করোনা ভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবেলায় পূর্ব প্রস্তুতির অংশ হিসাবে খুলনাসহ সারাদেশের জেলা হাসপাতালগুলোতে আইসিইউ সেবা প্রস্তুত রাখার নির্দেশনা দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী। তবে এ নির্দেশ বাস্তবায়নে খুলনা বিভাগের জেলা হাসপাতালগুলোর কোন প্রস্তুতি নেই।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, খুলনার খুলনা বিভাগের কোন জেলা হাসপাতালেই আইসিইউ সেবা চালু নেই। তবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সীমিত পরিসরে আইসিইউ সেবা চালু থাকলেও তা করোনা রোগীদের চিকিৎসায় গত ৮ মাসে ব্যবহার হয়নি। খুলনার একমাত্র বিশেষায়িত হাসপাতালে আইসিইউ সেবা চালু থাকলেও করোনা মোকাবেলায় হাসপাতালের কোন পদক্ষেপ নজরে আসেনি। করোনার দোহাই দিয়ে হাসপাতালগুলোতে রেগুলার অপারেশন বন্ধ রেখে চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্রাকটিস বেড়েছে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
খুলনা মেডিকেল কলেজের একটি আইসিইউ ভবন থাকলেও তা ব্যবহৃত হচ্ছে করোনার ফ্লু কর্ণার ও আইসোলেশন ওয়ার্ডের জন্য। এর আগে তা ডেঙ্গু ওয়ার্ড হিসাবে চালু ছিলো। করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ৮ বেডের আইসিইউ ওয়ার্ড চালু হয়েছে, যা একান্তভাবে করোনা রোগীদের সেবায় ব্যবহৃত হয়।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলা সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভাগের জেলার সদর হাসপাতালগুলোতে কোন আইসিইউ সেবা নেই। ২০১৬ সালে দেশের সকল জেলা সদর হাসপাতালগুলো ২৫০ বেডে উন্নীত করে সেখানে পর্যাপ্ত পরিমানে বরাদ্দ দেয়ার কথা শোনা গেলে যায়। তবে বিভাগের মোট করোনা রোগীর সংখ্যা সাড়ে ২২ হাজার ছাড়ালেও হাসপাতালে সেবা নিয়েছেন মাত্র ২ হাজার ৪২২ জন। এর মধ্যে খুলনার করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে ভর্তি হয়ে সেবা নিয়েছে প্রায় ৭শ’।
এদিকে খুলনা জেনারেল হাসপাতাল করোনার শুরু থেকে রোগীর সেবা দেয়ার জন্য প্রস্তুত থাকলেও এখন পর্যন্ত একজন করোনা রোগীকে ভর্তি করে সেবা দিতে পারেনি। চিকিৎসক নার্স ও অন্যান্য জনবল দিয়ে ডিউটি রোষ্টার করে প্রস্তুত রাখা হয়। কিন্তু যখন খুলনা করোনা হাসপাতালে রোগী ভর্তির অবস্থা ছিলো না, তখনও খুলনা জেনারেল হাসপাতালে রোগীরা কোন সেবা পায়নি। এছাড়া এখানে আইসিইউ সেবা বলতে কিছু নেই। খুলনার বেশিরভাগ মানুষ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালমুখী হওয়ায় সেবা সম্প্রসারণের পরিবর্তে অনেকটাই সংকুচিত করে ফেলেছে একসময় গুরুত্বপূর্ণ এই হাসপাতালটি।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাঃ রাশিদা খানম বলেন, প্রধানমন্ত্রী প্রতিটি জেলা সদরে আইসিইউর প্রস্তুত রাখার কথা বলেছে। খুলনা বিভাগের মধ্যে খুলনা যশোর ও সাতক্ষীরায় আইসিইউ সেবা চালু আছে। অন্যান্য জেলা শহরে কিভাবে দ্রুত চালু করা যায় তা গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করা হচ্ছে।
খুলনা গেজেট /এমবিএইচ/এমএম