খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ

নিজস্ব প্রতিবেদক

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আজ ২৫ নভেম্বর । একই সাথে এবছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকার্যক্রমের তিনদশক পূর্তি। করোনা মহামারীর কারণে ব্যাপক আয়োজন সম্ভব না হলেও সীমিত কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিবসটি এবং একই সাথে তিনদশক পূর্তি উদযাপনে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সকাল ১০-৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। এর পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হলে বঙ্গমাতা এর স্মৃতি স্মারক ‘মহীয়সী বঙ্গমাতা’ ম্যুরাল উদ্বোধন করবেন।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও তিন দশক পূতি উপলক্ষ্যে বেলা ১১টায় ওয়েবিনারে আলোচনা সভা আয়োজন করা হয়েছে। ওয়েবিনারে শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি প্রধান অতিথি এবং শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বিশেষ অতিথি হিসেবে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখবেন বলে আশা করা হচ্ছে। উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করবেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও বক্তব্য রাখবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা ও ট্রেজারার প্রফেসর সাধন রঞ্জন ঘোষ। এ ছাড়া অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বাদ যোহর বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে দোয়া মাহফিল ও মন্দিরে প্রার্থনা। ক্যাম্পাসের মেইন গেট, রাস্তা, শহিদ তাজউদ্দীন আহমদ প্রশাসন ভবনে আলোকসজ্জারও আয়োজন করা হয়েছে।

১৯৯১ সালের ২৫ নভেম্বর শিক্ষাকার্যক্রমের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। তারই ধারাবাহিকতায় ২০০২ সালের ২৫ নভেম্বর ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা ও আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালিত হয়। সেই থেকে প্রতি বছর ২৫ নভেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। সেশন জট, সন্ত্রাস ও রাজনীতিমুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এ বছর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কার্যক্রমের ৩০ বছর পূর্ণ করলো।

প্রতিষ্ঠাকালের দিক থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান নবম। মহানগরী খুলনা থেকে ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়ক সংলগ্ন ময়ূর নদীর পাশে এক মনোরম পরিবেশে গল্লামারীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় অবস্থিত। তবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন এলাকাটি ছিলো ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময়কার এক বধ্যভূমি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় একটি সাধারণ বিশ্ববিদ্যালয়। তবে সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এখানে বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তিবিদ্যা, চারুকলাসহ অন্যান্য বিষয়ের প্রতিও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি স্কুল (অনুষদ) রয়েছে। এখানে মোট ২৯টি ডিসিপ্লিনে (বিভাগ) শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে নিয়মিত ব্যাচেলর ডিগ্রি, ব্যাচেলর অব অনার্স ডিগ্রি, মাস্টার্স ডিগ্রি, এমফিল এবং পিএইচডি প্রদান করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৫ শত। ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে প্রায় সাত হাজার। এছাড়া কর্মকর্তা রয়েছেন ৩ শতাধিক এবং কর্মচারি রয়েছে প্রায় ৩ শত। শিক্ষা কার্যক্রমের গত ৩০ বছরে ২৬টি ব্যাচে থেকে উত্তীর্ণ গ্রাজুয়েট সংখ্যা ১৩ সহস্রাধিক। যারা দেশে-বিদেশে দক্ষতা, সুনাম ও সাফল্যের সাথে নানা পেশায় কাজ করছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে এক তৃতীয়াংশই পিএইচডি ডিগ্রিধারী।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও শিক্ষা কার্যক্রমের তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষাসচিব, ইউজিসির চেয়ারম্যান ও সদস্যবৃন্দ, দেশবাসীসহ খুলনার সর্বস্তরের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেন, নিরবিচ্ছিন্নভাবে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে শিক্ষা কার্যক্রমের ৩০ বছর পূর্তি নিঃসন্দেহে দেশে উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি বিশেষ অর্জন ও গৌরবের বিষয়। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে অমিত সম্ভাবনা। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয়কে সামনে এগিয়ে নিতে আমরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, এই সময়ে শিক্ষা গবেষণাসহ বিভিন্ন দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের যে সুদৃঢ় ভিত্তি রচিত হয়েছে তা আগামী দিনের সাফল্যের সোপান বেয়ে সামনে এগিয়ে যেতে আমাদের অনুপ্রাণিত করবে। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হবে ৩০ বছর পূর্তির এই মাহেন্দ্রক্ষণে এটাই প্রত্যাশা।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় দিবস ও শিক্ষা কার্যক্রমের তিন দশক পূর্তি উপলক্ষে প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোসাম্মাৎ হোসনে আরা এক শুভেচ্ছা বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এতদাঞ্চলের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামের ফসল। সঙ্গত কারণেই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে মানুষের আশা-আকাঙ্খা অনেক বেশি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় সে বিষয়টি ধারণ করেই সামনে এগিয়ে যাচ্ছে। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমের তিন দশক পূর্তি নিঃসন্দেহে সবচেয়ে বড় অর্জন। এই অর্জনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। খুলনার রাজনীতিক, প্রশাসন, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, সামাজিক নেতৃবৃন্দসহ সর্বসাধারণ অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়েছেন। আমি তাদের সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা জানাই। আগামী দিনেও খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় এই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রেখে অভীষ্ট্য লক্ষ্যে এগিয়ে যাবে সে প্রত্যাশা করি।

খুলনা গেজেট/ এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!