খুলনায় ২২ কোটি টাকার কোকেন বিনষ্ট করা হয়েছে। সোমবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আদালত চত্ত্বরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুজ্জামানের উপস্থিতিতে এই কোকেন প্রকাশ্যে ধ্বংস করা হয়। জুডিশিয়াল আদালতের মালখানার সাব-ইন্সপেক্টর আমির হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ১১ আগস্ট রাত পৌনে ১০ টার দিকে র্যাব-৬ খুলনার একটি দল মহানগরীর হাদিস পার্কের সামনে অবস্থান নেয়। এ সময় ওই দলটি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে ময়লাপোতা মোড়ের পাশে একটি চক্র মাদক কেনাবেচা করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে তারা সেখানে পৌঁছালে কয়েকজন লোক পালানোর চেষ্টা করে। সঙ্গীয় ফোর্সের সহায়তায় সোহেল রানা নামের এক ব্যক্তিকে আটক করতে সক্ষম হন র্যাব কর্মকর্তারা। পালানোর কারণ জানতে চাইলে সোহেল জানায়, তার কাছে কোকেন আছে। র্যাব কর্মকর্তারা সেখান থেকে ২৩০ গ্রাম কোকেন উদ্ধার করে। যার অনুমানিক মূল্য দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা।
সোহেলের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে গগনবাবু রোডের একটি বাড়ি থেকে কোকেন বিক্রির মূল হোতা আরিফুর রহমান ছগিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছগিরের দেওয়া তথ্য মোতাবেক দাকোপ উপজেলায় রাত তিনটার দিকে অভিযান চালিয়ে বিকাশ চন্দ্র মন্ডল ও ফজলুর রহমান ফকিরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী টুটপাড়ায় অভিযান চালিয়ে এস এম এরশাদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর রূপসা উপজেলার রাজাপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করা হলে তিনটি কোকেনের প্যাকেট বের করে দেয় তিনি। যার মধ্যে ২ কেজি ২০ গ্রাম কোকেন পাওয়া যায়। সোয়া দুই কেজি কোকেনের মূল্য ২২ কেটি ৫০ লাখ টাকা।
র্যাব কর্মকর্তা মোঃ রবিউল ইসলাম বাদী হয়ে ছয় জনের নাম উল্লেখ করে রূপসা থানায় মাদক আইনে মামলা দায়ের করেন। এ মামলায় ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর একজনকে মৃত্যুদন্ড দেয় আদালত। আরও পাঁচজনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়েছে।
খুলনার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মশিউর রহমান চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় দু’জন আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। রায়ে আসামি বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাসকে মৃত্যুদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্য্য করা হয়েছে।
এছাড়া সোহেল রানাকে আমৃত্যু কারাদন্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানা, ছগিরকে ১৫ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও এক লাখ জরিমানা ও অনাদায়ে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং বিকাশ চন্দ্র মন্ডল, এরশাদ ও ফজলুর রহমান ফকিরকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে।