খুলনা, বাংলাদেশ | ২৯ আশ্বিন, ১৪৩১ | ১৪ অক্টোবর, ২০২৪

Breaking News

  ইসরায়েলি সেনা ক্যাম্পে হিজবুল্লাহর ড্রোন হামলা, নিহত ৪

খুলনা জেলা পরিষদ নির্বাচন : পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন?

নিজস্ব প্রতিবেদক

মৌলিক গণতন্ত্র পদ্ধতিতে খুলনা জেলা পরিষদের নির্বাচন ১৭ অক্টোবর। বিরোধী দলের বিরোধিতা না থাকলেও নিজেদের মধ্যে বিরোধ প্রবল। চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বাঙালি জাতীয়তাবাদের রাজনীতিতে বিশ্বাসী হলেও কেউ কাউকে ছাড় দিচ্ছেন না। ফলাফল কী হবে, চেয়ারম্যান পদে পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন। এ মাসে খুলনার রাজনীতিতে এটাই অন্যতম আলোচ্য বিষয়।

পাঁচ বছর পর জেলা পরিষদ নির্বাচন সমাগত, বাকী ১৩ দিন। আলোচিত ইভিএম-এ ভোট গ্রহণ হবে। জেলার ৯৭৮ জন জনপ্রতিনিধি ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন নয়টি কেন্দ্রে। প্রার্থীরা নানাভাবে প্রচারণায় নেমেছেন। সার্বজনীন ভোট না হলেও প্রতীক সম্বলিত পোষ্টারের ছড়াছড়ি।

এ নির্বাচনে চারটি বিষয় মূলত আলোচনায় এসেছে। প্রথমত: নগরীর অভিজাত পরিবারের আর্শীবাদ, দ্বিতীয়ত: আন্দোলনরত বিরোধী দলের সমর্থন স্বতন্ত্র প্রার্থীর প্রতি, তৃতীয়ত: গেল ইউপি নির্বাচনে বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচিত চেয়ারম্যানদের প্রতিশোধের আঙ্গুল তোলা, চতুর্থত: শাসক দলের জেলা ও নগর শাখার অধিকাংশের মনোভাব।

নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছেন শাসক দল সমর্থিত শেখ হারুনুর রশীদ। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। প্রথম দফায় জেলা পরিষদের প্রশাসক, পাঁচ বছর আগে নির্বাচিত চেয়ারম্যান। সর্বশেষ নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বি ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অজয় সরকার। সে সময়েও দলের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। এবার অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বি এস এম মর্তুজা রশিদী দারা। তিনি ৮০’র দশকে খুলনা জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি। সুন্দরবন কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রলীগের মনোনয়নে নির্বাচত ভিপি। বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহ-সভাপতি। বড় পরিচয় জেলা আওয়ামী লীগের প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় সংসদের সাবেক হুইপ এস এম মোস্তফা রশিদী সুজার অনুজ। অপর প্রার্থী বিএমএ, খুলনার একাধিকবারের সভাপতি, স্বাচিপের স্থানীয় কর্ণধর ডা. শেখ বাহারুল আলম। তিনি আওয়ামী লীগের আগের জেলা কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। শৃঙ্খলা বিরোধী অপরাধে তিনি এখন দলের বাইরে।

দলের সূত্র জানায়, সোমবার (৩ অক্টোবর) খুলনা ক্লাবে অনুষ্ঠিত জেলা ও নগর আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভার পর নতুন মোড় নিয়েছে পরিস্থিতি। তিনটি বিষয়কে কেন্দ্র করে ভোটাররা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। তারা অধিকাংশ ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য। সভাস্থলে প্রথম কাতারের দিকে মকমলে কাপড়ে সজ্জিত চেয়ারে বসা ১৫ জন ইউপি সদস্যকে স্থান পরিবর্তনের জন্য তাগিদ দেওয়া হয়। প্লাষ্টিকের চেয়ারে বসার স্থান নির্ধারণ করায় ইউপি সদস্যদের আত্মমর্যাদার হানি হয়। এছাড়া অনেকেই দুপুরের খাবার পাননি। পাশাপাশি কেসিসি’র ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এস এম মোজাফ্ফর রশিদী রেজা এ সভায় বক্তৃতাকালে দলের স্বার্থে নিজের ভোটটি প্রকাশ্যে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে কেসিসি’র অন্য কাউন্সিলরদের মধ্যে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। ৩০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর চেয়ারম্যান প্রার্থী মর্তুজা রশিদী দারার সহোদর। অভুক্ত ভোটারদের ক্ষুব্ধ হওয়ার সুযোগটি নেন অপর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী। তেরখাদা উপজেলার ক্ষুব্ধ ভোটারদের একাংশকে আবাহনী ক্রীড়া চক্রের চশমা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরা আপ্যায়ন করান। স্থানীয় বিএমএ তে অভুক্ত ভোটারদের একাংশকে আনারস প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থীর সমর্থকরাও আপ্যায়ন করান।

সোমবারের সভায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হারুনুর রশীদ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে দলের ভোটারদের তাকে নির্বাচিত করার আহবান জানান। বিভিন্ন মতবিনিময় অপর চেয়ারম্যান প্রার্থ মর্তুজা রশিদী দারা তার বিজয়ের ব্যাপারে আশাবাদী বলে ভোটারদের আশ্বস্ত করেছেন। অবস্থা দৃষ্টিতে মনে হচ্ছে নির্বাচন জমে উঠেছে। শাসক দলের অভ্যন্তরে সন্দেহের জাল বিস্তার করছে।

খুলনা গেজেট/এসজেড




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!