদক মবিনুল ইসলাম মবিনের নেতৃত্বে যশোর সংবাদপত্র পরিষদ, সভাপতি এম. আইউব ও সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামানের নেতৃত্বে সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোর, সভাপতি ফারাজী আহম্মেদ সাঈদ বুলবুল ও সাধারণ সম্পাদক এইচআর তুহিনের নেতৃত্বে যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন, দৈনিক গ্রামের কাগজ, দৈনিক স্পন্দন, সাপ্তাহিক সোনালী দিন, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদের নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রী।
এছাড়া প্রেসক্লাব যশোরের এই শীর্ষ নেতার মৃত্যুতে ক্লাব ভবনে কালো পতাকা উত্তোলন এবং শোকবই খোলা হয়েছে।
জানাজায় উপস্থিত ছিলেন যশোর পৌরসভার মেয়র হায়দার গণি খান পলাশ, সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ বিপুল, ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, জেলা সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান ভিটু, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বুলু, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান বিপু, ওয়ার্ড কাউন্সিলর জাহিদ হোসেন মিলন, সাবেক কাউন্সিলর মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তা, শহর আওয়ামী লীগ নেতা মুজিবুর রহমান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, মিজানুর রহমান খান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের রবিউল ইসলাম, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আসাদুজামান মিঠু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা আমির ফয়সাল, যুবলীগ নেতা তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি রাজিদুর রহমান সাগর, আমিনিয়া আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মাওলানা নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি