যশোরের বাঘারপাড়ায় গর্ভের সন্তানের পিতৃত্ব অস্বীকার করায় অন্তঃসত্ত্বা এক নারী সুইসাইড নোট লিখে কষ্ট ও ক্ষোভে আত্মহত্যা করেছেন। নিহত সাদিয়া খাতুন (২০) উপজেলার ধলগ্রাম ইউনিয়নের আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের সেলিম রেজার স্ত্রী। শুক্রবার রাতে একই উপজেলার বন্দবিলা ইউনিয়নের তেলীধান্যপুড়া গ্রামে বাবার বাড়িতে গলায় ওড়না পেচিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন।
সাদিয়ার মা তাহেরা বেগম বলেন, বছর খানেক আগে আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের মঞ্জুর মোল্লার ছেলে সেলিমের সাথে মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলাম। পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও এর আগে নিজের মামাতো বোনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো সেলিমের। কিন্তু বিয়ের পরও ওই মেয়ের সাথে তার পরকিয়া সম্পর্ক চলছিল। যেটা মেনে নিতে পারেনি আমার মেয়ে। এই বিষয়কে কেন্দ্র করে প্রায়ই সেলিম আমার মেয়েকে মারধর করতো। বিষয়টি সাদিয়া আমাদের না জানিয়ে মনের কষ্টে ঈদের ক’দিন আগে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
সাদিয়ার বড়বোন খাদিজা খাতুন বলেন, আমাদের দু’বোনের একই গ্রামে বিয়ে হয়েছে। সেলিমকে অনেক ভালোবাসতো সাদিয়া। তাই শুশুর বাড়ির অশান্তির ব্যাপারে কিছুই বলতো না আমাকে। গত ১৫ দিন আগে সাদিয়াকে আমার মায়ের কাছে রেখে যায় সেলিম। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেলে সাদিয়া অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার খুশির খবরটি ফোনে জানালে পিতৃত্ব পরিচয় দিতে অস্বীকৃতি জানায় সেলিম। যে কারণে কষ্ট ও ক্ষোভে শুক্রবার ভোর রাতে শোবার ঘরের আড়ার সাথে ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে আমার বোনটা।
এ বিষয়ে সেলিম হোসেন বলেন, আমার মামাতো বোনের ২০০৮ সালে বিয়ে হয়ে গেছে। তার সাথে অন্য কোন সম্পর্ক ছিলো না। আর আমার স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা হয়নি। তাই পিতৃত্ব পরিচয় দিতে আমার অস্বীকৃতি জানানোর প্রশ্নই আসেনা।
বিষয়টি নিয়ে বাঘারপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ উদ্দীন জানান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য যশোর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার কোন মামলা করবে না বলে জানিয়েছে।