খুলনার প্রবীণ বিএনপি নেতা কওছার আলী জমাদ্দার (৮৪) ইন্তেকাল করেছেন (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)। বার্ধক্যজনিত নানা রোগে চিকিৎসাধীন থাকা অবস্থায় রোববার সকালে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি ৩ ছেলে, ৪ মেয়ে, নাতি-নাতনিসহ অসংখ্য আত্বীয়স্বজন এবং গুনগ্রাহী রেখে গেছেন। রোববার আছর বাদ মরহুমের জানাযা নামাজ ফুলতলার ডাবুর মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে ফুলতলার সরকারি গোরস্থানে দাফন করা হয়।
১৯৭১ সালে ২৮ মার্চ সকালে ফুলতলা গার্লস স্কুল এলাকায় কওছার আলী আলী জমাদ্দারের নেতৃত্বে গাছ কেটে ও কার্লভার্ট ভেঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের খুলনাগামী সামরিক কনভয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হয়। মুক্তিযুদ্ধ শেষে তিনি ন্যাপ-ভাসানীতে যোগ দেন। পরবর্তীতে জিয়াউর রহমানের জাগো দল ও বিএনপির প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে খুলনা বিএনপিকে সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখেন। পরবর্তী ৪ দশক কওছর আলী জমাদ্দার ফুলতলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি, খুলনা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
এছাড়া তিনি ফুলতলা এম এম কলেজ, সরকারি গার্লস স্কুল, সরকারি মহিলা কলেজ, ফুলতলা আহমাদিয়া ফাজিল মাদ্রসা, ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠায় উদ্যোক্তার ভূমিকা পালন করেছেন।
জানাযা নামাজে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক শফিকুল ইসলাম মনা, জেলা খুলনা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সিটি কর্পোরশেনের সাবেক মেয়র মোঃ মনিরুজ্জামান মনি, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন, শিক্ষাবিদ আনোয়ারুজ্জামান মোল্যা, জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি বিএমএ সালাম, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এ্যাড তারিক হাসান মিন্টু, জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা ইমরান হুসাইন, সেক্রেটারী মুন্সী মিজানুর রহমান, মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ওয়ার্কার্স পাটির জেলার সাধারণ সম্পাদক কমরেড অনছার আলী মোল্যা, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী আশরাফ হোসেন আশু, মোঃ আসলাম খান, শিল্পপতি ফেরদৌস আহমেদ ভুঁইয়া, ফিরোজ আহম্মেদ ভুইয়া,
বিএনপি নেতা এ্যাড গাজী আঃ বারী, আবু হোসেন বাবু, অধ্যক্ষ তরিকুল ইসলাম, আশরাফুল আলম নান্নু, মীর কায়ছেদ আলী, এস এ রহমান বাবুল, শেখ ইকবাল হোসেন, মোঃ সেলিম সরদার, হাসনাত রেজভী মার্শাল, মনির হাসান টিটো, অধ্যাপক ওহিদুজ্জামান, অধ্যক্ষ শেখ মিজানুর রহমান, ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ মোহাম্মাদ ভুঁইয়া শিপলু, নওশাদ হোসেন লালু, শেখ লুৎফর রহমান, অহিদুজ্জামান মোল্যা নান্না, জামায়াত নেতা এটিএম গাউসুল আযম হাদী, প্রভাষক আঃ আলীম, শিল্পপতি হুমায়ুন আহম্মেদ ভুঁইয়া, জহির উদ্দিন ভুইয়া রাজীব প্রমুখ। জানাযার ইমামতি করেন অধ্যক্ষ আছম আঃ রহিম।
এদিকে প্রবীন এ বিএনপি নেতার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন খুলনা জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ।
বিবৃতিদাতারা হলেন খুলনা জেলা বিএনপির আহবায়ক আমীর এজাজ খান, সদস্য সচিব এসএম মনিরুল হাসান বাপ্পী, যুগ্ম-আহবায়ক শেখ আবু হোসেন বাবু প্রমুখ।
শোক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, বর্ষিয়ান রাজনীতিক জনাব কাওছার আলী জমাদ্দারের ইন্তেকালে খুলনা জেলার রাজনীতিতে অপূরণীয় শুণ্যতার সৃষ্টি হল। খুলনা জেলা বিএনপি একজন অভিভাবকতুল্য প্রবীন রাজনীতিককে চিরদিনের জন্য হারালো। বিএনপি’র প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে অদ্যবধি তিনি ইসলামী মূল্যবোধে ও জাতীয়তাবাদী আদর্শের প্রতি অবিচল ছিলেন। দলের দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করে তৃণমূলের রাজনীতিকে সুসংগঠিত করেছেন।
এছাড়া বনিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি রবিন বসুসহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ, প্রেসক্লাব ফুলতলার সভাপতি তাপস কুমার বিশ্বাস, সিনিয়র সাংবাদিক শেখ মনিরুজ্জামান, সহকারী অধ্যাপক মোঃ নেছার উদ্দিন, উপজেলা প্রেসক্লাব সভাপতি শামসুল আলম খোকন, সম্পাদক প্রভাষক মাজহারুল ইসলাম ছাড়াও ফুলতলা আসাদ-রফি গ্রন্থাগারসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও পেশাজীবি সংগঠনের পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন এবং মরহুমের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে বিবৃতি দিয়েছেন।
খুলনা গেজেট/এইচ