খুলনা সিটি করপোরেশনে ফের নগর পিতা হলেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। তিনি ১ লাখ ৫৪ হাজার ৮২৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বি ইসলামী আন্দোলনের হাতপাখার প্রার্থী মো. আব্দুল আউয়াল পেয়েছেন ৬০ হাজার ৬৪ ভোট ।
এছাড়া জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু পেয়েছেন ১৮ হাজার ৭৪ ভোট, এস এম শফিকুর রহমান ১৭ হাজার ২১৮ ভোট এবং এস এম সাব্বির হোসেন পেয়েছেন ৬ হাজার ৯৬ ভোট।
এর আগে সোমবার (১২ জুন) সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। এবারই প্রথম পুরো সিটিতে ইভিএমে (ইলেট্রনিক ভোটিং মেশিন) ভোট নেয়া হয়।কোনো ধরনের সহিংসতার খবর না পাওয়া গেলেও কিছু কিছু জায়গায় ইভিএমে ভোট দিতে গিয়ে ভোগান্তিতে পড়েন ভোটাররা। প্রায় অনেক কেন্দ্রে ইভিএম ধীরগতিতে কাজ করেছে বলে অভিযোগ করেন ভোটার ও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা।
এর আগে ভোটপর্ব নির্বিঘেœ পার করার জন্য নির্বাচন কমিশন সকল ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়, নগরীকে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা চাদড়ে মুড়ে ফেলা হয়। রবিবার (১১ জুন) সকাল থেকেই নগরীতে আধা-সামরিক বাহিনী -বিজিবি সদস্য, র্যাব, পুলিশ, আনসার ও সাদা পোষাকে বিশেষ সদস্যরা দায়িত্ব পালন করেন । ভোটকেন্দ্রগুলোতে ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়। জুডিশিয়াল ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শন করে।
এবার নির্বাচনে খুলনা সিটি মোট ভোটার ছিল ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। এরমধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮৩৩ এবং নারী ২ লাখ ৬৬ হাজার ৬৯৬ জন। নগরীর ৩১টি ওয়ার্ডে মোট ভোটকেন্দ্র ২৮৯টি। ভোট কক্ষ ছিল ১ হাজার ৭৩২টি। ভোটকেন্দ্রগুলোয় ২ হাজার ৩০০টি ক্লোজ-সার্কিট ক্যামেরা বসানো হয়। ভোট কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে ভোটগ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন ৫ হাজার ৭৬০ জন কর্মকর্তা।
নগরীতে বিজিবির ১১ প্লাটুন সদস্য টহল দেয়। ভোট কেন্দ্র ও নগরীর নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করেন আইনশৃ্খংলা বাহিনীর প্রায় ৮ হাজার ৩০০ জন সদস্য। নির্বাচনী মাঠে ছিলেন ৪৪ জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং ১০ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। ভোট কেন্দ্রগুলোতে স্থাপন করা হয় ২ হাজার ৩০০টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা। ইভিএম মেশিন প্রায় ৩ হাজার। পর্যবেক্ষক ছিলেন বেসরকারি দুটি সংস্থার ২০ জন ও নির্বাচন কমিশনের ১০ জন।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী নৌকা প্রতীকের তালুকদার আবদুল খালেক, জাতীয় পার্টি মনোনীত লাঙ্গল প্রতীকের মো. শফিকুল ইসলাম মধু, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত হাতপাখা প্রতীকের মো. আব্দুল আউয়াল, জাকের পার্টি মনোনীত গোলাপফুল প্রতীকের এসএম সাব্বির হোসেন, এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী এসএম শফিকুর রহমান মুশফিক (দেয়াল ঘড়ি)।
অপরদিকে সাধারণ ৩১টি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে ১৩৬ জন এবং ১০টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৯ জন কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এর মধ্যে নগরীর ১৩নং ওয়ার্ডে এস এম খুরশিদ আহমেদ টোনা এবং ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে জেড এ মাহমুদ ডন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
খুলনা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন বলেন, নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হয়েছে। কোনো কেন্দ্র বন্ধ হয়নি। কোনো কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়নি। প্রশাসন এবং নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে সকলের সহযোগিতায় নির্বাচন পরিচালনা করেছে। আমরা কথা দিয়েছিলাম খুলনাবাসীকে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিব। আমরা সেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। পাশাপাশি ফলাফলের মধ্য দিয়ে খুলনাবাসীর বিজয় হবে।
খুলনা গেজেট/এসজেড/কেডি