জুন-জুলাইয়ের অনাবৃষ্টি কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টি না হওয়ায় মিঠে পানির অভাবে সোনালী আঁশের গুণগতমান নষ্ট হয়েছে। নদীর নোনা পানিতে পাট পঁচানোর ফলে সোনালী আঁশের আসল চেহারা আসেনি। ক্রেতার কাছে চাহিদা না থাকায় মন প্রতি এবার ২ হাজার থেকে ২৪ শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গেল পর পর দু’ বছর মন প্রতি ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২১ সালের জুন-আাগস্ট পর্যন্ত ১১শ ২৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। সেখানে এ বছরের জুন-আাগস্ট পর্যন্ত ৩শ ৪৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। কাঙ্খিত বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাট পঁচানোর জন্য নদীর পানি ও চৌবাচ্চার মধ্যে পলিথিন দিয়ে বিকল্প পদ্ধতি গ্রহণের পরামর্শ দেন। নোনা পানি ব্যাবহারের ফলে সোনালী আঁশের গুণগত মান পরিবর্তন হয়েছে। ফলে ক্রেতার কাছে চাহিদা কমেছে।
পাট অধিদপ্তর, খুলনার পরিদর্শক সরজিৎ কুমার মন্ডল বলেছেন, পাট মৌসুম ১ জুলাই থেকে শুরু হয়। সে সময় প্রতি মনের দাম ছিল প্রকারভেদে ২৭শ – ২৮ শ টাকা দরে। গতকাল তোষা জাতের পাটের সর্বনিম্ন মন ২ হাজার থেকে ২৪শ টাকা দরে বিক্রি হয়। খুলনার চুকনগর, আঠারোমাইল, কপিলমুনি, বাগেরহাটের বড়গুনি, কোলাদহ, বড়বাড়িয়া, মোল্লাহাট, সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা, জাতপুর, সুভাসিনী, বাশদহ, কলারোয়া ও তালা হাটে আগের যে কোন সময়ের তুলনায় পাট বিকিকিনি কমেছে। ২০২০ ও ২০২১ সালে প্রতি মন পাট ৫ হাজার টাকা দরে বিক্রি হয়।
সূত্র বলেছে, এবারে বাগেরহাট জেলায় ২২হাজার বেল, খুলনায় ২৭ হাজার বেল এবং সাতক্ষীরায় এক লাখ ৮৯ বেল পাট উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। ডুমুরিয়াস্থ উপ- সহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা নিলয় মল্লিক তথ্য দিয়েছেন, শোভনা এলাকায় মিষ্টি পানির অভাব নেই। তবে আটলিয়া ও মাগুরঘোনা এলাকায় নদীর পানিতে পাট পঁচানোর ফলে গুণগতমান নষ্ট হয়েছে। ফলে কৃষকরা কাঙ্খিত দামে পাট বিক্রি করতে পাচ্ছে না।
খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার শোভনা গ্রামের পাট চাষি উত্তম কুমার দাস প্রতিবেদককে জানান, ভদ্রা নদীর পানি বাড়ির পাশে খাল পর্যন্ত আনতে এবার উৎপাদন খরচ বাড়বে। সাড়ে তিন বিঘা জমিতে পাটের আবাদ করেছেন। নদীর নোনা পানির কারনে সোনালী আঁশের গুণগত মান নষ্ট হয়েছে। সে কারনেই হাটে ক্রেতার চাহিদা কম।
খুলনা গেজেট/ টি আই