খুলনা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতিসহ ২৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা এজাহারের চার্জশীট প্রদান খুব শিগগিরি। সদর থানা পুলিশ মামলাটিকে স্পর্শকাতর হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ভিডিও ফুটেজ দেখে প্রকৃত আসামিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে। গত বছরের ৪ আগস্ট জেলা স্টেডিয়ামের মোড় থেকে আইনজীবীদের মিছিলে অস্ত্রসহ আওয়ামী লীগ অফিসের দিকে যাত্রা করে। মিছিলকারীরা স্টেডিয়াম মোড়ের কাছাকাছি এলে ককটেল নিক্ষেপ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। জীবনের নিরাপত্তা শঙ্কিত হওয়ার আশঙ্কায় গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়। প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. এমাম হোসেন এ মামলার বাদী।
এজাহারে তিনি উল্লেখ করেন, শেখ হাসিনা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে এবং ছাত্রহত্যার প্রতিবাদে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম বেলা পৌনে ১২টায় বার থেকে মিছিল বের করে। এর কিছুক্ষণ পর আওয়ামী লীগ অফিসে অগ্নিসংযোগের খবর পেয়ে আগ্নেয়াস্ত্রসহ জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক কর্মকর্তারা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। উদ্দেশ্য ছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি দমন করা। এ মিছিলে আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মো. সাইফুল ইসলামের হাতে শর্ট গান ছিল। এসময় দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি সরদার আনিসুর রহমান পপলু তার পিস্তল থেকে দুই রাউন্ড গুলি করে। এ অবস্থায় তার প্রতিপক্ষ আইনজীবীরা প্রাণের ভয়ে ছোটাছুটি করে। এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
এজাহারে উল্লেখ করা আসামিরা হলেন, আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি ও সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি কাজী বাদশা মিয়া, সাবেক সভাপতি পারভেজ আলম খান, সাবেক সভাপতি সরদার আনিসুর রহমান পপলু, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সুজিত অধিকারী, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এসএম তারিক মাহমুদ তারা, সাইবার ট্রাইব্যুনালের পিপি এসএম সাজ্জাত আলী, মানবপাচার ট্রাইব্যুনালের পিপি সুমন্ত কুমার বিশ্বাস, মেহেদী হাসান, তমাল কান্তি ঘোষ, মো. শামীম মোশাররফ, শেখ শামীম আহমেদ পলাশ, আসাদুজ্জামান গাজী মিল্টন, সাঈদুর রহমান টুটুল, আব্দুল কুদ্দুস, আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. আইয়ুব আলী শেখ, রজব আলী সরদার, আক্তারুজ্জামান খান জীবন, জাকির হোসেন লিটন, আল আমিন উকিল, সোহেল পারভেজ, জহিরুল ইসলাম পলাশ, জেসমিন পারভীন জলি, আনোয়ারা মমতাজ আন্না, রেহানা চৌধুরী, আহমেদ উল্লাহ পিলু, আশরাফ আলী পাপ্পু, জাকির উদ্দিন আহমেদ লিটনসহ আওয়ামী ও যুবলীগের ২০/২৫ জন।
মামলার বাদী প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের পিপি মো. এমাম হোসেন বলেন, আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা নিয়মিত আদালতে আইন ব্যবসা করছে। তারা দলীয় কর্মীদের বিভিন্ন মামলায় নানা ধরনের তদবিরও করছেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই নান্নু মন্ডল জানান, অস্ত্র শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। সেদিনের মিছিলে অংশগ্রহণকারীদের ছবি সংরক্ষণে রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এটি স্পর্শকাতর মামলা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। খুব শিগগিরি চার্জশীট দাখিল করা হবে।
খুলনা গেজেট/ টিএ