যশোরের ঝিকরগাছার বৃদ্ধ ভ্যানচালক ইকরাম হোসেন (৬০) হত্যা রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন পিবিআই। ঝিকরগাছা, কেশবপুর ও সাতক্ষীরা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তারা হত্যা মিশনের ৪ সদস্যকে আটক করেছে। একইসাথে উদ্ধার হয়েছে নিহতের ভ্যানটিও।
গত ১৯ জুলাই কিঝরগাছা উপজেলার কৃর্ত্তিপুর গ্রামের বৃদ্ধ ভ্যানচালক ইকরাম হোসেন তার একটি গরু ৫৯ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। এরপর তিনি ২০ জুলাই রাত সাড়ে ৮টায় কৃর্ত্তিপুর গ্রামে হাওয়ার মোড়ের কবিরের চায়ের দোকানে বসে চা পান করেন। পরবর্তীতে তিনি বাড়ির পথে রওনা হলেও, বাড়ি ফিরে যাননি। পরদিন ভোর ৬টায় তার মৃতদেহ বাড়ির পাশের কলাবাগানে হাত-পা বাধা অবস্থায় উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় ইকরামের মেয়ে সালমা খাতুন আজ্ঞাত আসামি করে ঝিকরগাছা থানায় হত্যা মামলা করেন। যার নম্বর ১৬। এরপর মামলাটির তদন্ত পিবিআই যশোর জেলা ইউনিটে হস্তান্তর হয়। পিবিআই পুলিশ সুপার রেশমা শারমিনের নেতৃত্বে এসআই হাশিস দাশ তদন্ত শুরু করেন। ১১ আগস্ট তারা আটক অভিযান শুরু করেন। অভিযুক্ত হিসেবে ঝিকগাছা থানাধীন কৃর্ত্তিপুর টার্মিনাল এলাকার আমিনুর হোসেনের বাড়ির সামনে থেকে আটক করেন ঝিকরগাছার গদখালী পটুয়াপাড়ার আলেক হোসেনের ছেলে সজীবকে (২২)। এরপর আটক হয় মোবারকপুর হাসপাতাল রোড এলাকার আয়নাল হোসেনের ছেলে ইমন হোসেন (২২), সাতক্ষীরা তালার ধলবাড়িয়া গ্রামের হযরত আলী সরদারের ছেলে ওয়াসিম সরদার (৩০) ও পাটকেলঘাটার ক্যাশা গ্রামের মান্নান সরদারের ছেলে সালাম সরদার (৩২)। অভিযুক্ত সালাম সরদারে স্বীকারোক্তিতে মণিরামপুরের বিজয়রামপুর গ্রামের বাবলু বিশ্বাসের (৩৫) বাড়ি থেকে নিহতের ভ্যানটি উদ্ধার হয়।
পিবিআই যশোরের পুলিশ সুপার রেশমা শারমিন বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তথ্য মিলেছে অভিযুক্তরা একটি সংঘবদ্ধ চোরচক্রের সদস্য। অভিযুক্ত সজীব ও ওয়াসিম সরদার পেশায় রাজমিস্ত্রি। তারা হত্যাকান্ডের সময় নিহতের গ্রামেই ভাড়া নিয়ে বসবাস করতেন। ঘটনার রাতে তারা কৃর্ত্তিপুর গ্রামে হাওয়ার মোড়ে কবিরের দোকানের আশেপাশে ঘোরাফেরা করছিল। এরপর রাতে অভিযুক্তরা ভিকটিম এর বাড়িতে ভ্যান ও টাকা চুরির উদ্দেশ্যে হানা দেয়। গরু বিক্রির ৫৯ হাজার টাকা ও ভ্যান জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়ার সময় ইকরাম তাদেরকে বাধা দেয়। এসময় তারা ইকরামকে হাত-পা বেধে শ্বাসরোধে হত্যা করে।
পরে মৃতদেহ বাড়ির পাশের কলাবাগানে ফেলে পালিয়ে যায়। আটক সজীব, ইমন, ওয়াসিম সরদার ও সালাম সরদারকে বৃহস্পতিবার বিজ্ঞ সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক, মামুনুর রহমান ও মঞ্জুরুল ইসলামের আদালতে সোপর্দ করা হয়। এসময় তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে বলে আদালত সূত্র জানিয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেএম