কিছু কিছু মুহূর্তের ব্যাখ্যা হয় না ভাষায়। তবে প্রযুক্তির দৌলতে বিশেষ মুহূর্তকে ফ্রেমবন্দি করে রাখা যায়। পৃথিবীর সবচেয়ে কাছাকাছি যার অবস্থান, সেই চাঁদের বিশেষ মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করে শোরগোল বাধালেন এক ছবিওয়ালা। তাঁকে পুরস্কৃত করল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা NASA. (Valerio Minato)।
ইতালির তুরিনের বাসিন্দা ভালেরিও মিনাতো। পেশায় ছবিওয়ালা অর্থাৎ চিত্রগ্রাহক তিনি। বড়দিনের আগে চাঁদের একটি ছবি তোলেন তিনি, যা নজর কেড়েছে গোটা বিশ্বের। বড়দিনে ওই ছবিটিকে ‘Astronomy Pictutre of the Day’ স্বীকৃতি দিয়েছে NASA. (Astronomy Picture)
ইতালির তুরিনে অবস্থিত ‘দ্য ব্যাসিলিকা অফ সুপারগা’, যা আসলে একটি ক্যাথলিক গির্জা। প্রাচীন রোমের স্থাপত্যের নিদর্শন এই ব্যাসিলিকা। দুই দিকে সারি সারি স্তম্ভ, মাথার উপর সুবিশাল গম্বুজ, দেখলে মনে হয় যেন কোনও প্রাসাদ। ‘দ্য ব্যাসিলিকা অফ সুপারগা’র পিছনে উদীয়মান চাঁদের ছবিই ক্যামেরাবন্দি করেছেন ভালেরিও।
যে মুহূর্তে চাঁদের ওই ছবিটি তুলেছেন ভালেরিও, সেটির জন্যই ছবিটি সাধারণ ছবির থেকে আলাদা। ‘দ্য ব্যাসিলিকা অফ সুপারগা’র পিছনেই রয়েছে মন্তে ভিসো পর্বত। কোটিয়ান আল্পসের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মন্তে ভিসো। যে সময়ে ছবিটি তুলেছেন ভালেরিও, সেই সময় মন্তে ভিসো পর্বত, ‘দ্য ব্যাসিলিকা অফ সুপারগা’কে সামনে রেখে, একাবারে সমান্তরাল ভাবে উদয় হচ্ছিল চাঁদের।
ফলে যে ছবি ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে, তাতে ত্রিভুজাকার পর্বতশৃঙ্গকে চাঁদের বুকে মুকুটের মতো দেখাচ্ছে। দুই পাশে এবং মাথার উপর দিয়ে দর্শন মিলছে শুভ্র চাঁদের। আঁধারে ঢাকা পর্বতশৃঙ্গের বুকে আবার আলো ফুটিয়েছে ‘দ্য ব্যাসিলিকা অফ সুপারগা’, যার গা বেয়ে নেমে এসেছে আস্ত শহর।
ভালেরিও জানিয়েছেন, বড়দিনের আগে যখন একটু একটু করে সেজে উঠছে চারিদিক, গত ১৫ ডিসেম্বর সন্ধে ৬টা বেজে ৫২ মিনিটে ওই মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করেন তিনি। মাত্র কয়েক মুহূর্তেই স্বর্গীয় রূপ ফুটে ওঠে তাঁর চোখের সামনে। আলো-আঁধারির মিশেলই ছবিটিকে আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
তবে ক্যামেরা নিয়ে পৌঁছতেই ওই মুহূর্ত এসে উপস্থিত হয় এমন নয়। ভালেরিও জানিয়েছেন, ২০১৭ সাল থেকে এমন একটি ছবির ভাবনা ঘুরছিল তাঁর মাথায়। অনেক বার আগেও চেষ্টা করেছেন। কিন্তু একেবারে নিখুঁত মুহূর্ত ক্যামেরাবন্দি করতে ছ’বছর সময় লেগে গেল তাঁর। ওই দিন চন্দ্রোদয়ের সময়, অবস্থান, সবকিছু আগেই জেনে নিয়েছিলেন। তাতেই অসাধ্য সাধন হয়। ছবিটির জন্য ভালেরিওকে প্রশংসায় ভাসিয়ে দিয়েছেন সকলে। তাঁর চোখ দিয়ে তুরিনকে নতুন করে দেখতে শিখলেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
সূত্র : abp বাজার।
খুলনা গেজেট/এমএম