৩ ছেলে মেয়ে, স্ত্রী, ভাগ্নে নিয়ে ৬ সদস্যের সংসার। ফল বিক্রি করে প্রতিদিন আয় ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। কিভাবে যে চলছি আল্লাহপাক ছাড়া আর কেউ জানে না। কারোর কাছে হাতও পাততে পারিনা। ফুটপাতে ব্যবসা করে এভাবে চলছি ১৫/১৬ বছর। এমনিতেই সংসার চালাতে পারি না তারপর প্রতি বছর ঈদ আসলে কেনাকাটার অতিরিক্ত চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়। ভাই গরিবের আবার ঈদ কিসের? আক্ষেপের সুরে কথাগুলো একনাগাড়ে বলে গেলেন দৌলতপুর বাজারের প্রবেশদ্বারের ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী নান্নু সরদার (৩৮)।
খুলনা-যশোর মহাসড়কের দৌলতপুর ফুটপাতের আর এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মোঃ শাহ আলম। বয়স ৩৮। বাড়ি মাদারীপুর। ২ ছেলে মেয়ে, স্ত্রী নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকেন দৌলতপুরের মুুহাসিন মোড়ে। ফুটপাতে তাকে বিক্রি করতে দেখা যায় গেঞ্জি, আন্ডারওয়ারসহ অন্যান্য জিনিসপত্র।
শাহ আলম জানালেন, প্রতিদিন তার ইনকাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা। এই অল্প আয় দিয়েই তার সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়,তার উপর ঈদের কেনাকাটার জন্য তাকে বাড়তি চাপ সামলাতে হচ্ছে।
নান্নু সরদারের মতো শাহ আলমেরও একই কথা কিভাবে যে চলছি, আল্লাহ পাক জানে! অনেক কষ্টে বাচ্চা দুইটার জন্য নতুন কাপড়-চোপড় কিনেছি। নিজের এবং স্ত্রীর জন্য এখনো কিছু কেনা হয়নি। বাবা মা জীবিত আছেন। কিন্তু তাদের খরচ আমাকে বহন করতে হয় না। তাদের ভরণপোষণ আমার অন্য ভাই বহন করেন। ছবি তুলতে চাইলে বললেন, ভাই আমার ছবি তুইলেন না। শ্বশুর বাড়ির লোকজন জানে আমি ভালো চাকরি করি। পত্রিকার ছবি আসলে তারা দেখবে আমি ফুটপাতে ব্যবসা করি।
দৌলতপুর ফুটপাতের আরেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন ভূঁইয়া। বয়স ৪৬। ৩ ছেলে মেয়ে স্ত্রী নিয়ে থাকেন পাবলা দত্তপাড়ায়। সালাউদ্দিনের বয়স যখন ১৭-১৮ বছর তখন থেকেই তিনি ফুটপাতে ব্যবসা শুরু করেন। কখনও রেল লাইনের পাশে, কখনও খুলনা- যশোর মহাসড়কের পাশে ফুটপাতে যখন যেটাই পড়তা হয় তখন সেটাই বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছেন।
সালাউদ্দিন জানালেন, প্রতিদিন তার ইনকাম ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা। আক্ষেপের সুরে জানালেন আল্লাহ পাক যেভাবে চালায় সেভাবে চলছে।
নান্নু সরদার, শাহ আলম, সালাউদ্দিন ভূঁইয়া’র মতো খুলনার সড়ক, মহাসড়ক, শহরের অলিগলির বিভিন্ন ফুটপাতে শত শত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের ঈদকে সামনে রেখে কেনাকাটার বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হয়।
খুলনা গেজেট/ এইচ