বোরো ধানের শীষ দেখা দিয়েছে। কৃষকের ভাষায় শীষ দেখলেই ২০ দিন। ২০ দিন পরেই বোরো কাটা শুরু হবে। বাজারে উঠতে আরও ১০ দিন লাগতে পারে। নতুন চাল উঠলে বাজারে দাম কমবে। বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখতে চালের উৎপাদন বৃদ্ধিতে খুলনার দু’লাখ কৃষক সিংহভাগ জমিতে হাইব্রীড জাতের বোরো আবাদ করেছে। হাইব্রীড জাতের বোরো আবাদ হয়েছে ৩৬ হাজার আটশ’ ৬০ হেক্টর জমিতে। এ মৌসুমে জেলায় মোট আবাদ হয়েছে ৬০ হাজার একশ’ ৫০ হেক্টর জমিতে।
কয়রা থেকে দিঘলিয়া পর্যন্ত বিস্তৃর্ণ মাঠে বোরোর শীষ দেখা দিয়েছে। বৃষ্টির অভাবে ক্ষেতে জো নেই। সেচের ওপরেই নির্ভরশীল। লোডশেডিং এর কারণে রাতে যথারীতি সেচ দেয়া যাচ্ছে না। তারপরও কৃষি কর্মকর্তারা আশাবাদী বোরোর বাম্পার ফলন হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, এ মৌসুমে জেলায় ৫৭ হাজার পাঁচশ’ ৪০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ হয়। লক্ষমাত্রার চেয়ে দুই হাজার ছয়শ’ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। মোট জমির মধ্যে ৩৬ হাজার আটশ’ ৬০ হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের বোরো চাষ হয়েছে। বোরো আবাদে ডুমুরিয়া উপজেলা শীর্ষে রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশাবাদী দু’লাখ ৫৭ হাজার মেট্টিক টন চাল উৎপাদন হবে। গত বছর ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে দু’লাখ মেট্টিক টনেরও বেশি চাল উৎপাদন হয়।
ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাদ্দেক হোসেন জানান, শোভনা, মাগুরখালী, শরাপপুর, সাহস ও সদর ইউনিয়নে হাইব্রীড জাতের বোরোর আবাদ বেশি হয়েছে। উপজেলায় ২১ হাজার ছয়শ’ চল্লিশ হেক্টরের মধ্যে ১৩ হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের চাষ হয়। ফলন বৃদ্ধি, চালের ঘাটতি কমানো এবং বাজার মূল্য স্থিতিশীল রাখার লক্ষে চাষী হাইব্রীড জাতের চাষে ঝুঁকে পড়ে। তিনি আরও বলেন, আগামী ২০-২২ দিনের মধ্যে শিলাবৃষ্টি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা না দিলে বাম্পার ফলন হবে।
বটিয়াঘাটা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম জানান, এ মৌসুমে পাঁচ হাজার চারশ’ হেক্টর জমির মধ্যে তিন হাজার হেক্টর জমিতে হাইব্রীড জাতের চাষ হয়েছে। লবণ সহিষ্ণু এলাকা হওয়ায় চাষিরা হাইব্রীড জাতকে বেছে নিয়েছে।
দাকোপ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মেহেদী হাসানা খান জানান, ক্ষেতে মাজরা ও পাতাপোড়া রোগের আক্রমণ দেখা দেয়। বৃষ্টি না হওয়ায় জমিতে পানির সংকট রয়েছে। লবণাক্ততার প্রভাব দেখা দিয়েছে। উপজেলায় একশ’ ৯০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তিনি আশাবাদী বাম্পার ফলন হবে।
খুলনা গেজেট/এমএইচবি