খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ | ১৯ মে, ২০২৪

Breaking News

  করোনায় একজনের মৃত্যু, শনাক্ত ১১
  তিন জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল ৭ জনের
  রাঙামাটিতে সশস্ত্র হামলায় ইউপিডিএফ সদস্যসহ নিহত ২

চিতলমারীতে বাগদা চিংড়িতে ভাইরাস, দিশেহারা চাষী

এস এস সাগর, চিতলমারী

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার নিচু এলাকার ঘেরের (জলাশয়ের) বাগদা চিংড়ি মাছ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। ফলে সর্বশান্ত হতে বসেছে ক্ষতিগ্রস্ত চিংড়ি চাষিরা। তাঁরা ভাইরাস প্রতিরোধে কোন মেডিসিনে কাজ না করায় ঘেরে ওঝাঁ বৈদ্যের পানি পড়া ও লাল পতাকা উড়িয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন। স্থানীয় মৎস্য বিভাগ জানিয়েছেন এটি হোয়াইট স্পর্ট ভাইরাস। এ ভাইরাস একবার লাগলে তা আর ঠেকানো যায় না। এ পরিস্থিতিতে চিংড়ি চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

চিতলমারী উপজেলা মৎস্য অফিস থেকে জানা গেছে, এ উপজেলায় মোট চিংড়ি ঘেরের সংখ্যা ১৬ হাজার ৭১০ টি। যার মোট আয়তন ১৬ হাজার ৮৩৩ একর। এরমধ্যে ১৩ হাজার ৭৫৮ টি ঘেরে গলদা ও ২ হাজার ৯৫২ টি ঘেরে বাগদা চিংড়ির চাষ হয়। এখানের চাষিরা বছরে ৫৮১ মেট্রিকটন বাগদা ও ২ হাজার ৬৫০ মেট্রিকটন গলদা চিংড়ি এবং বিপুল পরিমান সাদা মাছ উৎপাদন করে থাকেন। এখানে ৭ হাজার ৫০০ জন মৎস্য চাষি ও ২ হাজার ৭০২ জন মৎস্যজীবি রয়েছেন। সেই সাথে এই চিংড়ি শিল্প ও মাছ চাষের সাথে এ অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের ভাগ্য জড়িত রয়েছে। এ বছর ঋণগ্রস্থ চাষিরা চিংড়ির উৎপাদন দেখে অনেকটা আশায় বুক বেধে ছিলেন। মাছ বিক্রি করে তাদের ধারদেনা মিটবে। কিন্তু হঠাৎ করে ভাইরাসের আক্রমণে তাঁরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।

চিতলমারী সদর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও চিড়িং চাষী অনির্বাণ মন্ডল এবং চিতলমারী উপজেলা প্রেসক্লাবে সহ-সভাপতি ও ক্ষতিগ্রস্ত বাগদা চিংড়ি চাষী শেখর ভক্ত জানান, উপজেলার নিচু এলাকার ঘেরের বাগদা চিংড়ি মাছ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এ বছর শতকরা ৯০ ভাগ বাগদা চিড়িং ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কোন ভাবেই এটা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। ভাইরাসে ঘেরের চিংড়ি ব্যাপক ভাবে মারা যাচ্ছে। এসব চাষীরা বিভিন্ন এনজিও, ব্যাংক ও দাদন ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অধিক মুনাফায় টাকা এনে চিংড়ি চাষে ব্যয় করেছেন। এ অবস্থায় চরম হতাশায় ভুগছেন তাঁরা। ভাইরাস প্রতিরোধে কোন মেডিসিনে কাজ না করায় তাঁরা ঘেরে ওঝাঁ বৈদ্যের পানি পড়া ও লাল পতাকা উড়িয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করছেন। কিন্তু এসবে কোন প্রতিকার হচ্ছে না।

উপজেলার পাড়ডুমুরিয়া গ্রামের সুভাষ মজুমদার, শ্রীরামপুর গ্রামের বিজয় বালা, মোঘনাথ বালা, অমল বৈরাগী, রনজিত রায় ও আলফাজ শেখসহ অনেকে জানান, তাঁদের ঘেরে ব্যাপক ভাবে ভাইরাস দেখা দিয়েছে। ভাইরাসের কারণে সর্বশান্ত হতে বসেছে তাঁরা। কোন উপায় খুঁজে পাচ্ছেন না । নানা পরামর্শ নিয়ে ও কোন কাজে আসছে না। রাতারাতি ঘেরের চিংড়ি মারা যাচ্ছে।

এ ব্যাপারে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা সোহেল মোহাম্মদ জিল্লুর রহমান রিগান জানান, এ বছর মোট ৬ হাজার ৮৯০ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে বাগদা চিড়িং চাষ হয়েছে। চিংড়িতে যে ভাইরাসটি দেখা দিয়েছে এটি হোয়াইট স্পর্ট ভাইরাস। এটি একবার লাগলে তা আর কোন মেডিসিনে কাজ করে না। এটা চাষিদের অব্যবস্থাপনার কারণে হয়েছে। ঘেরে চিংড়ি পোনা ছাড়ার পূর্বে ভালো করে চুন প্রয়োগ ও জৈব নিয়মে চাষ করলে এ রোগ নিরাময় সম্ভব বলে পরামর্শ দেন তিনি।

খুলনা গেজেট/কেএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!