খুলনায় কলেজছাত্রীকে যৌন নির্যাতনের পর গা ঢাকা দিয়েছেন চিকিৎসক বিপ্লব কুমার দাস! মামলা হওয়ার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নির্ধারিত চেম্বারেও তিনি বসছেন না। তবে হাসপাতালের একটি সূত্র জানিয়েছে তিনি সোমবার থেকে ৫ দিনের ছুটি নিয়েছেন।
বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টায় যেয়ে দেখা যায়, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চতুর্থ তলার ৪২৬ নম্বর কক্ষটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে আছে। অফিস সহায়ক মো: জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার পর থেকে মাঝেমধ্যে তালা খুলে কক্ষটি পরিস্কার করেন।
তিনি জানান, ৮ জুনের পর থেকে চিকিৎসক বিপ্লব কুমার দাস অফিসে নিয়মিত আসেন না। তবে কি কারণে তিনি আসছেন না তা নিশ্চিত করে এ প্রতিবেদককে বলতে পারেনি।
ওই হাসপাতালের চিকিৎসক ডা: বাপ্পি রায় খুলনা গেজেটকে বলেন, গত কয়েকদিন হল নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডা: বিপ্লব কুমার দাস চেম্বারে আসছেন না। না আসার কারণ জানতে চাইলে তিনি এ প্রতিবেদককে এড়িয়ে চলে যান।
খুলনা মেডিকেল কলেজের অধ্যাপক ডা: মো: দীন উল ইসলাম বলেন, ১২ জুন পারিবারিক কারণ দেখিয়ে নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ সহযোগী অধ্যাপক ডা: বিপ্লব কুমার দাস ৫দিনের ছুটির আবেদন করেন। আগামী ১৬ জুন তার ছুটির মেয়াদ শেষ হবে। কলেজছাত্রীকে যৌন হয়রানির ঘটনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে খবরটি জেনেছেন। ঘটনাটি সত্য হলে তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি এ প্রতিবেদককে জানিয়েছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এস আই শান্তুনু রহমান বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ওই ছাত্রী পপুলার ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ৫০৮ নম্বর কক্ষে চিকিৎসা নিতে ডা: বিপ্লব কুমারের কাছে আসেন। তখন তাকে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ পরামর্শ পত্র ধরিয়ে দেন। আর্থিক সংকটের কারণে ভিকটিম ঐসময় চিকিৎসকের কাছে আসতে পারেননি।
৬ জুন শারীরিক পরীক্ষা করে ওই ডায়াগনষ্টিক সেন্টারের ওই কক্ষে চিকিৎসকের কাছে যান তিনি। চিকিৎসা নেওয়ার একপর্যায়ে চিকিৎসককে চোখ ব্যাথার কথা বলেন। এরপর চিকিৎসক তাকে বেডে যেতে বলেন। কিন্তু সেখানে কোন এটেন্ডেন্ট ছিলনা। বেডে যাওয়া মাত্রই ওই চিকিৎসক তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেওয়া মাত্রই ভিকটিম চিৎকার করে বাইরে চলে আসেন। পরে জনৈক জাহিদ ৯৯৯ এ ফোন করলে পুলিশ সেখানে গিয়ে কলেজ ছাত্রীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এরপর চিকিৎসক দ্রুত চেম্বার ত্যাগ করেন।
তিনি আরও বলেন, ভিকটিমের মা বাদী হয়ে সোনাডাঙ্গা থানায় চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধনী ২০০৩ এর ১০ ধারায় মামলা করেন। মামলার পর কলেজ ছাত্রী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট তরিকুল ইসলামের আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দি দেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের জোর চেষ্টা চলছে।
তবে একটি সূত্রে জানা গেছে, মামলা দায়ের হওয়ার পর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওই চিকিৎসক কয়েকদিন অফিস করেছেন। সম্প্রতি তিনি অফিসে আসছেন না গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য।