ধান-চালের অবৈধ মজুদ, বাজারে ঘাটতি কারণ নির্ণয়ে খুলনায় পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। জুলাই মাসের তুলনায় ধান-চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এর কারণ নির্ণয়ে সাত দিনের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য কৃষি বিপণন অধিদপ্তর পরামর্শ দিয়েছে। জেলায় চালের সর্বনিম্ন প্রতি কেজির মূল্য ৪৪ টাকা, সর্বোচ্চ ৭০ টাকা।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের নিদেশনায় গত ৫ আগস্ট ধান-চালের অস্বাভাবিক মূল্য ও অবৈধ মজুদের কারণ জানতে জেলা প্রশাসন ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করেছে। অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটকে আহবায়ক এবং জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে সদস্য সচিব, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক কৃষি সম্প্রসারণ, জেলা বাজার কর্মকর্তা ও জাতীয় ভোক্তা অধিকারের সহকারী পরিচালককে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ ইউসুফ জেলা প্রশাসনে পাঠানো এক পত্রে উল্লেখ করেন, ধান চালের পাইকারী ব্যবসায়ী, মিল মালিকসহ তৃতীয় পক্ষের মাত্রাতিরিক্ত ধান-চাল মজুদের কারণে অস্বাভাবিক মূল্য দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে বাস্তবতা পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে অবৈধ মজুদদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জেলা বাজার কর্মকর্তা আব্দুস সালাম তরফদার এ প্রতিবেদককে জানান, এক মাস আগে চালের যে মূল্য ছিল সেটাই স্থিতিশীল রয়েছে। নতুন করে মূল্য বাড়েনি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কমিটি বাস্তবতা নিরুপনে মিল ও বাজার পরিদর্শন করবে। লকডাউন ও অন্যান্য কারণে কমিটির তৎপরতায় বিলম্ব হয়েছে। তিনি বলেন, একমণ ধানে ২৭ কেজি চাল উৎপাদন হয়, এ ক্ষেত্রে ধানের মূল্য ও উৎপাদন খরচ হিসাব করে বেশি হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তার দেয়া তথ্য মতে, গত রোববার নগরীর বাজারের মোটা চাল ৪৪-৪৬ টাকা, মাঝারী ৫৪-৫৬, চিকন ৬২-৬৪ টাকা দরে বিক্রি হয়।
নিউমার্কেটের খুচরা চাল ব্যবসায়ী নয়ন এন্টারপ্রাইজের মালিক আব্দুর রাজ্জাক খান জানান, সোমবার মোটা চাল ৪৪-৪৫ টাকা, মাঝারী ৪৮ টাকা, প্রকার ভেদে ৫২ টাকা এবং চিকন ৬৬-৭০ টাকা দরে বিক্রি হয়। দ্বিতীয় দফা লকডাউনের পর মূল্য বাড়ে।
আমদানীকারকের সূত্র জানিয়েছেন, অতিরিক্ত মাত্রায় আমদানী শুল্ক নির্ধারণ বেশি মুনাফায় আশায় মিল মালিকদের অতিরিক্ত মজুদ, বাজারের সরবরাহ কমানো এবং সরকারের নজরদারীর অভাবে চালের মূল্য বেড়েছে। চালের অস্থিরতা কমাতে গত সাত জানুয়ারি আমদানীতে বিদ্যমান সাড়ে ৬২ শতাংশ শুল্ক কর ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। চাল আমদানীতে শুল্ক ১০ শতাংশ ও সম্পূরক শুল্ক ২৫ শতাংশ মোট ৩৫ শতাংশ কমানো হয়। এ সময় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড একটি আদেশ জারী করে। এনবিআরের চেয়ারম্যানের আদেশ বলা হয়, আমদানী শুল্ক কমানো সর্ম্পকিত এ আদেশ ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বলবৎ থাকবে। সে সময় পার হয়েছে।
এর আগে স্থানীয় কৃষককে সুরক্ষা দিতে চাল আমদানী নিরুৎসাহিত করায় সাড়ে ৬২ শতাংশ শুল্ককর আরোপ করা হয়। তবে লাগামহীনভাবে চালের মত নিত্য পণ্য দাম বাড়ার পরিপ্রেক্ষিতে ভোক্তাকে সুরক্ষা দেয়ার বিষয়টি সামনে আসে।
খুলনা গেজেট/ এস আই