ঋতুরাজ বসন্তের প্রথমদিন ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস রোববার। দুটি উৎসবের এ দিনকে স্মরণীয় করতে এবং প্রিয়জনকে ভালোলাগা ও ভালোবাসার অভিব্যক্তি জানাতে সবচেয়ে বড় উপহার হচ্ছে ফুল। সভ্য সমাজের শুরু থেকেই মানুষ ভালোবাসার বহি:প্রকাশে ফুল ব্যবহার করে আসছে। ডিজিটাল যুগেও এর কদর এতটুকু কমেনি। তার প্রমাণ মিলেছে দেশের সর্ববৃহৎ ফুল উৎপাদনকারী জোন বা ফুলের রাজধানী খ্যাত যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালী ফুল বাজারে। মহামারি করোনাভাইরাস ও আম্পান ঝড়ের ক্ষত কাটাতে প্রায় এক বছর পর বেচাকেনা কিছুটা বাড়ায় ফুলচাষিদের মুখে হাসি ফুটেছে।
বসন্ত বরণ ও বিশ্ব ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গত তিনদিনে গদখালীর ফুলের রাজ্যে ৫ কোটি টাকার ফুল বিক্রি হয়েছে বলে ব্যবসায়ীরা জানিয়েছে। চাহিদা বেশি থাকায় পূর্বের বাজার দর থেকে এবার বেশি দামে ফুল বিক্রি হয়েছে।
সরেজমিনে জানাগেছে, গদখালী ফুল বাজারে বসন্ত আর ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে গত তিনদিনে সবচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে চায়না গোলাপ। বাজারে এ গোলাপ বিক্রি হয়েছে প্রতিপিস ১৮-২০ টাকা, যা পূর্বে ছিল ৬-৮ টাকা। রজনীগন্ধার প্রতি স্টিক বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৮-৯ টাকা, যা পূর্বে ছিল ৩-৫ টাকা। গ্লাডিউলাস রঙ্গিন বিক্রি হয়েছে ১৪-১৬ টাকা, যা পূর্বে ছিল ৩-৬ টাকা। জারবেরা বিক্রি হয়েছে ১০-১২ টাকা, যা আগে দাম ছিল ৬-৮। গাঁদা ফুল বিক্রি হয়েছে ৩০০-৪০০ টাকা হাজার। যার পূর্বের দাম ছিল দেড় থেকে ২শ’ টাকা। ফুল বাঁধাইয়ের জন্য কামিনীর পাতা বিক্রি হয়েছে ৫০ টাকা আটি, যা পূর্বে দাম ছিল ২৫ টাকা। জিপসির আটি বিক্রি হয়েছে ৪৫-৫০ টাকা। যা পূর্বের দাম ছিল ২০-২৫ টাকা।
উপজেলার কুলিয়া গ্রামের ফুলচাষি শাহ আলম বলেন, তিনি দেড় বিঘা জমিতে চায়না গোলাপ ও গাঁদা, এক বিঘা জমিতে জারবেরা ও ৬ বিঘা জমিতে গ্লাডিউলাস ফুলের চাষ করেছেন। গত তিনদিনে এ জমি থেকে তিনি তিন লাখ ১৫ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। নীলকণ্ঠনগর গ্রামের আলী হোসেন জানান, তিনি আড়াই বিঘা জমিতে গোলাপ ও এক বিঘা জমিতে গ্লাডিউলাস ফুলের আবাদ করেছেন। গত তিদিনে এখান থেকে তিনি এক লাখ টাকার ফুল বিক্রি করেছেন। হাড়িয়া গ্রামের সোবহান হোসেন দেড় বিঘা জমির ফুল বাগান থেকে ৫০ হাজার টাকার গোলাপ বিক্রি করেছেন। তাদের দাবি মহামারি করোনাভাইরাস ও আম্পান ঝড়ের ক্ষত কাটিয়ে প্রায় এক বছর পর ফুলের দাম ও চাহিদা কিছুটা বেড়েছে। তবে ফুলের এ চাহিদা বসন্তবরণ ও ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে।
বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রহিম জানান, ঝিকরগাছার গদখালী এলাকায় এক হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে ৫টি ও পরীক্ষামূলকভাবে আরও ৬-৭ টি জাতের ফুল চাষ হচ্ছে। করোনাভাইরাস ও আম্পান ঝড়ে ক্ষতির পরে এ দুটি দিবসকে ঘিরে ফুলের চাহিদা বাড়ায় প্রায় এক বছর পর ফুলচাষিরা আলোর মুখ দেখছে।
খুলনা গেজেট/কেএম