খুলনা, বাংলাদেশ | ৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২০ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  জুলাই গণহত্যা : ৮ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে এক মাসে তদন্ত শেষ করার নির্দেশ
  বিশ্বকাপ বাছাই : মার্টিনেজের ভলিতে পেরুর বিপক্ষে জয় পেল আর্জেন্টিনা
পৌরসভা নির্বাচন

চালনায় ভোটের আগে ভোট

আজিজুর রহমান

ভোটের একদিন আগেই ভোট কেন্দ্রে ভোটার! ভোট দিতে এসেছেন। একটি মেশিনে হাতের বুড়ো আঙুলের ছাপ দিলেন। সঙ্গে সঙ্গে মেশিনটির স্ত্রিন এবং কক্ষের দেয়ালে ভেসে উঠল ভোটারের ছবি, ভোটার নম্বর ইত্যাদি। সহকারি প্রিসাইডিং কর্মকর্তা এবং কক্ষে উপস্থিত সবাই দেখলেন ভোটারের বিস্তারিত। এরপর ভোটার চলে গেলেন ভোট দেওয়ার গোপন কক্ষে। সেখানে রয়েছে আরেকটি মেশিনের প্যানেল। সেই প্যানেলে রয়েছে তিনটি ভাগ। এক ভাগে মেয়র প্রার্থী, অন্য দুই ভাগে কাউন্সিলর প্রার্থীদের নাম প্রতীকের তালিকা। প্যানেলে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে বেরিয়ে গেলেন।

খুলনার চালনা পৌনসভা নির্বাচনের ভোটকে সামনে রেখে শনিবার (২৬ ডিসেম্বর) ভোটের একদিন আগে সেই ভোটের প্রস্তুতি নিতে ‘মক ভোটের’ আয়োজন করে নির্বাচন কমিশন। দাকোপ উপজেলায় পৌরসভা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রথমবারের মতো ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট গ্রহণ হবে। ভোটারদের ইভিএমে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি দেখাতে পৌরসভার নয়টি ভোট কেন্দ্রেই আয়োজন হয় মক ভোটের।

বেলা ১১টার দিকে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের এমএম কলেজ কেন্দ্রে গিয়ে মক ভোটের আয়োজন দেখা গেল। ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসা এক ভোটার আব্দুল মজিদ গাজী ইভিএম নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত। ভোট দেওয়া খুব সহজ মন্তব্য করে তিনি খুলনা গেজেটকে বললেন, ‘এখন শিক্ষিত অশিক্ষিত সবাই মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন। তাই ইভিএমে ভোট দেওয়া কারো জন্যই কঠিন হবে না।’

৪ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার আয়শা বেগম জানান, ‘মেশিনে কীভাবে ভোট দিব, তা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। কিন্তু নির্বাচন অফিসের লোকজন ভোট দেয়া শেখানোর পর তেমন ভয় নেই। এখন মেশিনে ভোট দিতে পারবো।’

উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্র জানিয়েছে, গত তিন থেকে চার দিন ধরে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ইভিএমে ভোট দেওয়ার পদ্ধতি লিফলেট ও ভিডিও চিত্রের মাধ্যমে ভোটারদের দেখানো হয়েছে। শনিবার ভোট কেন্দ্রে চূড়ান্তভাবে সেটা দেখানো হলো।

সূত্রটি আরও জানায়, চালনায় নয়টি কেন্দ্রে ভোট হবে ইভিএমে। এই পৌরসভায় মোট ভোটার আছে ১২ হাজার ১০০ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ হাজার ৮৬৩ জন নারী ৬ হাজার ২৩৭ জন ভোটার রয়েছে। ২৮ ডিসেম্বর ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণ করা হবে।

নির্বাচন কমিশনের এক কর্মকর্তা জানালেন, ‘ব্যালট ইউনিটের ওপর প্রার্থীর নাম ও প্রতীক সাজানো থাকবে। প্রত্যেক প্রতীকের পাশে আছে একটি করে সুইচ। ভোটার তাঁর পছন্দের প্রতীকের পাশের সুইচ চাপলেই ব্যালট ইউনিটের নিচের দিকে থাকা লাল বাতি জ্বলে উঠবে। ভোট গৃহীত হলে সহকারি প্রিসাইডিং অফিসারের সামনে থাকা কন্ট্রোল ইউনিটের ডিসপ্লেতে একটি সংখ্যা যোগ হবে।’

৩ নম্বর ওয়ার্ডের চালনা মহিলা মহাবিদ্যালয় কেন্দ্রের পোলিং অফিসার রাজদ্বীপ কবিরাজ জানান, ‘কন্ট্রোল ইউনিট ব্যবহার করা হবে ডিজিটালি ভোটার সনাক্ত করার কাজে। আঙুলের ছাপ, আইডি নম্বর ও ভোটার নম্বরের মাধ্যমে ভোটার সনাক্ত করা সম্ভব। ভোটার ভোট কেন্দ্রে আসার পর তাঁর আঙুলের ছাপ কন্ট্রোল ইউনিটে দেবেন। তখনই ভোটারের ছবিসহ অন্যান্য তথ্য কন্ট্রোল ইউনিটের ডিসপ্লে এবং ভোট কক্ষে রাখা প্রজেক্টরে দেখা যাবে। সব ঠিক থাকলে ওই ভোটার ভোট দিতে পারবেন। আঙুলের ছাপে কোনো সমস্যা থাকলে অন্য ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়েও তথ্য বের করা যাবে। আইডি নম্বর ও ভোটার নম্বরের মাধ্যমেও কাজ করার সুযোগ থাকছে।’

দাকোপ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারি রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী মাহামুদ হোসেন খুলনা গেজেটকে বলেন, ‘এবার যে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো আগের তুলনায় অনেক আধুনিক। এতে কন্ট্রোল ইউনিট ও ব্যালট ইউনিট নামের দুটি অংশ থাকে। কন্ট্রোল ইউনিট থাকবে সহকারি প্রিসাইডিং কর্মকর্তার সামনে। ব্যালট ইউনিট থাকবে ভোট দেওয়ার জন্য নির্ধারিত গোপন কক্ষে।’

 

খুলনা গেজেট / এআর  / কেএম 




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!